দেশজুড়ে

বগুড়া-নাটোর মহাসড়ক যেন মরণ ফাঁদ

উত্তরাঞ্চলের সড়ক পথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম বগুড়া-নাটোর মহাসড়ক। প্রতিদিন এ মহাসড়কে চলাচল করে ট্রাক, বাসসহ ছোট বড় হাজারও যানবাহন। কিন্তু সড়ক প্রশস্ত না হওয়ায় এ সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারীদের প্রতিনিয়ত মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। ইতোমধ্যে এই সড়কে ছোট বড় দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অনেকে। দ্রুত সড়কটি প্রশস্ত করার দাবি এই পথে চলাচলকারীদের। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নাটোর থেকে বগুড়া মহাসড়কটির দৈর্ঘ্য ৬০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৩২ কিলোমিটার নাটোর এবং ২৮ কিলোমিটার বগুড়ার অংশ। উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলে সড়ক পথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই মহাসড়কটি। প্রতিদিন এই সড়কে চলাচল করে যাত্রীবাহী বাস, পাথর বোঝাই ট্রাকসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী ভারী যানবাহন। এই সড়কটি দিয়েই চলনবিল এলাকার উৎপাদিত কৃষিজাত পণ্য, মৎস্যসম্পদ নাটোর ও বগুড়া হয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করা হয়। অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটসহ নানা কারণে সড়কটির গুরুত্ব অপরিসীম। এরপরও গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কটি এখন আতংকের নাম। সড়ক নয় যেন মরণ ফাঁদে রূপ নিয়েছে।সড়কের প্রশস্ততা কম থাকায় ওভারটেকিংয়ে করতে গিয়ে ঘটে বিপত্তি। সড়কটির পাশে নেই মানুষজন চলাচলের রাস্তা। তাছাড়া বৈধ-অবৈধ যানচলাচলে অত্যাধিক কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। অকালেই ঝড়ে যাচ্ছে তাজা প্রাণ। দুর্ঘটনা রোধে দ্রুত সড়কটি প্রশস্ত করার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। হাইওয়ে পুলিশের হিসাব মতে, নাটোর-বগুড়া মহাসড়কটি সরু হওয়ায় গত বছর থেকে আজ অবধি ছোট বড় দুর্ঘটনায় এই মহাসড়কে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৫ জন। স্থানীয়দের মতে এই সংখ্যা দ্বিগুণ। ফটোসাংবাদিক গোলাম গাউজ জানান, প্রতিদিন নাটোর-বগুড়া মহাসড়কে দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। সড়কটি বড় করা অত্যন্ত দরকার। সাংবাদিক এমরান আলী রানা বলেন, এই মহাসড়কটি চারলেনে উন্নতি করা সময়ের দাবি। তা না হলে একের পর এক প্রাণ ঝরতেই থাকবে। ট্রাকচালক আলী আক্কাস জানান, এই মহাসড়কটি দিয়ে পঞ্চগড়ের পাথরবোঝাই ট্রাকসহ রংপুর-দিনাজপুরগামী যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী যানবহন চলাচল করে। সে দিক থেকে এই সড়কটির গুরুত্ব অনেক। দ্রুত এটি সংস্কার করা প্রয়োজন। নাটোর সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইমরান ফারহান সুমেল বলেন, মহাসড়কের শ্রেণি অনুযায়ী সড়কের প্রশস্ততা সর্বনিম্ন ২৪ ফুট হওয়ার নিয়ম থাকলেও নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের প্রশস্ততা মাত্র ১৮ ফুট। এই মহাসড়কটি ৩০ ফিট প্রশস্ত করতে ২৩০ কোটি টাকার প্রাককলন ব্যয় উল্লেখ করে যথাযথ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। নাটোর-বগুড়া মহাসড়কটি প্রশস্ত করে এই সড়কে মৃত্যুঝুঁকি নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন এমন প্রত্যাশা তার।নাটোরের জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন জানান, নাটোর বগুড়া মহাসড়কে দুর্ঘটনা এড়াতে সড়কটি প্রশস্ত করণে যথাযথ প্রদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। অচিরেই মহাসড়কটি প্রশস্তকরণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কাজ শুরু করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।রেজাউল করিম রেজা/এএম/জেআইএম

Advertisement