দেশজুড়ে

শুকিয়ে গেছে ঠাকুরগাঁওয়ের ১১টি নদী

টাঙ্গন নদীকে ঘিরে গড়ে ওঠা ঠাকুরগাঁও শহর। অথচ সে নদী দখল হয়ে পরিণত হয়েছে খালে। এক সময়ের প্রমত্তা এই নদীতে এখন বর্ষাতেও পানি থাকে না। শুধু টাঙ্গন নয়, এরই মধ্যে শুকিয়ে গেছে ঠাকুরগাঁওয়ের ১১টি নদী।পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, টাঙ্গন, শুক নদী, নাগর, টেপা, কলিকসহ মোট ১১টি নদী আছে। যার প্রত্যেকটিরই অবস্থাই খারাপ।নালার মতো হয়ে যাওয়া টাঙ্গন নদী দেখলেও বোঝার উপায় নেই সেটি এক সময়কার প্রমত্তা টাঙ্গন নদী। এর তীরে গড়ে উঠেছিলো ঠাকুরগাঁও শহর। এরই মধ্যে নদী এতোটাই শুকিয়ে গেছে, ঘোর বর্ষাকালেও পাট পঁচানের পানি পাচ্ছেন না কৃষকরা।ভারতে একতরফাভাবে বাঁধ নির্মাণের কারণে দিনে দিনে নাব্যতা হারিয়েছে জেলায় এ নদীগুলো। কিন্তু সচল করার কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। নদী খননের মাধ্যমে নাব্যতা ফিরিয়ে আনার দাবি তাদের।জেলায় এ সকল নদীর বুকে কিছু কৃষক এখন ধান চাষ শুরু করেছে। অনেকে অন্য জায়গা থেকে মাটি নিয়ে এসে ধানের বীজতলা তৈরি করছে। এখন নদীতে আর মাছ পায় না জেলেরা। তাই জেলেরা জীবিকার তাগিদে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে।এছাড়া নদীতে শহরের ময়লা আবর্জনা ফেলে নদীর পানি ও পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। পৌর এলাকায় হোটেল, বাসা-বাড়ির সকল আবর্জনা ফেলছে এলাকাবাসী এ নদীতে। কিন্তু  পৌরসভাসহ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের কোনো নজরদারি নেই। ঠাকুরগাঁও কলেজপাড়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুস সালাম বলেন, একসময় এই নদীতে আমরা সাঁতার কাটতাম, মাছ ধরতাম। কিন্তু এই নদী এখন আর নদী নেই। এটা এখন খালে পরিণত হয়েছে। নদীটি দেখলে এখন অনেক খারাপ লাগে।আর্টগ্যালারি এলাকার নাজমুল হক বলেন, শহরের সকল হোটেল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ময়লা নিয়ে নদীতে ফেলা হচ্ছে। নদীতে যা অল্প পানি আছে তা এই সকল ময়লা দিয়ে দূষিত হয়ে গেছে। একটু অবসরে এখন নদীর পাড়ে বসা যায় না গন্ধে।পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, সংকট মোকাবেলায় কয়েকটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। সারা দেশের নাব্যতা হারানো নদীগুলো ড্রেজিংয়ের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। সেই প্রকল্পের আওতায় এই নদীটিও খনন করতে পারবো বলে আশা করছি।ঠাকুরগাঁও শহরের সচেতন মানুষের এখন একটাই দাবি, অচিরেই নদীগুলো আবার খনন করে নদীকে তার পূর্বের প্রমত্তা ফিরিয়ে দেয়া হোক। এই বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন জেলার সবাই।মো. রবিউল এহসান রিপন/এএম/আরআইপি

Advertisement