দেশের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কিছু কিছু অঞ্চলে মানুষ জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। তবে কোথাও বন্যার খবর মেলেনি। ভারত এবং নেপাল থেকে যে সব খবর পাওয়া যাচ্ছে তাতে বাংলাদেশে যদি তার ধাক্কা লাগে, তাহলে দেশের অনেক অঞ্চলেই বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।নেপাল ও উত্তর ভারতে অর্থাৎ হিমালয় অঞ্চলে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের ফলে ভূমিধস ও বন্যায় ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রাণ ও সম্পদহানি ঘটেছে। এই পানির বেশিরভাগ অংশই এক সময় বাংলাদেশ দিয়ে সাগরে পড়ত। ফারাক্কাসহ বেশকিছু বাঁধ নির্মাণের ফলে বাংলাদেশের ওপর পানির চাপ অনেকটাই কমে গেছে। তবে অতিরিক্ত পানির চাপ হলে ভারত আত্মরক্ষার্থে বাঁধগুলো খুলে দেয়ায় বাংলাদেশ অনেক সময় অনাকাঙ্ক্ষিত বন্যার কবলে পড়ে যায়। এক সময় বাংলাদেশের নদীগুলো গভীর ও প্রশস্ত থাকায় বন্যার পানির চাপে জনবসতি বা সম্পদের তেমন ক্ষতি হতো না। এ ছাড়া আমাদের কৃষি ব্যবস্থা ও জনবসতি ছিল বন্যা উপযোগী। কিন্তু আধুনিক বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার কল্যাণে পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধই হয়ে পড়েছে বন্যা থেকে জননিরাপত্তা ও কৃষি ব্যবস্থাকে রক্ষার প্রধান উপায়। সে কারণে নেপাল এবং ভারতের বন্যার ধাক্কা আমাদের দেশে কতটুকু লাগতে পারে সে ব্যাপারে আমাদের অগ্রিম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া দরকার।এ ছাড়া ইতোমধ্যে যে সব জনপদ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে, সেখানকার মানুষের যোগাযোগের বাহন ও নিত্যব্যবহার্য পণ্যের যোগান দেয়ার জন্য উদ্যোগ নেয়া দরকার। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, যাতে বন্যা এলে আমরা তার মোকাবেলা করতে পারি। যাতে কোনো প্রাণহানি না ঘটে, সে জন্যে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি থাকা জরুরি।
Advertisement