অব্যবস্থাপনা আর ভোগান্তি দিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাক-ঢোল পিটিয়ে সমাবর্তনের আয়োজন করা হলেও গ্র্যাজুয়েটদের সার্টিফিকেট ছাড়াই ঘরে ফিরতে হয়েছে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা শাহনাজ খালেক। ইডেন মহিলা কলেজ থেকে অনার্স-মাস্টার্স করেছেন। দুটি কোর্সে তিনি প্রথম স্থান লাভ করেছেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ পাঁচ বছরের কোর্স দুটি শেষ করতে তার ৯ বছর লেগেছে।তিনি জানান, সেশনজটের কষ্ট লাঘব করতে অনেক আশায় বুক বেধে সমাবর্তনে অংশ নিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানেও চরম ভোন্তিতে পড়তে হয়। সমাবর্তনের নামে অর্ধ অনাহারে গ্র্যাজুয়েটদের বন্দিশালায় যেন আটক রাখা হয়। তিনি আরও বলেন, সমাবর্তনে অংশগ্রহণে তিন হাজার টাকা এন্ট্রি ফি নেয়া হলেও নিম্নমানের বাসি খাবার দেয়া হয়েছে। এমনকি সার্টিফিকেট গ্রহণের অঙ্গীকারনামায় সাক্ষর নিয়েও করা হয়েছে গ্র্যাজুয়েটদের সঙ্গে প্রতারণা।বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গাউন ফেরত নিতে ভুল না করলেও সার্টিফিকেট ছাড়াই বাসায় ফিরেছেন সবাই। তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুন অর রশিদ বলেন, সমাবর্তনে সার্টিফিকেট দিতে হবে এমন নিয়ম নেই। সবাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে গিয়ে আনতে হবে। শুধু শাহনাজ খালেক নয়, তার মত সাড়ে চার হাজার শিক্ষার্থী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে এসে চরম ভোগান্তিতে পড়ে। তাই নিজের ভাগ্যকে দোষ দিয়েই বাড়ি ফেরেন অংশগ্রহণকারীরা। এমন পরিস্থিতিতে অনেকে না বলেই পালিয়ে গেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, সংশ্লিষ্টরা সময় নিয়ে পরিকল্পিতভাবে করার পরামর্শ দিলেও উপাচার্যের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে তড়িঘড়ি করে সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ পর্যন্ত প্রায় তিন লাখ শিক্ষার্থী পাস করে গেলেও সমাবর্তনে নিবন্ধন করেন মাত্র সাড়ে চার হাজার শিক্ষার্থী ।এসব অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, কোনো অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি উপস্থিত থাকলে অনেক বাধ্যবাধকতা থাকে। এটাকে কেউ ভোগান্তি মনে করলে কিছু করার নেই। তবে সফলভাবে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। সমাবর্তনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান উপস্থিত ছিলেন।এমএইচএম/জেএইচ/এএইচ/জেআইএম
Advertisement