ধর্ম

পাবনার ৪৬৫ বছরের ঐতিহাসিক সমাজশাহী মসজিদ

মসজিদ আল্লাহর ঘর। এ মসজিদ মুসলিম উম্মাহর ইবাদত ও ঐতিহ্যের প্রতীক। বিশ্বব্যাপী শতাব্দীর পর শতাব্দী সংস্কার ছাড়াই রয়েছে অসংখ্য মসজিদ। এ রকমই পরিত্যক্ত একটি মসজিদ হলো সমাজশাহী মসজিদ।১৫৫২ খ্রিস্টাব্দে সম্রাট শেরশাহ-এর ছেলে সুলতান সমির বা সেলিম শুরের আমলে বর্তমান পাবনা জেলার চাটমোহর থাকার সমাজ গ্রামে অবস্থিত ৪৬৫ বছরে সুপ্রাচীন ঐতিহাসকি ‘সমাজশাহী মসজিদ’।করতোয়া নদী সংলগ্ন চাটমোহর থানা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সমাজ শাহী মসজিদটি দীর্ঘ দিন পরিত্যক্ত থাকার পর বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে ১৯৮০ সালে তা পুনঃর্নির্মাণ করা হয়।দেশ বিভাগের আগে ১৯৪২ সালে ভারত সরকার এ ঐতিহাসিক মসজিদটি একবার পুনঃর্নির্মাণ করেন। ওই সময় মসজিদটির মূল অবকাঠামো ঠিক রেখে পুনঃর্নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হলেও মসজিদটির প্রাচীনত্ব অনেকাংশেই বিলুপ্ত হয়ে যায়।৩০ হাত উচ্চতার এ মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৩৪ হাত, প্রস্থ ১৫ হাত। ছোট-বড় মিলিয়ে গম্বুজ সংখ্যা মোট তিনটি। বড় গম্বুজগুলোর নিচের দিকে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন কারুকার্য।মসজিদটির বারান্দায় কষ্টিপাথরের কালো দুইটি স্তম্ভ প্রাচীন স্থাপত্যশৈলীর ঐতিহ্যের প্রমাণ বহন করে। চারপাশের দেয়ালেও রয়েছে সুন্দর নকশা। যা খুব সহজেই দর্শনার্থীদের নজর কাড়ে। মসজিদের রয়েছে তিনটি মূল দরজা ও একটি মেহরাব।১৯৪২ সালে মসজিদটি পুনঃর্নির্মাণের সময় ভারতের জাদুঘরে এ মসজিদের দুটি শিলালিপি স্থানান্তর করা হয়। শিলালিপি দুটি হলো-  মেহরাবের ওপর একটি এবং দক্ষিণাংশের দেয়ালে দুইটি শিলালিপি। একটি লিপিতে লিখা ছিল মসজিদটি নির্মাণ তারিখ এবং অন্যটিতে সূরা মুলক খোদাই করা ছিল।সমাজশাহী মসজিদ প্রমাণ করে যে, চাটমোহরের সমাজ গ্রাম ঐতিহাসিকভাবে একটি সমৃদ্ধিশালী মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চল ছিল। সেখানে অনেক ঐতিহাসিক এবং প্রাচীন নিদর্শন ছিল, যা বিলুপ্ত হয়ে গেলেও সমাজ শাহী মসজিদ এখনও স্বমহিমায় মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থেকে ইসলাম ও মুসলিম সভ্যতার স্বর্ণযুগের মহিমা ঘোষণা করছে।এমএমএস/পিআর

Advertisement