গৃহকর্মীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় মনিটরিং কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সরকারের সংশ্লিষ্টদের আগামী ৬ মাসের মধ্যে কমিটি করার জন্য আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ সংক্রান্ত এক রুলের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। এর আগে গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও কল্যাণে একটি নীতিমালা অনুমোদন করে সরকার। এতে বাসার কাজে নিয়োজিত কর্মীদের কাজ শ্রম হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। আর নারী কর্মীদের চার মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়ার বিষয়টিও নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।এছাড়া নীতিমালা অনুমোদন পাওয়ায় শ্রম আইন অনুযায়ী গৃহকর্মীরা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাবেন এমনও বলা হয়। নীতিমালায় আরো বলা হয় সর্বনিম্ন ১৪ বছরের কাউকে গৃহকর্মী নিয়োগ দেওয়া যাবে না। গৃহকর্মীদের শ্রমঘণ্টা এবং বেতন আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে গৃহকর্মী ও নিয়োগ দাতা চূড়ান্ত করবে এমন বিধান রাখা হয়েছে নীতিমালায়। এছাড়া নীতিমালায় গৃহকর্মীদের বিশ্রাম ও বিনোদনের সময় দেওয়ারও নির্দেশনা রয়েছে।দীর্ঘদিন ধরেই গৃহকর্মীদের শ্রমকে স্বীকৃতি দেয়ার জোর দাবি ছিল। নীতিমালা প্রণয়নের ফলে এখন সেটি বাস্তবে রূপ নিল। কিন্তু গৃহকর্মীদের সুরক্ষায় তেমন অগ্রগতি হয়েছে এটা বলা যাবে না। যে কারণে আদালত থেকে নির্দেশনা আসলো। এখন এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। বর্তমান বাস্তবতায় গৃহকর্মীদের ওপর নির্ভর করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। দেশের ব্যাপক সংখ্যক জনগোষ্ঠী গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করছে। এদের সংখ্যা ২০ লাখেরও বেশি। কিন্তু এদের শ্রমের কোনো স্বীকৃতি ছিল না। ঠিকমত বেতন ভাতা তো দূরের কথা অনেক সময় পাশবিক নির্যাতনের শিকার হতে হয় এদের। নারী গৃহকর্মীরা যৌন নিপীড়নেরও শিকার হন। দুঃখজনক হচ্ছে, সমাজের সচেতন অংশ দ্বারাও কখনো কখনো এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। গৃহকর্মীরা দিনরাত চব্বিশ ঘণ্টা কাজ করেন। তাদের কর্মপরিধিরও কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। এ অবস্থায় তারা আসলে পরিবারেই অংশ হয়ে যান। কিন্তু তাদের কি সে চোখে দেখা হয়? দেখলে তো আর এত সমস্যা হত না। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে মানবিকতার উন্মেষ ঘটিয়ে গৃহকর্মীদের অধিকার রক্ষায় স্বয়ং নিয়োগকর্তাকেই বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। তবেই গৃহকর্মীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা পাবে।এইচআর/এমএস
Advertisement