বিশেষ প্রতিবেদন

লেনদেনের তথ্য ফাঁস : তদন্তে ডিএসইর কমিটি

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের অতি স্পর্শকাতর তথ্য ফাঁস হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) থেকেই অর্থের বিনিময়ে এ তথ্য ফাঁস করছে দুষ্কৃতকারীরা। বিষয়টি যাচাই করতে তদন্তের উদ্যোগ নিয়েছে ডিএসই। ডিএসই সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।  সূত্র জানায়, গত ২৪ জানুয়ারি ডিএসইর বোর্ড সভায় শেয়ার ও ইউনিট ক্রয়-বিক্রয়ের স্পর্শকাতর এবং গোপন তথ্য ফাঁসের বিষয়ে আলোচনা হয়। পরে ঘটনা তদন্তে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তিন অধ্যাপকের সমন্বয়ে কমিটি গঠন হয়েছে। কমিটিতে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম, অধ্যাপক মো. মোস্তফা এবং অধ্যাপক ড. ইউনুস আলী রয়েছেন।   এর আগে বুয়েটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠনের জন্য ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে প্রস্তাব করা হয়। তবে কায়কোবাদ কমিটিতে থাকতে অসম্মতি জানানোয় তাকে বাদ দিয়ে এ কমিটি গঠন করা হয়।সূত্র জানায়, তদন্ত কমিটি ডিএসইর সার্ভিল্যান্স এবং আইটি বিভাগের বিভিন্ন বিষয় ক্ষতিয়ে দেখবে। ধারণা করা হচ্ছে, শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত তথ্য এ দুই বিভাগ থেকেই ফাঁস হচ্ছে। যদি ডিএসইর কেউ জড়িত থাকে তাহলে তারা কীভাবে কোন মাধ্যমে তা করেছে সেটি ক্ষতিয়ে দেখবে তদন্ত দল।অভিযোগ উঠেছে, লেনদেন সংক্রান্ত গোপন তথ্য মার্কেট চলাকালীনই পাচার হচ্ছে, যা ফেসবুক, ভাইভার, ম্যাসেঞ্জারসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে বড় বড় ব্রোকারেজ হাউজ ও বিনিয়োগকারীদের কাছে ছড়িয়ে পড়ছে। নাম না প্রকাশের শর্তে ডিএসইর চার ব্রোকারেজ হাউজের প্রধান বলেন, ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত তথ্য ফাঁস হচ্ছে। এদের মধ্যে দুজন জানান, একটি নির্দিষ্ট দিন তারা কোন শেয়ার কি পরিমাণে কিনেছেন তাও এক বিনিয়োগকারী ফোনে  জানিয়েছেন। এমন তথ্য শুনে তারা হতবাক। এভাবে তথ্য ফাঁস হওয়া ভয়ঙ্কর ব্যাপার। এতে কোন বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য গোপন থাকছে না। ফলে বিনিয়োগ ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শেয়ারের যাবতীয় তথ্য সংরক্ষিত থাকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল), ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডে (সিএসই)। এর মধ্যে সিডিবিএলে বিনিয়োগকারীদের সব শেয়ার সংরক্ষিত থাকে। অন্যদিকে বিএসইসি, ডিএসই ও সিএসই সফটওয়্যারের মাধ্যমে লেনদেন মনিটরিং করে। এছাড়া কোন কোম্পানির শেয়ার সংশ্লিষ্ট কোম্পানির কাছেও লেনদেনের গোপন তথ্য সিডিবিএল থেকে দেয়া হয়। সুতরাং তথ্য ফাঁস হলে এ পাঁচ মাধ্যমের যেকোনো এক বা একাধিক মাধ্যম থেকে হতে হবে।  এ বিষয়ে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী জাগো নিউজকে বলেন, তথ্য ফাঁসের বিষয়ে ডিএসইর বোর্ড সভায় আলোচনা হয়েছে। ডিএসই থেকে তথ্য ফাঁস হচ্ছে কি না তা ক্ষতিয়ে দেখার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. বখতিয়ার হাসান জাগো নিউজকে বলেন, বিনিয়োগের স্বার্থে লেনদেন তথ্যের গোপনীয়তা বজায় রাখা উচিত। যদি লেনদেনের গোপন তথ্য ফাঁস হয় তাহলে এটি সাংঘাতিক রকমের খারপ কাজ। এটা কঠোর হাতে দমন করতে হবে। এমএএস/এএইচ/পিআর

Advertisement