খেলাধুলা

জয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ

বৃষ্টিতে দিনের খেলা প্রায় ঘন্টাখানেক আগে শেষ হবার মিনিট দশেক পরই সংবাদ মাধ্যমের সাথে আনুষ্ঠানিক কথোপকোথন। এ স্বল্প সময়ে টিম মিটিং করা অসম্ভব। হয়তো ড্রেসিং রুমে ফিরে দুচার কথা হয়েছে। মোদ্দা কথা তৃতীয় দিনের লক্ষ্য-পরিকল্পনা স্থির হবার আগেই প্রেসের সামনে চলে আসা। তারপরও ড্রেসিং রুমের হালচাল ও টাইগারদের মানসিক অবস্থা কেমন? দ্বিতীয় দিন শেষে টাইগাররা কি ভাবছেন? তাসকিনের কথায় তা বোঝা গেল ভালো মতই। জানা হলো, ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে এখন জয়ের কথাই ভাবছে তামিমের দল। শেষ বিকেলে সাকিব আল হাসানের জাদুকরি বোলিং পুরো দলকে করেছে চাঙ্গা। একটা বিশ্বাস জন্মেছে, আজ যেখানে ম্যাচ শেষ হয়েছে, সেখান থেকেও প্রথম ইনিংসে লিড নেয়া সম্ভব। সেটা যত কম রানেই হোক না কেন। এখন লক্ষ্য দুুটি। প্রথমত আগামীকাল সকালে  ব্লাক ক্যাপ্সদের ২৮৯ রানের কমে বেঁধে ফেলা। চট জলদি বাকি তিন উইকেটের পতন ঘটানো। আর তারপর ব্যাটিংয়ে নেমে যত বড় সম্ভব একটা স্কোর গড়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়া। তাসকিন আহমেদের স্থির বিশ্বাস, যদি এই দুই লক্ষ্য পুরন হয়, তাহলে শেষ হাসি হাসাও সম্ভব। এই ফাস্ট বোলারের কথা, ‘আকাশ কুসুম কল্পনা নয়। আমরা বিশ্বাস করি আমাদের সামর্থ্য আছে এখানে টেস্ট জেতার।’ ইংলিশদের ঘরের মাঠে হারানোর প্রসঙ্গ টেনে তাসকিন বলেন, `যদিও সেটা নিজ মাটিতে চেনা-জানা ও অনুকূল কন্ডিশনে। তারপরও আমাদের নিজ সামর্থ্যের ওপর আমাদের পূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা আছে। আমরা যদি সবটুকু উজার করে চেস্টা করি এবং সামর্থ্যের যথাযথ প্রয়োগ ঘটাতে পারি তাহলে অবশ্যই আমাদের জেতার সামর্থ্য আছে।`বলার অপেক্ষা রাখে না, এ জেতার আশার জন্ম হয়েছে আজ পড়ন্ত বিকেলেই। দ্বিতীয় দিন খেলা যে জায়গায় বন্ধ হল, সেখানে দাঁড়িয়েই টাইগারদের মনে হচ্ছে কিছু একটা হয়ে যেতে পারে। খেলা শেষে তাসকিনের কাছে জানতে চাওয়া হলো, এখন আপনার কি মনে হয়? এখন কি নিজ দলের সম্ভাবনাকে এগিয়ে রাখবেন? তাসকিনের ছোট্ট জবাব, ‘আল্লাহর রহমতে ভালো। নিউজিল্যান্ডের স্কোর ২৬০/৭। আমরা এখনো এগিয়ে আছি। তবে এখনই খুশি হবার কিছু নেই। এখনো আমরা লিড নিতে পারিনি। কাল যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কিউই ইনিংসের লেজ মুড়িয়ে দিতে পারলে একটা পর্যায়ে যেতে পারবো। তারপরের কাজটা হবে ব্যাটসম্যানদের। ব্যাটসম্যানরা ভাল করতে পারলে আমরা ভালো টার্গেট দিতে পারবো। আমি চাই নিউজিল্যঅন্ডের সামনে একটা চ্যালেঞ্জিং টার্গেট ছুড়ে দিতে।’ তাসকিন যা বলেছেন, তাকে আকাশ কুসুম কল্পনা ভাবার কোনই কারণ নেই। হাত ফস্কে যে চারটি ক্যাচ বেড়িয়ে গেছে তা ধরতে পারলে আজই ব্লাক ক্যাপ্সদের অলঅঅউট করা সম্ভব ছিল। এবং অন্তত ৫০ রানের লিডও হয়ে যেত। এখনো ২৯ রানে লিড আছে। পড়ন্ত বিকেলে সাকিবের বল যেমন ঘুরেছে তাতে আশার জন্ম নিতেই পারে। সাকিব একা নন। তিন পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি, রুবেল হোসেন ও তাসকিন আহমেদও দারুণ বল করেছেন। অফস্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজও ভাল ব্যাকআপ করেছেন। সব মিলে বোলিংটা ভালো হয়েছে। সারা দিনের একবারের জন্য কিউইরা চেপে বসতে পারেননি। এ সফরে আজই প্রথম বাংলাদেশের বোলাররা নিউজিল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের উইকেটে থিতু হতে বেশি সময় দেননি। না হয় সেই ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি এবং ওয়েলিংটনে প্রথম টেস্টেও দেখা গেছে। একটা সময় বোলাররা ঠিক আঘাত হেনেছেন। কিন্তু তারপর আর ব্রেক থ্রু আনা সম্ভব হয়নি। কিউই ব্যাটসম্যানরা একটি বা দুটি বড় জুটি গড়েই পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছেন। আজ আর তেমনটা হয়নি। সকালে কামরুল ইসলাম রাব্বি শুরু করেন। ফিরিয়ে দেন ২ ও ১২ রানে জীবন পাওয়া ওপেনার রাভালকে ( ১৪)। একই ওভারের ঠিক দুই বল পর রাব্বি আরেক মূল্যবান ব্রেক থ্রু উপহার দেন। দারুণ ডেলিভারিতে অফস্টাম্পের বাইরে পরাস্ত হয়ে সাজঘরে পা বাড়াতে বাধ্য হন কিউই অধিনায়ক ও ব্যাটিংয়ের মূল স্তম্ভ কেন উইলিয়ামসন (২)।  রাব্বির পথে হাঁটেন তাসকিন। ফিরিয়ে দেন আরেক ওপেনার লাথামকে (৬৮)। এরপর অফস্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজের বলে আউট হন রস টেলর। আর শেষ বিকেলে সাকিব ম্যাজিক। মাত্র ৯ বলের ব্যবধানে আউট সান্টনার (২৯) , ওয়াটলিং(১) ও গ্র্যান্ডডোম (০)। আর তাতেই প্রথম ইনিংসে এগিয়ে যাবার সম্ভাবনা। এখন দেখা যাক কাল সকালের সেশনে সাকিবের নেতৃত্বে বোলাররা কি করেন?এআরবি/এমআর/পিআর

Advertisement