ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আগাম প্রচারণা থামাতে পারছে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। শুক্রবার রাতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম শেষ হলেও সম্ভাব্য প্রার্থীরা শুনছে না ইসির কথা। নির্বাচন কর্মকর্তাদের নজরদারি ফাঁকি দিয়ে কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। রোববার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার সাঁটিয়েছেন প্রার্থীরা। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন অনলাইনের মাধ্যমেও প্রচারণা চলছে। নির্বাচন আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী ভোটগ্রহণের জন্য নির্ধারিত তারিখের ২১ দিন আগ পর্যন্ত কোনো ধরনের প্রচারণা চালানো নিষিদ্ধ।আগাম প্রচারণার দায়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে এ পর্যন্ত ৭ সম্ভাব্য প্রার্থীকে শোকজ করেছেন বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মিহির সারওয়ার মোর্শেদ। আরও কয়েকজনকে শোকজ করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।এদিকে প্রার্থীদের আগাম প্রচারণা থেকে নিবৃত রাখতে ম্যাজিস্ট্রেট নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। নির্বাচন কর্মকর্তাদের পাশাপাশি ম্যাজিস্ট্রেটরা কাজ করবেন। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।রোববার মেয়র পদে আরও ১৩ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এ নিয়ে দুই সিটিতে মেয়র পদে মোট ১৫ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেন। রোববার পর্যন্ত ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে মেয়র পদে সর্বমোট ১০ জন, কাউন্সিলর পদে ১৬৭ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ২৮ জন এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে মেয়র পদে ৫ জন, কাউন্সিলর পদে ২৯১ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৪১ জন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।আগাম প্রচারণা অব্যাহত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিলবোর্ড অপসারণ করা হলেও পোস্টারিং থামানো যাচ্ছে না। একদিকে তুলে ফেললে অন্য দিকে নতুন করে লাগানো হচ্ছে। এজন্য কোনো উপায় না দেখে ম্যাজিস্ট্রেট নামানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।তিনি বলেন, আমি নিজেও ঢাকা সিটির বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে নতুন পোস্টার দেখেছি। আইন অমান্যকারীদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না বলেও জানান তিনি। ঢাকার দুই রিটার্নিং কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিলবোর্ড অপসারণ করা সম্ভব হলেও কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না পোস্টার ও ব্যানারের প্রচারণা। অলিতে-গলিতে সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের পোস্টারের ছড়াছড়ি দেখা যাচ্ছে। তফসিল ঘোষণার পর এ তৎপরতা আরও বেড়েছে।নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় সিটি কর্পোরেশন পোস্টার তুলে ফেলার কিছু সময় পর পরই আবার নতুন পোস্টার লাগানো হচ্ছে। তারা আরও বলেন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে তার পোস্টার অন্য প্রার্থীর সমর্থকরা লাগাচ্ছেন বলেও অভিযোগ আসছে। এতে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ছেন নির্বাচন কর্মকর্তারা। বিষয়টি ইসি সচিবালয়কে জানানো হয়েছে বলেও জানান তারা।ইসি সূত্রে জানা গেছে, এদিকে আগাম প্রচারণা বন্ধে পদক্ষেপ নিতে ঢাকার দুটি ও চট্টগ্রাম সিটিতে তিনজন করে মোট ১৮ জন মেজিস্ট্রেট নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। তারা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আগাম প্রচারণাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। নির্বাচনী আচরণ বিধি লংঘনে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। সেই সঙ্গে অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতাও রয়েছে ইসির।অন্যদিকে দক্ষিণ সিটির রিটার্নিং অফিসার মো. শাহ আলম বলেন, আইন সবার জন্যই সমান। আগাম প্রচারণাকারীদের কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। ৪৮ ঘণ্টা সময় শেষ হওয়ায় এখন যাদের পোস্টার-ব্যানার পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। সূত্র: যুগান্তরএআরএস/এমএস
Advertisement