নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নূর হোসেনের এক সময়কার বান্ধবী জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা বলেছেন, নূর হোসেন আমার অনেক ক্ষতি করেছে। অনেক সময় সে আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতো। তবে আমিও তাকে ছাড়িনি। বাধ্য হয়ে আমিও তাকে অনেক অপমান করেছি। মঙ্গলবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ বাজারের সর্দারপাড়ায় তার নিজ বাসায় এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন।নীলা বলেন, সেভেন মার্ডারের সঙ্গে যারাই যুক্ত ছিল তাদের সবারই যেন সর্বোচ্চ সাজা হয় তা কামনা করেছি। কারণ সেভেন মার্ডারে শুধু সাতটি জীবনই নষ্ট হয়নি, নষ্ট হয়েছে সাতটি পরিবার। প্রশাসন ও রাজনৈতিক অঙ্গনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নিজের পরিচয় থাকার কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল তাকে অপহরণ করতে চেয়েছিল কিছু দুর্বৃত্ত। তাদের প্রশাসনের লোক বলেই চিনতে পেরেছেন। রাজনৈতিক নেতাদের বিষয়টি অবহিত করেছিলেন নীলা। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের গত নির্বাচনে (২২ ডিসেম্বর ২০১৬) নূর হোসেন তাকে অংশগ্রহণ করতে দেয়নি উল্লেখ করে নীলা বলেন, এ নিয়ে অনেক পত্রিকা অনেক কল্প কাহিনী লিখেছে। আলাপচারিতার একপর্যায়ে নীলা জানান, পৈতৃকসূত্রে ৪০ কোটি টাকা মূল্যের একটি জমি রয়েছে তাদের। ওই জমি নিয়ে এক ব্যক্তি সমস্যা করছে। স্থানীয় প্রশাসনের এক কর্মকর্তা ওই ব্যক্তিকে অর্থের বিনিময়ে সহযোগিতা করছে। জমিটা বিক্রি করতে পারলে বিদেশে পাড়ি জমানোর চিন্তা ভাবনা করছেন তিনি।উল্লেখ্য, নীলা নূর হোসেনের সহযোগিতায় ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর নাসিকের ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। এরপর থেকেই ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে আলোচনায় আসেন তিনি। সাত খুনের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২০১৪ সালের ১৮ মে নীলাকে আটক করে পুলিশ। তবে পরদিনই তাকে ছেড়ে দেয়। ২০১৩ সালের ২৬ অক্টোবর সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি থেকে জুয়েল নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় এক আসামি ১৬৪ ধারায় আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যার সঙ্গে নীলার জড়িত থাকার কথা বলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ২৬ মে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন নীলা। প্রায় আড়াই মাস কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পান তিনি।হোসাইন চিশতি সিপলু/আরএআর/পিআর
Advertisement