মুঠোফোনে চাঁদা চেয়ে একের পর এক প্রাণনাশের হুমকির ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে । নিষিদ্ধ পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি, লাল বাহিনীসহ বিভিন্ন পরিচয়ে মুঠোফোনের মাধ্যমে চাঁদা চাওয়া হচ্ছে, আর চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে অথবা আইনশৃংখলা বাহীনিকে অবহিত করলে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। এ পরিস্থিতিতে অনেকেই পেশাগত কাজ কমিয়ে দেয়ার পাশাপাশি চলাফেরাও সীমিত করেছেন। প্রাণনাশে হুমকির ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে চারজন শিক্ষক থানায় নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরি করেছেন। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনেও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে উপ-উপাচার্য চৌধুরী সারওয়ার জাহান বলেন, এভাবে শিক্ষকদের কাছে চাঁদা চাওয়া ও হত্যার হুমকি উদ্বেগের। গত বছর অধ্যাপক শফিউল ইসলামকে দিনে দুপুরে কুপিয়ে হত্যার পর থেকেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে প্রগতিশীল শিক্ষকদের মধ্যে। বিশ্ববিদ্যালয় ও পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত দেড় মাসে পাঁচজন প্রগতিশীল শিক্ষককে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। ফেব্রুয়ারি প্রথম সপ্তাহে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি আনন্দ কুমার সাহার মুঠোফোনে অজ্ঞাত নম্বর থেকে কল করে চাঁদা দাবি করা হয়। সে নিজেকে লাল বাহীনির সদস্য হিসেবে পরিচয় দেয়। এরপর গত ১০ মার্চ চাঁদা দাবি করে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাশেমের কাছে। ১৬ মার্চ একই ধরনের হুমকি পান দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। সর্বশেষ গত ২১ মার্চ ভূ-তত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মজুমদার ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক বিধান চন্দ্র দাসকেও অনুরুপভাবে হুমকি দেওয়া হয়। প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক বিধান চন্দ্র দাসের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে এখন সতর্ক হয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে। হুমকি পাওয়ায় আমি কিছুটা শঙ্কিত আর তার প্রভাব আমার গবেষণা কাজে পড়ছে। মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলো মুক্তচিন্তার শিক্ষকদের মানসিক চাপে রাখার জন্য তারা এই হুমকি দিচ্ছে, জঙ্গিবাদীরাই এই হুমকির নেপথ্যে কাজ করছে বলে মনে করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তারিকুল হাসান জাগো নিউজ২৪.কমকে জানান, একের পর এক হুমকির ঘটনায় হুমকিদাতাদের সনাক্তে পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া যেসব শিক্ষককে হুমকি দেওয়া হয়েছে তাঁদের এবং যেসব নম্বর থেকে ফোন আসছে তার একটা তালিকা প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার ব্যাপারে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ জাগো নিউজ২৪.কমকে বলেন, প্রাণনাশের হুমকির ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষক নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি করেছেন। অভিযোগগুলো পুলিশ গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখছে বলে তিনি জানান। এসএইচএ/এমএস
Advertisement