বিশেষ প্রতিবেদন

তরুণীর দেখানো কাবিননামা ভুয়া দাবি কাজীর

যে তরুণীর তথ্য-প্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলায় বর্তমানে একদিনের পুলিশ হেফাজতে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার আরাফাত সানি, সেই তরুণী সানির সঙ্গে বিয়ে হয়েছে দাবি করে যে কাবিননামা প্রকাশ করেছেন সেটি ভুয়া বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্ট অফিসের কাজী।  শুধু কাবিননামাই নয়, কাজীর স্বাক্ষরও জাল। কাবিননামায় যে ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে তাও ভুয়া বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্ট কাজী।কাবিননামায় কাজী মো. আনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত বিবাহ রেজিস্ট্রিতে যে স্বাক্ষর এবং ঠিকানা রয়েছে সেটিও সম্পূর্ণ ভুয়া বলে দাবি করছেন তিনি।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাবিননামায় রাজধানীর খিলগাঁও থানাধীন মেরাদিয়া এলাকার যে ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে সেখানে নিকাহ রেজিস্ট্রি তো দূরের কথা এ নামে কোনো কাজী অফিসই নেই। আগেও ছিল না কোনো অফিস। এছাড়া কাবিননামায় যে কাজীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে তিনি মেরাদিয়া এলাকার কাজী নন। গোড়ান এলাকার কাজী তিনি।খিলগাঁওয়ের মেরাদিয়া ২০/বি এই ঠিকানায় কখনো কোনো কাজীর অফিস ছিল না বলে জাগো নিউজকে জানান কাজী মো. আনোয়ার হোসেন। অথচ এই ঠিকানা উল্লেখ করে ৫৬ নম্বর ভলিউমে কাজী মো. আনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত কাবিননামা (বিবাহ নিবন্ধন) প্রকাশ করা হয়েছে। আনোয়ার হোসেনের অফিসের ঠিকানা ৬৫ উত্তর গোড়ান। শাখা অফিস বি-৭৫, দক্ষিণ বনশ্রী।কাজী মো. আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, আমরা প্রতি বছর এক নম্বর ভলিউম থেকে কাবিন (বিবাহ নিবন্ধন) শুরু করি। এক ভলিউমে একশ বিয়ের রেজিস্ট্রি করা হয়। এই এলাকার একজন প্রধান কাজীর অফিসে বছরে সর্বোচ্চ ৬০০ থেকে ৭০০ বিয়ে হয়। সে অনুযায়ী ৭ নম্বর ভলিউম হওয়ার কথা। কাজী অফিসে ওই হিসেব অনুযায়ী দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ ভলিউম শেষ করে পর্যায়ক্রমে আরাফাত সানির কাবিনে (নিকাহ নামা) ৫৬ নম্বর ভলিউম রয়েছে। এখানে ৫৬ নম্বর মানে ৫৬শ। ২০১৪ সালে এত বিয়ের রেজিস্ট্রি হয়নি। তার মানে এই কাবিননামা সম্পূর্ণ ভুয়া।মেরাদিয়ার কাজী হাফেজ মাওলানা মো. ছলিম উল্যাহ খান জাগো নিউজকে জানান, আমার অফিসের ঠিকানা ছিল ২০/১ মেরাদিয়া। এই অফিসে আমরা একযুগের বেশি সময় ধরে আছি। কিন্তু ২০/বি এই ঠিকানায় আমাদের কোনো কাজী অফিস নেই। ২০১৪ সালেও ছিলো না। এমনকি সেখানে অন্য কোনো কাজীর অফিসও নেই। আমার অফিসে ২০১৪ সালের ভলিউম নম্বর ছিল ১০০ থেকে ১০৬। ৫৬ কীভাবে এলো? এটা ভুয়া। আমার হাতে এমন কাজ হতে পারে না।উল্লেখ্য, তথ্য-প্রযুক্তি আইনের মামলায় গ্রেফতার আরাফাত সানি বর্তমানে একদিনের রিমান্ডে। গতকাল রোববার তথ্য-প্রযুক্তি আইনে করা এক নারীর মামলায় আরাফাত সানিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, আরাফাত সানির সঙ্গে ওই তরুণীর ২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর বিয়ে হয়। গত বছরের ১২ জুন আরাফাত দুজনের কিছু ব্যক্তিগত ছবি ও ওই তরুণীর কিছু আপত্তিকর ছবি ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জারে পাঠান। ছবি পাঠিয়ে আরাফাত সানি ওই তরুণীকে হুমকি দেন। পরে আবার ২৫ নভেম্বর ওই তরুণীকে আপত্তিকর ছবি পাঠিয়ে হুমকি দেন আরাফাত সানি।বাংলাদেশ জাতীয় দলে বাঁ-হাতি স্পিনার সানির অভিষেক হয় ২০১৪ সালে। দেশের হয়ে সর্বশেষ তিনি খেলেছেন গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। তার আগে ২০১৫ সালের নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে দেশের হয়ে শেষ ওয়ানডে খেলেন তিনি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের কারণে তাসকিন আহমেদের সঙ্গে আরাফাত সানিকেও নিষিদ্ধ করে আইসিসি। এমএসএস/এফএইচ/এআরএস/এনএফ/আরআইপি

Advertisement