খেলাধুলা

যেন ক্যাচ মিসের এক সফর!

ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের তৃতীয় দিন ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। তারপরও একদিন বাকি থাকতেই ম্যাচটি ৯ উইকেটে হেরে গেছে বাংলাদেশ। এরই সঙ্গে সমাপ্তি ঘটেছে বাংলাদেশ দলের জয়হীন একটি সফরের। যেখানে তিন ম্যাচের ওয়ানডে, সমান সংখ্যক টি-টোয়েন্টি আর দুই টেস্টের সিরিজের সব কটিতেই রয়েছে শুধুই পরাজয়ের বেদনা।ওয়েলিংটন টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ৫৯৫ রান বড় এক প্রাপ্তি হয়েই থাকবে। তবুও একটা সফরে পুরোপুরি জয়হীন থাকা বাংলাদেশকে নিয়ে যাচ্ছে একটু পেছনেই। ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ থেকে শুরু করলে এরপর আর কোন দিপাক্ষিক সিরিজে জয়হীন থাকেনি বাংলাদেশ। বরং আছে পাকিস্তানকে ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের আনন্দ।২০১৬ সালের শেষ আর ২০১৭ সালের শুরুর সময়ে এই নিউজিল্যান্ড সফর থেকে আবার কী তবে ব্যর্থতার পর্ব শুরু হলো? বাংলাদেশের কট্টর সমালোচক থেকে শুরু করে ক্রিকেট বন্ধুরাও বলে থাকেন, টাইগারদের আসল চ্যালেঞ্জ বিদেশে। সেই চ্যালেঞ্জটাই এবার শুরু হলো বলে...! এবছর বাংলাদেশ বেশিরভাগ সময়ই ব্যাস্ত থাকবে বিদেশের মাটিতে খেলা নিয়ে। ফেব্রুয়ারিতেই ভারত সফর, মার্চে শ্রীলঙ্কা। আছে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের মত কঠিন চ্যালেঞ্জও। এই সফরগুলোর আগে যদি নিউজিল্যান্ড সিরিজে ব্যর্থতার ময়না তদন্ত করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার পাশাপাশি ফিল্ডারদের ক্যাচ মিসের মহড়া ছিল চোখে পড়ার মত। মূলতঃ অনেক সময় ক্যাচ মিসই হয়ে দাঁড়ায় ম্যাচ মিস। তেমেই বেশ কয়েকটি পরিস্থিতিরই স্বীকার হতে হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে। ২৬ ডিসেম্বর ক্রাইস্টচার্চেই ওয়ানডে দিয়ে শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের এবারের নিউজিল্যান্ড মিশন। সেই ক্রাইস্টচার্চেই একমাসের লম্বা মিশন শেষ হলো আজ। প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশি ফিল্ডারদের মুঠো গলে পড়েছিল অন্তত তিনটি ক্যাচ। এরপর পুরো সফরেই যা এক রকম প্রদর্শনী হয়ে দাঁড়ায় পরের ম্যাচগুলোতে। সব মিলিয়ে ৮ ম্যাচে অন্তত ২০টিরও বেশি ক্যাচ ছেড়েছে বাংলাদেশের ফিল্ডাররা।ক্যাচ মিসের মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সৌম্য সরকার, মেহেদী হাসান মিরাজ থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিটি ফিল্ডারই। পুরো সিরিজে অত্যন্ত বাজে ফিল্ডিং বেশ ভুগিয়েছে বাংলাদেশকে। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দুটি ক্যাচ মিস হয়। তৃতীয় ওয়ানডেতে মোস্তাফিজের বলে শূন্য রানে থাকা নিল ব্রুমের ক্যাচটা ইমরুল ধরতে পারলে হয়তো ম্যাচের চিত্র ভিন্নও হতে পারতো। সেই ব্রুম শেষ পর্যন্ত করেছিলেন ৯৭ রান। এই ম্যাচেই উইলিয়ামসনের ক্যাচ মিস করেছিল বাংলাদেশের ফিল্ডাররা।টেস্ট সিরিজেও ছিল ক্যাচ মিসের মহড়া। দুই টেস্টে অন্তত ১০টি ক্যাচ মিস হয়েছে। প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৫৯৫ রান করেও যে জিততে না পারা কিংবা ড্র করতে না পারা, সেখানেও সহজ কিছু ক্যাচ মিসের আক্ষেপ জড়িয়ে থাকবে। ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের চতুর্থ দিনে এসে বাংলাদেশের পরাজয়ের বড় কারণই হলো ক্যাচ মিস।তামিম ইকবাল সফরের ব্যার্থতার জন্য এটাকে দেখছেন বড় করে। ‘দেশের মাটিতে একটা ক্যাচ হাতছাড়া করলেও কন্ডিশন আমাদের পক্ষে থাকে। কিন্তু যখন বিদেশে এসে খেলি, একটা ক্যাচও ছাড়া উচিত না। আমরা তো ওদের মতো এত সুযোগ তৈরি করতে পারব না। আমাদের বোলারদের একটা সুযোগ তৈরি করতে অনেক চেষ্টা করতে হয়। ৭০ শতাংশ ক্যাচ ধরতে পারলেও ফল অন্য রকম হতো।’আইএইচএস/জেআইএম

Advertisement