জাতীয়

৫১ শতাংশ তামাকপণ্যে ছবিসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণী নেই

আইন বাস্তবায়নের ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও ৫১ শতাংশ তামাকপণ্যে ছবিসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণে শতভাগ কমপ্লায়েন্স অনুসরণ করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছে তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো। এক্ষেত্রে বিড়ির অবস্থা খুবই উদ্বেগজনক বলেও জানানো হয়।রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে তামাকবিরোধী সংগঠনসমূহের পক্ষে প্রজ্ঞা, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, ঢাকা আহছানিয়া মিশন, এসিডি, ইপসা এবং সীমান্তিক ‘তামাকপণ্যে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী বাস্তবায়ন বিষয়ক কমপ্লায়েন্স সার্ভে ফলাফল প্রকাশ ২০১৬’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন প্রজ্ঞার কো-অর্ডিনেটর হাসান শাহরিয়ার।প্রকাশিত গবেষণা ফলাফলে দেখা গেছে, বিড়িতে ১০০ শতাংশ (৬০টি), জর্দায় ৯৬ দশমিক ৪ শতাংশ (৪৫৬টি), গুল-এ ৭৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ (৪৪টি) এবং সিগারেটে ২০ দশমিক ৮৮ শতাংশ (১৮৫টি) ক্ষেত্রেই শতভাগ আইন মেনে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী বাস্তবায়ন করা হয়নি।এছাড়া ৯২ শতাংশ তামাকপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সচিত্র সতর্কবাণী মুদ্রণ সংক্রান্ত শতভাগ কমপ্লায়েন্স অনুসরণ না করেই তামাকপণ্য বিক্রয় করছে। ১৯ দশমিক ২ শতাংশ (৩৫০) তামাকপণ্যের প্যাকেটে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী নেই। গবেষণায় প্রাপ্ত ৪৪টি ব্রান্ডের সিগারেটের মধ্যে ৩৫টি এবং ১৭টি ব্রান্ডের বিড়ির মধ্যে ১২টি ব্রান্ডের বিড়ির প্যাকেট পূর্ববর্তী পর্বের ছবিসহ বাজারে পাওয়া গেছে।বিড়ির প্যাকেটে ‘শুধুমাত্র বাংলাদেশে বিক্রয়ের জন্য অনুমোদিত’ বিবৃতি মুদ্রণ হার শূন্য শতাংশ। ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যের ক্ষেত্রেও আইন প্রতিপালনের হার খুবই উদ্বেগজনক। ৪০ দশমিক ২ শতাংশ জর্দা কৌটায় এবং ২৩ দশমিক ৭ শতাংশ গুল কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী  পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে প্যাকেট বা কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর অবস্থান বিষয়ক চিত্র খুবই ভয়াবহ। ৯১ দশমিক ৭ শতাংশ বিড়ির প্যাকেট, ৮৫ দশমিক ২ শতাংশ জর্দা এবং ৪২ শতাংশ গুল কৌটায় সতর্কবাণী সঠিক স্থানে মুদ্রণ করা হয়নি।অনুষ্ঠানে সঠিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য বেশকিছু সুপারিশমালা দেয়া হয়। এগুলো হলো- তামাক কোম্পানিগুলোকে প্যাকেট বা কৌটার ৫০ ভাগ স্থান জুড়ে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণে বাধ্য করা; সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী যেন আইনসম্মত উপায়ে মুদ্রণ করা হয় তা নিশ্চিত করা; আইন লঙ্ঘনকারী তামাক কোম্পানিগুলোকে জরিমানা করা; ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীবিহীন এবং আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে এমন তামাকপণ্য ধ্বংস করা এবং বিক্রেতা ও সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা; ভ্রাম্যমাণ আদালত এর সংখ্যা বৃদ্ধি করা এবং আইন বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষকে আরও বেশি কার্যকর এবং সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণ সংক্রান্ত আইন সম্পর্কে তামাকপণ্য বিক্রেতাদের সচেতন করা।অনুষ্ঠানে অতিথিদের মধ্যে জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক, প্রতিষ্ঠাতা এবং সভাপতি, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ; মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, যুগ্ম-সচিব এবং সমন্বয়কারী, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়; ডা. মাহফুজুল হক ভুঁঞা, গ্রান্টস ম্যানেজার, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।এমইউএইচ/আরএস/জেআইএম

Advertisement