দেড় বছর আগে সিলেটের কুমারগাঁওয়ে চুরির অভিযোগে শিশু সামিউল আলম রাজনকে পিটিয়ে হত্যার মামলায় আসামির ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়েছে।বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও মো. জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আজ সোমবার আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিল শুনানি শুরু হয়।রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক। রাজন হত্যাসিলেটের জালালাবাদ থানার বাদেয়ালি গ্রামের আজিজুর রহমান ও মা লুবনা আক্তারের ১৩ বছর বয়সী ছেলে সামিউল আলম রাজন। সবজি বিক্রেতা শিশু রাজনকে ২০১৫ সালের ৮ জুলাই নগরীর কুমারগাঁওয়ে চুরির অভিযোগ তুলে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্মমভাবে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে সৌদি প্রবাসী কামরুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা। হত্যাকারীরাই সেই নির্যাতনের ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়, যা নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। খুনিরা লাশ গুম করার চেষ্টাও করে। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। খোদ দেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি রাজন হত্যাকারীদের গ্রেফতারে জোড় তৎপরতা চালান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে নগরীর জালালাবাদ থানায় কামরুল ইসলামকে (২৪) প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা করেন। হত্যার রায় ওই বছরেরই ১ অক্টোবর এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ৩৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৬ জন সাক্ষ্য দেন আদালতে। ৮ জুলাইয়ের ওই হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরুর পর মাত্র ১৭ কার্যদিবসে ঘোষিত হয় দেশজুড়ে আলোচিত ওই হত্যা মামলার রায়। রায়ে আসামিদের মধ্যে কামরুল ইসলাম, ময়না চৌকিদার, তাজউদ্দিন আহমদ বাদল ও জাকির হোসেন পাভেল আহমদের ফাঁসির আদেশ দেন। রাজনকে নির্যাতনের দৃশ্য ভিডিওধারণকারী নূর মিয়াকে যাবজ্জীবন সাজার রায় দেন আদালত।রায়ে মামলার ১৩ আসামির মধ্যে খালাস পেয়েছেন তিনজন। কামরুলের তিন ভাই মুহিত আলম, আলী হায়দার ও শামীম আহমদকে ৭ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। এক বছর করে দণ্ড হয়েছে দুলাল আহমদ ও আয়াজ আলীর। রায়ে এক বছর করে কারাদণ্ড হওয়া দুইজনকে এক হাজার টাকা করে এবং দণ্ডপ্রাপ্ত অন্যদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে তাদের আরও ২ মাস কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। এফএইচ/এনএফ/এমএস
Advertisement