দেশজুড়ে

আলোহীন এক উপজেলায় সৌর বিদ্যুৎই ভরসা

পটুয়াখালীর বঙ্গোপসাগরের বুক চিরে জেগে ওঠা দ্বীপ রাঙ্গাবালী উপজেলা ঘোষণার পাঁচ বছরেও বিদ্যুৎ সংযোগ না পৌঁছানোর কারণে এখানকার দেড় লক্ষাধিক মানুষের ভরসা সৌর বিদ্যুৎ। অন্ধকার গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রা এই সৌর আলোতেই জ্বলছে।এই উপজেলায় বিদ্যুৎ না থাকায় স্বাভাবিক জীবন ধারায় তেমন প্রভাব না পড়লেও অর্থনৈতিক বিস্তারে প্রভাব ফেলছে। সরকার দ্রুত এই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেবে এমনটা প্রত্যাশা স্থানীয়দের।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা সদর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরের বুক চিরে জেগে ওঠা দ্বীপ রাঙ্গাবালী। এর উত্তরে আগুনমুখা, পশ্চিমে রামনাবাদ, পূর্বে চর কুকরী-মুকরী ও দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। এর আয়তন ৪৭০ দশমিক ১২ বর্গ কিলোমিটার। এখানে প্রায় দেড়লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে ২০১১ সালের ১৩ জুন রাঙ্গাবালী থানাকে উপজেলায় উন্নিত করার গেজেট প্রকাশিত হয়। এরই ধারবাহিগতায় ২০১২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে রাঙ্গাবালীকে উপজেলা হিসেবে ঘোষণা ও প্রশাসনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। তবে চারদিকে নদীবেষ্টিত থাকায় এ উপজেলা ঘোষণার প্রায় পাঁচ বছরেও বিদ্যুৎ পৌঁছেনি এখানে। এ কারণে উপজেলার দেড়লক্ষাধিক মানুষের ভরসা সৌর বিদ্যুৎ।প্রথম দিকে উপজেলায় ‘গ্রামীণ শক্তি’ নামের একটি সৌর সোলার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান যাত্রা শুরু করে। পর্যায়ক্রমে উপকূলীয় বিদ্যুতায়ন, রুরাল সার্ভিস, আশা, আভাসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান একইভাবে সেবা দিতে শুরু করে।রাঙ্গাবালীর বাহেরচর বন্দরের পাওয়ারটেক কম্পিউটারের মালিক মিঠু হাওলাদার বলেন, কম্পিউটার, ফটোকপিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম সোলারে বেশিক্ষণ চলে না। এ কারণে জেনারেটর দিয়ে এসব সরঞ্জাম চালাতে হয়। আর জেনারেটরে ব্যয় বহুল খরচ হয়। বাহেরচর রূপালী ব্যাংক শাখার ব্যবস্থাপক আব্দুল মান্নান বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় ব্যাংকের কম্পিউটারগুলো সৌর বিদ্যুতে চলে। কিন্তু এ বিদ্যুতে ঠিকমতো সার্ভিস দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।রাঙ্গাবালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান মামুন বলেন, বিচ্ছিন্ন এই দ্বীপ উপজেলায় রুপান্তর করেছে প্রধানমন্ত্রী। সরকার দ্রুত এ উপজেলায় বিদ্যুৎ দেবে এবং কর্মচাঞ্চল্য বেড়ে যাবে। এতে অর্থনৈকি অবস্থারও পরিবর্তন ঘটবে।এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী এনামুল কবির বলেন, সরকারি বিদ্যুৎ না থাকায় অফিসিয়াল কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সৌর বিদ্যুৎ দিয়ে অফিসের কম্পিউটার-প্রিন্টারসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ঠিক মতো ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না।উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এনামুুল ইসলাম লিটু বলেন, সম্ভাবনাময়ী এ উপজেলায় সরকারি বিদ্যুৎ আসা খুবই জরুরি। বিদ্যুৎ এখন উপজেলাবাসীর সময়ের দাবি। এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী উপজেলা অতিরিক্ত নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম সাদিকুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে ওজোপাডিকোর একটি প্রতিনিধিদল রাঙ্গাবালীর চরইমারশন ও চরহালিম ইকনোমিক সার্ভে করে গেছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে এই উপজেলা বিদ্যুতের আওতায় আসবে।মহিব্বুল্লাহ চৌধুরী/এএম/পিআর

Advertisement