অর্থনীতি

শেয়ারবাজারে বড় দরপতন অব্যাহত

বড় দরপতন অব্যাহত রয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। রোববার চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণার পর এ দরপতন শুরু হয়। ওইদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের(ডিএসই)প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমে ১১৭ পয়েন্ট, যার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে সোমবারও।এদিন ডিএসইএক্স কমেছে ৭৯ পয়েন্ট। অর্থাৎ দুই দিনেই ডিএসইর প্রধান সূচক কমলো প্রায় ২০০ পয়েন্ট।বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, রোববার উভয় শেয়ারবাজারে মূল্য সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন শুরু হয়। তবে বেলা সাড়ে ১১টায় নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণার পর দ্রুত নিম্নমুখী হয় সূচক। দরপতন ঘটতে থাকে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের।সোমবার লেনদেনের শুরুতেই নিম্নমুখী হয়ে পড়ে সূচক, যা দিনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। ফলে টানা দুই কার্যদিবস মূল্য সূচকের বড় পতন ঘটলো। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৭৯ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৪২১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।মূল্য সূচকের পাশাপাশি কমেছে লেনদেনের পরিমাণও।দিন শেষে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৭৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা, যা আগের দিনের তুলনায় ৬২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা কম। আর লেনদেন হওয়া ৩২৭টি কোম্পানির মধ্যে ২৪৯টি প্রতিষ্ঠানই এদিন দর হারিয়েছে। অপরদিকে দাম বেড়েছে মাত্র ৬৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১০টির দাম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মুদ্রানীতি ঘোষণার পর যেভাবে শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে এর কোন যৌক্তিক কারণ নেই। শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে তেমন কিছুই মুদ্রানীতিতে নেই। মূলত গভর্নরের বক্তব্যে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তবে এ আতঙ্ক ছড়ানো বাস্তবসম্মত নয়।বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘মুদ্রানীতি ঘোষণার পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে তার কোন যৌক্তিক কারণ নেই। মুদ্রানীতিতে শেয়ারবাজারের জন্য খারাপ কিছু নেই। আমার ধরণা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে তা দুই একদিনের মধ্যে কেটে যাবে।’ মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় গভর্নর বলেন, ২০১০ সাল থেকে বিরাজমান মন্দাবস্থার উন্নতি হচ্ছে। এই পক্রিয়াটি যাতে সুস্থ ধারায় থাকে সে জন্য নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারি জরুরি। না হলে অতীতের মতো এবারও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের গুরুতর ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকবে।সোমবার ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ দশ কোম্পানির তালিকায় স্থান করে নিয়েছে, বারাকা পাওয়ার, আরএসআরএম স্টিল, ইসলামি ব্যাংক, বেক্সিমকো, লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স, সাইফ পাওয়ার, স্কয়ার ফার্মা, শাশা ডেনিমস,  ন্যাশনাল ব্যাংক এবং ইফাদ অটোস।এদিন দাম বাড়ার শীর্ষ দশ কোম্পানির তালিকায় রয়েছে, বারাকা পাওয়ার, রহিম টেক্স, শাশা ডেনিমস, এমবিএল ১ম মিউচ্যুয়াল ফান্ড, ফাইন ফুডস, সিম টেক্স, ইস্টার্ন হাউজিং, এলআর গ্লোবাল মিউচ্যুয়াল ফান্ড ১, জাহিন টেক্স এবং ন্যাশনাল টিউবস।অপরদিকে দাম কমার তালিকায় শীর্ষ দশ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে,  পেনিনসুলা চিটাগাং, ফারইস্ট নিটিং, প্রাইম ১ আইসিবিএ, আরএসআরএম স্টিল, জেমীনি সী ফুড, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, এফবিএফআইএফ, খান ব্রাদার্স পিপি, ইউনাইটেড ইন্সুরেন্স এবং সাউথইস্ট ব্যাংক।ডিএসইর মতো বড় দরপতন হয়েছে অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও(সিএসই)। সিএসইর প্রধান সূচক সিএসসিএক্স আগের দিনের তুলনায় কমেছে ১১৯ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে ৭১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। লেনদেন হওয়া ২৫৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৮০টিই দর কমেছে। অপরদিকে ৬২টির দাম বেড়েছে এবং ১৪টির দাম অপরিবর্তিত আছে।এমএএস/ওআর/জেআইএম

Advertisement