একুশে বইমেলা

মোস্তফা কামালের মহাকাব্যিক উপাখ্যান ‘অগ্নিকন্যা’

অমর একুশে বইমেলায় আসছে জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক মোস্তফা কামালের ঐতিহাসিক উপন্যাস ‘অগ্নিকন্যা’। সাংবাদিকতা পেশার ব্যস্ততার মধ্যেও যাঁরা সৃষ্টিশীল কাজের ধারা বজায় রাখতে পেরেছেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন মোস্তফা কামাল। প্রতিবছর অমর একুশে গ্রন্থমেলায় তাঁর একাধিক বই প্রকাশিত হয়। তিনি দুই দশক ধরে গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ-নিবন্ধ, সায়েন্স ফিকশন, টিভি নাটক এবং শিশু-কিশোর উপযোগী রচনার নিয়মিত লেখক। কলামিস্ট হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়তাও রয়েছে তাঁর। ২০১৫ সালে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে তাঁর ‘চাঁদের আলোয় রাগিব আলী এবং সে’ শিরোনামে একটি নতুন ধরনের উপন্যাস। অন্যদিকে ‘রুবীর কালো চশমা’ সত্য ঘটনা অবলম্বনে রচিত। নানা ধরনের কিশোর উপন্যাস লিখে মোস্তফা কামাল ইতোমধ্যে ব্যাপক পরিচিতি অর্জন করেছেন। এ ধরনের একটি গ্রন্থ ‘ডাকাতের কবলে ফটকুমামা’। মোস্তফা কামালের রঙ্গব্যঙ্গ সিরিজ বেশ জনপ্রিয়। ২০১৫ সালে প্রকাশিত হয়েছে ‘পাগলছাগল ও গাধাসমগ্র-৯’। আর সায়েন্স ফিকশন ‘বিমান রহস্য’ এবং ‘হাসির চার উপন্যাস’ সংকলন দুটিও দৃষ্টিনন্দন। এছাড়া কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয়েছে ৬টি সায়েন্স ফিকশন ও ৫টি গোয়েন্দা উপন্যাসের সংকলন নিয়ে মোস্তফা কামালের আরো দুটি গ্রন্থ। মোস্তফা কামালের ‘জননী’ উপন্যাসটি ইতোমধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। ২০১১ সালের তাঁর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস ‘জনক জননীর গল্প’ প্রকাশিত হয়। এসব গ্রন্থের আগেও তিনি ‘সিরিয়াস’ ধারার উপন্যাস রচনায় দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। ‘বারুদ পোড়া সন্ধ্যা’(২০০৫), ‘হ্যালো কর্নেল’(২০১০) তার মধ্যে পাঠকের মনোযোগ আকৃষ্ট করেছে। এরপর তিনি লিখেছেন ‘জিনাত সুন্দরী ও মন্ত্রী কাহিনী’(২০১২), ‘কবি ও একজন নর্তকী’(২০১৩) প্রভৃতি উপন্যাসের বাস্তবধর্মী কাহিনী। অন্যদিকে তাঁর সংকলনগ্রন্থ ‘সায়েন্স ফিকশন সমগ্র’, ‘চার জয়িতা’, ‘চার অপরূপা’ এবং গবেষণাগ্রন্থ ‘আসাদ থেকে গণঅভ্যুত্থান’(১৯৯৩) খ্যাতি অর্জন করেছে। তিনি ৯০টি গ্রন্থের রচয়িতা। এবারের বইমেলায় ধ্রুব এষের প্রচ্ছদে পার্ল পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশ হওয়া তাঁর অগ্নিকন্যা আলোড়ন তুলবে-এমনটি নির্দ্বিধায় বলা যায়। অগ্নিকন্যা সম্পর্কে লেখক বইটির ভূমিকায় যেমনটি বলেছেন-‘ অগ্নিকন্যা ঐতিহাসিক উপন্যাস, ইতিহাস গ্রন্থ নয়। অগ্নিকন্যা এই উপন্যাসের প্রতীকী নাম। কাজেই শুধু একটি চরিত্রকে কেন্দ্র করে এই উপন্যাস রচিত হয়নি। একটি বিশেষ সময়কে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। এর সময়কাল হচ্ছে ১৯৪৭ থেকে ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দ। দেশভাগ ও তার পরবর্তী প্রেক্ষাপটে ইতিহাসের নায়কদের ভূমিকা তুলে ধরার ক্ষেত্রে কোনোরকম পক্ষপাতিত্ব করা হয়নি। ঘটনা পরম্পরায় যাঁর যে ভূমিকা ছিল তা তুলে ধরতে কার্পণ্য করিনি। এ উপন্যাস রচনা করতে আমাকে প্রচুর পড়তে হয়েছে। কোনো কোনো গ্রন্থ থেকে উদারভাবে তথ্য নিয়েছি। এ জন্য আমি গ্রন্থকারদের কাছে ঋণী।’ এ সম্পর্কে তিনি জাগো নিউজকে বলেন- অগ্নিকন্যা প্রথম খণ্ড লেখা হয়েছে। আরো দুটি খণ্ড লেখার ইচ্ছা আছে। বাংলা সাহিত্যের সবক্ষেত্রে কাজ করে যাবো। আরো বড় কিছু কাজ করার পরিকল্পনা আছে আমার। এমন কিছু কাজ করতে হবে যা বাংলা সাহিত্যে চিরস্থায়ী আসন করে নিতে পারে। আমার ধ্যানজ্ঞান হচ্ছে লেখালেখি। আমি নিরলসভাবে সেটাই করছি। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে সেই কাজটি করে যেতে চাই। সৃষ্টিশীলতায় মুখর থাকতে চাই।এসইউ/এইচআর/জেআইএম

Advertisement