কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তলিয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমর, ফুলকুমরসহ নদ-নদী তীরবর্তী এলাকার দেড় শতাধিক গ্রাম, চর ও দ্বীপচর। এসব এলাকার ২৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৭২ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই বাড়ছে পানি বন্দী মানুষের সংখ্যা। গ্রামীণ জনপদের কাঁচা সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। তলিয়ে গেছে ২০ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন। এদিকে ভুরুঙ্গামারীর সোনাহাট ব্রিজটির সংযোগ সড়ক ধসে যাওয়ায় সোনাহাট স্থল বন্দরের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী আবু তাহের জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ১৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার এক সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি নুন খাওয়া পয়েন্টে ২২ সেন্টিমিটার, ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে তিন সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি ২১ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়েছে। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ফারাজী পাড়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস জানান, বাড়ি এক জায়গা থেকে সরিয়ে অন্য জায়গায় এনেছিলাম।ভাবছিলাম এখানে পানি উঠবে না। কিন্তু পানি বাড়ি-ঘরে ডুকে পড়ায় আর বাড়িতে থাকতে পারছি না। রান্না করতে না পারায় খাওয়া-দাওয়া বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থা এই গ্রামের প্রায় সব পরিবারের। যাত্রাপুর ইউনিয়নের আরেক বাসিন্দা মেহের জামাল জানান, ৬ বিঘা জমিতে রোপা আমন লাগিয়েছিলাম সব পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি দ্রুত নেমে না গেলে সব নষ্ট হয়ে যাবে। এই সময়ে চারার অভাবে আর রোপা আমন লাগানো সম্ভব হবে না আর না থেয়ে থাকতে হবে। চিলমারী উপজেলার রমনার চর এলাকার সুবল জানান, বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ঘর-বাড়ী ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছি। এ পর্যন্ত ত্রাণ সামগ্রী পাইনি। এদিকে বন্যা দুর্গতদের জন্য এ পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে কোনো ত্রাণ সহযোগিতা দেয়া হয়নি।জেলা প্রশাসক এবিএম আজাদ জানান, বন্যার্তদের জন্য ২০০ মেট্রিক টন চাউল ও পাঁচ লাখ টাকার চাহিদা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে।
Advertisement