মতামত

নারী পাচার রোধে কঠোর হোন

বাংলাদেশ থেকে ভারতে নারী ও শিশু পাচার বেড়েই চলেছে। এটা উদ্বেগজনক। টাঙ্গাইলের ঘাটাইল থেকে অপহরণের দুই বছর পর ইন্টারপোলের মাধ্যমে ভারতে পাচারকৃত তরুণীকে উদ্ধার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব-১২) সদস্যরা। এ ঘটনায় জড়িত আন্তর্জাতিক পাচারকারী চক্রের ১২ সদস্যকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। গত রোববার পাচার হওয়া তরুণীকে ভারত থেকে বাংলাদেশে আনতে সক্ষম হয় র‌্যাব। এটা আশার খবর। এখন পাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যে কোনো মূল্যে বন্ধ করতে হবে নারী ও শিশু পাচার। উদ্ধারকারী নারীকে ভারতের পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়া হয়েছিল। এ ধরনের অনেক নারীই ভারতের বিভিন্ন পতিতালয়ে আছে এমন খবর গণমাধ্যমে আসছে। গ্রামের সহজ-সরল নারীদের চাকরিসহ নানা প্রলোভন দেখিয়ে  পাচার করা হয় এবং তাদের পতিতা পল্লীতে বিক্রি করে দেয়া হয়। দেশের ১৮ টি রুট দিয়ে প্রতিবছর প্রায় ২০ হাজার নারী ও শিশু অবৈধ পথে পাচার হচ্ছে ভারতে। পাচারের শিকার বেশির ভাগ নারীদের স্থান হয় ভারতের পতিতা পল্লীতে। ভারতীয় সমাজ কল্যাণ বোর্ডের এক তথ্য থেকে জানা যায়, সেখানের বিভিন্ন পতিতা পল্লীতে প্রায় ৫ লাখ পতিতাকর্মী রয়েছে এর বেশির ভাগ বাংলাদেশী। অপরাধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের একটি আকর্ষণীয় পথ হচ্ছে মানব পাচার। দেশে পাচারকারীদের একাধিক চক্র রয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে চক্রগুলো দালালের মাধ্যমে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে নারী সংগ্রহ করে। পরে তাদেরকে ভারতের বিভিন্ন পতিতাপল্লী এবং আবাসিক হোটেলে জোরপূর্বক দেহ ব্যবসা করানো হয়। সামাজিক ও আর্থিক নিরাপত্তাহীন অস্বচ্ছল নারী ও শিশুরাই এই অপরাধ কর্মকাণ্ডের সহজ শিকারে পরিণত হয়। পাচার রোধে সংশ্লিষ্টদের আরও কঠোর হওয়া প্রয়োজন। এছাড়া পাচার হওয়া নারীদের ফেরত আনার পর যথাযথ পুনর্বাসনের জন্য পুনর্বাসন কেন্দ্রও জরুরি। এ ব্যাপারে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিও প্রয়োজন। জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় প্রশাসনকে এ ব্যাপারে ভূমিকা রাখতে হবে। পাচার রোধে সীমান্ত এলাকায় নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ। অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এক্ষেত্রে কার্যকর পন্থা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। এইচআর/পিআর

Advertisement