বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের নিদারুণ কষ্ট লাঘব হতে চলেছে। এখন থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অবসর সুবিধা পেতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। অবসর ফান্ডের আর্থিক সংকট নির্মূলে সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।জানা গেছে, অবসর নেয়ার পরও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা সময় মতো অবসর-কল্যাণ বাবদ আর্থিক সুবিধা পান না। সারাজীবন শিক্ষকতা করে শেষ জীবনে পাওনা নিয়ে নানাভাবে হয়রানি, বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। অপেক্ষমাণ অনেক শিক্ষক-কর্মচারী জটিল ব্যাধিতে আক্রান্তসহ মারা গেলেও সময় মতো পাওনাটুকু হাতে পান না।কল্যাণ ও অবসর ট্রাস্টের সংশ্লিষ্ট কর্তারা বরাবরই বলছেন, তহবিলে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় অবসর ভাতার টাকা দিতে পারছেন না। অর্থ মন্ত্রণালয়ে বিশেষ বরাদ্দ চেয়েও সাড়া মিলছে না। কল্যাণ বোর্ডের চেয়ে অবসর বোর্ডে এ সংকট চরমে। এসব বিষয় বিবেচনা করে অবসর বোর্ডের ফান্ড বৃদ্ধিতে আইন পরিবর্তন করা হচ্ছে। এ লক্ষে আইন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।চিঠিতে বলা হয়েছে, বর্তমান আইন অনুযায়ী এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের মাসিক ৪ শতাংশ হারে চাঁদা কর্তন বাবদ ৩৫ কোটি টাকা অবসর বোর্ডে সঞ্চয় হয়। অথচ অবসর সুবিধা দিতে মাসিক ৭০ কোটি টাকা প্রয়োজন হয়। ফলে প্রতি মাসে ৩৫ কোটি টাকার ঘাটতি থেকে যায়। তাই ৪ শতাংশের পরিবর্তে ৬ শতাংশ মাসিক চাঁদা করা হলে এ ঘাটতি আংশিক মেটানো সম্ভব হবে।সে হিসাবে পূর্ণ মেয়াদ চাকরি শেষে একজন সহকারী অধ্যাপক ১৬ লাখ, প্রধান শিক্ষক ১২ লাখ এবং সহকারী শিক্ষক ৬ লাখ টাকা অবসর সুবিধা পান।চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, অবসর সুবিধা বোর্ডের ৯ম ট্রাস্ট্রি বোর্ডের সভায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদসহ সব সদস্য এ প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছেন। বর্তমান আইন পরিবর্তন হলে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।অন্যদিকে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বেসরকারি শিক্ষকদের কল্যাণ ও অবসর ট্রাস্ট সংক্রান্ত বিষয়ে ২০১৬ সালের এপ্রিলে অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি সভা হয়। সে সভায় ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে এ দুই ফান্ড বাবদ ১০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি সেই সভায়ও মাসিক ৪ শতাংশের পরিবর্তে ৬ শতাংশ করারও প্রস্তাব করা হয়। এরপরই এমন সিদ্ধান্তে আসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসেন বলেন, বেসরকারি শিক্ষকদের অবসর ফান্ডের আর্থিক সংকট নিরসনে শিক্ষক-কর্মচারীদের মাসিক চাঁদা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হয়েছে। সে লক্ষ্যে আমরা আইন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিচ্ছি। আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। এছাড়া অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ বাবদ অবসর বোর্ডের ঘাটতি লাঘব হবে বলে জানান তিনি।এমএইচএম/জেএইচ/এএইচ/আরআইপি
Advertisement