জাতীয়

অপতৎপরতা মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও দেশবিরোধী যে কোন অপতৎপরতা ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করার আহ্বান জানিয়েছেন। ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে বুধবার প্রধানমন্ত্রী এ আহবান জানান।দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছে, রায় দেওয়া হচ্ছে এবং রায় কার্যকরও শুরু হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ঠিক সে সময়ে মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধের বিচার, পবিত্র সংবিধান, গণতন্ত্র ও সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে বানচাল করতে স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এবং গণতন্ত্রবিরোধী শক্তির ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে।তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট একাত্তরের স্টাইলে চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে। আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করছে। তাই আজকের এই মহান দিনে তিনি সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এ অর্জনকে অর্থপূর্ণ করতে সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে। স্বাধীনতার চেতনাকে ধারণ করতে হবে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে তা পৌঁছে দিতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করেছে মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে দেশ ও জাতির উন্নয়নে নিবেদিত থেকেছে। গত ছয় বছরে তার সরকার কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, ক্রীড়া, তথ্যপ্রযুক্তি, বৈদেশিক সম্পর্ক, নগর উন্নয়ন, গ্রামীণ উন্নয়ন, মানবসম্পদ উন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তা, নারী উন্নয়নসহ প্রতিটি সেক্টরে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করেছে। যার ফলে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা, মাথাপিছু আয়, বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ, রপ্তানি, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে।বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল-মডেল উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সংস্থা এ কারণে আমাদের প্রশংসা ও পুরস্কৃত করেছে।একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অতর্কিতে নিরীহ ও নিরস্ত্র বাঙালির ওপর যে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে তা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এ ঘোষণা টেলিগ্রাম, টেলিপ্রিন্টার ও তৎকালীন ইপিআর’র ওয়ারলেসের মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও এই ঘোষণা প্রচারিত হয়।৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতার ডাক দেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সেখানে ঘোষণা দিয়েছিলেন- ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ এরই মাধ্যমে তিনি বাঙালি জাতিকে শত্রুর মোকাবিলা করার নির্দেশ দেন।স্বাধীনতার সুফল বাংলার প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দিতে তার সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা হবে। তারা এ লক্ষ্য অর্জনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।দেশবাসীর প্রতি আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ, অসাম্প্রদায়িক ও মধ্যআয়ের দেশে উন্নীত করতে প্রতিটি বাঙালি দেশপ্রেমের মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে স্ব-স্ব অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও সততার সঙ্গে আত্মনিয়োগ করবেন। বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে মর্যাদাপূর্ণ আসনে অধিষ্ঠিত করবেন। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি সবাইকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে শপথ নেয়ার আহ্বান জানান।আরএস/পিআর

Advertisement