মালয়েশিয়ার শিল্প-কারখানায় অবৈধ শ্রমিকদের নিয়োগ দেয়া হলে মালিককে এক লাখ রিঙ্গিত জরিমানা করা হবে। এমন ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর দফতর বিষয়ক মন্ত্রী দাতুক পল লো সেং কুয়ান। সোমবার তিনি এ ঘোষণা দেন।লো সেং কুয়ান বলেন, দেশের নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামী মার্চে আইন সংশোধনের রিপোর্ট সংসদে পেশ করা হবে। রিপোর্টে কমিটি যে সব প্রস্তাব দিয়েছে তা থাকবে কি থাকবে না, সেটি সংসদ নির্ধারণ করবে। এদিকে, সরকারের পক্ষ থেকে নেয়া এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ী নেতারা।মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগের মহাপরিচালক দাতুক সেরি মুস্তাফার আলী বলেন, এটিকে একটি গুরুতর অপরাধ হিসাবে ধরা হচ্ছে। কারণ দেশে দিন দিন অবৈধ শ্রমিকের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। মালয়েশিয়ান ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান মাইকেল কাং বলেন, সরকারের এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে অনেক কোম্পানিই বন্ধ হয়ে যাবে। অনেকেই আর সাধারণভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন না। এমনিতেই মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। যদি এমনটা হয় তাহলে দেশের অর্থনীতি আরো খারাপ হয়ে যাবে।মুস্তাফার আলী জানিয়েছেন, ১ জানুয়ারি থেকে শ্রমিকদের বাৎসরিক লেভি ফি নিয়োগকারীকেই দিতে হবে। কোনোভাবেই তা শ্রমিকদের কাছ থেকে আদায় করা যাবে না। প্রসঙ্গত, মালয়েশিয়ার বেশিরভাগ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা অবৈধ শ্রমিকদের কাজে নেয়। কারণ বিদেশ থেকে শ্রমিকদের এদেশে নিয়ে আসা এবং ভিসা প্রসেসিং করা অনেক জটিল হয়ে পড়েছে। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে ৮০ ভাগ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা অবৈধ শ্রমিকদের কাজে নিয়েছে। সবাইকে বৈধ কাজের ভিসা দেয়া হবে তারও কোনো গ্যারান্টি নেই।মালয়েশিয়ায় এখনো সাড়ে ৬ লাখের বেশি অবৈধ শ্রমিক রয়েছেন বলে দাবি করে তিনি বলেন, বিদেশি শ্রমিক আনার একটি সহজ ও সঠিক পদ্ধতি থাকা দরকার। মালয়েশিয়ার মালয় ব্যবসায়ী ও শিল্প সমিতির সভাপতি মোহামেদ এজাত আমির বলেছেন, ইমিগ্রেশন বিভাগ এই প্রক্রিয়া চালু করলে শিল্প কারখানাগুলোতে ক্যাশ ফ্লো এবং ফাইন্যান্সিং-এ ভাঙন দেখা দেবে।গত বছরের ২৮ জুন দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, মালয়েশিয়া সরকারের দেয়া অবৈধ শ্রমিকদের রি-হায়ারিং প্রোগ্রামে যারা অংশ গ্রহণ করবে না এবং যে কোম্পানির মালিক অবৈধ শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দেশের কোথাও যদি অবৈধ শ্রমিকদের কাজে পাওয়া যায় তাহলে মালিকপক্ষ ও কর্মচারীকে ৫০ হাজার রিঙ্গিত জরিমানাসহ ১ বছরের জেল কার্যকর করা হবে।দেশটির আইন অনুযায়ী, কোনো মালিক যদি ৫ জনের বেশি অবৈধ শ্রমিক রাখেন তাহলে তাকে ৫ বছর জেল হবে। এমএমজেড/টিটিএন/এমএস
Advertisement