দুনিয়াতে মানুষের জীবনকাল ক্ষণস্থায়ী। স্বল্প সময়ের এ পৃথিবীতে আল্লাহ তাআলা মানুষকে পরীক্ষা দেয়ার জন্যই প্রেরণ করেছেন। এখানে মানুষের কিছু মৌলিক বিষয় রয়েছে, যে বিষয়গুলো স্মরণ রাখা অত্যন্ত জরুরি।মানুষকে দুনিয়াতে অনেক প্রাতিষ্ঠানিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়। সেখানে তাদের জন্য অনেক বিধি-নিষেধ থাকে। পরীক্ষা চলাকালীন সে বিধি-নিষেধগুলো মেনে চলা আবশ্যক। পরীক্ষার জন্য থাকে নির্দিষ্ট সময়। সময় শেষ হওয়ার পর আর কেউ ইচ্ছা করলেও পরীক্ষা দিতে পারে না।দুনিয়াতে যারা পরীক্ষা দেয়ার পূর্বে প্রস্তুতি গ্রহণ করে নির্ধারিত নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট সময়ে সুন্দরভাবে পরীক্ষা দেয়; তারা যেমন দুনিয়াতে সফলতা লাভ করে, তেমনি যারা বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নসিহতকে তাদের জন্য গণিমত মনে করে; তারা দুনিয়া ও পরকালে সমানভাবে সফলকাম।সুতরাং মুসলিম উম্মাহর জন্য জরুরি হলো দুনিয়ার এ পরীক্ষাগারে কুরআন-সুন্নাহ নির্দেশ মোতাবেক জীবন পরিচালনা করা। পরকালের চিরস্থায়ী শান্তিময় জীবনের আশায় ক্ষণস্থায়ী এ দুনিয়ায় তারাও সফলতা লাভ করবে। যারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষিত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ টনিক মৌলিক ৫টি বিষয়ের প্রতি সব সময় মনোযোগ রাখাকে গণিমত মনে করবে।হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন; রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তিকে উপদেশ দিচ্ছেন (দুনিয়ায়) পাঁচটি অবস্থার আগে পাঁচটি অবস্থাকে গণিমত মনে করতে হবে। আর তা হলো->> বার্ধক্যে উপনীত হওয়ার আগে পরকালের জবাবদিহিতায় আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে ইবাদত করার জন্য যৌবনকালকে গুরুত্ব দেয়া। কোনো ভাবেই যৌবনকালকে অবহেলায় কাটিয়ে দেয়া যাবে না। আল্লাহর দরবারে যৌবনকালের ইবাদত অনেক পছন্দনীয়।>> সুস্থতা আল্লাহ তাআলার নিয়ামত। ইবাদত-বন্দেগির জন্য সুস্থতা অত্যন্ত জরুরি বিষয়। রোগব্যাধি অসুস্থতায় ঠিকভাবে আল্লাহ তাআলার ইবাদত করা সম্ভব হয়। তাই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগে প্রতিটি মানুষের উচিত সুস্থতা ইবাদত বন্দেগির জন্য সুবর্ণ সুযোগ মনে করে গুরুত্ব দেয়া।>> দুনিয়াতে স্বচ্ছলতা আল্লাহ তাআলার নিয়ামত। দরিদ্র্যতা মানুষকে কুফরির দিকে ধাবিত করে। তাই আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে সচ্ছলতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সুতরাং অভাবগ্রস্ত হওয়ার আগে মানুষের উচিত আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ব্যক্তিকে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে দান-অনুদানের মানসিকতায় তাঁর অবস্থার যথাযথ মর্যাদা দেয়া।>> সময়ের মূল্য অনেক বেশি। এ কারণে আল্লাহ তাআলা কুরআনে সময়ের কসম করেছেন। তাই মানুষ যখন এক মুহূর্ত সময়ের জন্যও অবসর হবে তখন সে সময়কে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে ইবাদত-বন্দেগির মধ্যে কাটানো জরুরি। সুতরাং মানুষ যখন কাজে ব্যস্ত হওয়ার আগে কর্মহীন অবসর সময় কাটাবে; তখন অবসর সময়কে ইবাদতের জন্য সুবর্ণ সুযোগ মনে করা জরুরি।>> সর্বোপরি মানুষ হায়াত তথা জীবনটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ তাআলা দয়া করে মানুষকে হায়াত দান করেছেন। আল্লাহর মহা অনুগ্রহ এ জীবনে তাঁর নৈকট্য অর্জনে অতিবাহিত করা জরুরি। মৃত্যুর মাধ্যমে মানুষের দুনিয়ার জীবনের সমাপ্তি ঘটে। তাই মৃত্যুর আগে হায়াতে জিন্দেগিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে নেক কাজে কাটানো জরুরি।পরিশেষে...আল্লাহ তাআলা মানুষকে উল্লেখিত পাঁচটি বিষয়কে অর্থাৎ যৌবনকাল, সুস্থতা, সচ্ছলতা, অবসর সময় এবং মহামূল্যবান জীবনকে তাঁর পবিত্র আমানত মনে করা জরুরি। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে এ বিষয়গুলোর আত্মোপলব্দি নিজেদের জীবনে লালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।এমএমএস/জেআইএম
Advertisement