জানুয়ারিতে এসে কিন্তু শীত বেড়ে যাচ্ছে। শীত বাড়লেও ভ্রমণ তো আর থেমে থাকবে না। তবে শীতকালে ভ্রমণে একটু বেশি সতর্ক থাকতে হয়। প্রস্তুতিটাও হতে হবে সময়োপযোগী। ভ্রমণের আগে ভালো প্রস্তুতির ওপর নির্ভর করে ভ্রমণ কতটা আনন্দময় হবে। তাই শীতে আপনার ভ্রমণকে আরো আনন্দময় করতে ভ্রমণের প্রস্তুতি নিয়ে টিপস ও কিছু কৌশল জেনে নিন এখনই।স্থান নির্ধারণবেড়াতে যাওয়ার আগে প্রথমেই স্থানের কথা ভাবতে হবে। ভাবতে হবে শীতকালের জন্য ভ্রমণের কোন জায়গাগুলো উপযুক্ত। মনে রাখতে হবে কতদিনের জন্য যাবেন, বাজেট কত, কাদের নিয়ে যাবেন এবং যেখানে যাবেন সেখানের সুযোগ-সুবিধা কেমন।যাতায়াত মাধ্যমভ্রমণের জন্য পরিবহন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনি কোন বাহনে যাবেন এটা নির্বাচন করা জরুরি। তবে যে পরিবহনই ব্যবহার করেন না কেন, সব থেকে বেশি যে বিষয়টা লক্ষ্য রাখবেন, তা হলো আপনার জীবনের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা।ভ্রমণকালীন আবাসবেড়াতে গেলে কোথায় থাকবেন তার ওপর আপনার ভ্রমণের অনেক আনন্দ নির্ভর করে। আপনার বাজেট, ভ্রমণসঙ্গী কতজন, কেমন পরিবেশে থাকতে চান, নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন- এ বিষয়গুলো ভেবেই আবাসের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এক্ষেত্রে আগেই ঠিক করে যাওয়া ভালো। যদি তা না হয়, তাহলে খোঁজ-খবর নিয়ে যাওয়া উচিত।খোঁজ-খবরসেখানকার আবহাওয়া ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে খরব নিয়ে যান। পাশাপাশি সেখানকার জরুরি ফোন নম্বর এবং লোকেশন সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে রাখুন। যদি ওই এলাকায় পরিচিত কেউ থাকেন, তাহলে তার ফোন নম্বর নিয়ে যাবেন। স্থানীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিবেশ সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন।ব্যাগ প্যাকিংসঙ্গে কী কী নেবেন- তা নির্ভর করবে আপনি কোথায় বেড়াতে যাচ্ছেন, কতদিন থাকবেন তার ওপর। তবে যেখানেই যান না কেন, ব্যাগভর্তি জিনিস না নিয়ে দেখেশুনে দরকারি জিনিস নেয়াই উত্তম। প্রয়োজনীয় জিনিসের একটা তালিকা করুন। তালিকা ধরে টিক চিহ্ন দিয়ে একটা একটা জিনিস ব্যাগে ঢুকান। এতে দরকারি কোনো কিছু ভুলে ফেলে যাবেন না।পোশাকশীতকালে গাঢ় রঙের মোটা তাপনিরোধক কাপড়ের তৈরি জামা পরুন। তবে খেয়াল রাখবেন শীতের কাপড়ের ওজন যত সম্ভব যেন কম হয়। তা না হলে আপনার ব্যাকপ্যাক ভারি হবে শীতের পোশাকে। ঠান্ডা থেকে বাঁচার জন্য সঙ্গে মাফলার, মোজা, গ্লাভস, হুডসহ কাপড় পরতে পারেন। জুতার ব্যাপারে বাড়তি মনোযোগ দিবেন। আরামদায়ক কেডস হলে ভালো হয়। মেয়েরা হিল জুতা ব্যবহার না করলেই ভালো হয়।ওষুধশীতে সর্দি-জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি, নাকের প্রদাহ, চোখ ওঠা, ডায়রিয়া, আমাশয়, নিউমোনিয়া প্রভৃতি রোগ হয়ে থাকে। সম্ভব হলে প্রয়োজন মত ওষুধ রাখুন সঙ্গে। জ্বর, পেট খারাপ, অ্যাসিডিটি, বমি, মাথা ধরার ওষুধও নিয়ে নিন। আরো নিন ব্যান্ড এইড, অ্যান্টিসেপটিক, পরিমাণমতো তুলা ও গজ। প্রেসার, ডায়াবেটিস বা অন্য কোনো সমস্যা থাকলে প্রেসক্রিপশনের প্রয়োজনীয় ওষুধ পর্যাপ্ত পরিমাণে নিয়ে নিন। সানপ্রোটেক্ট লোশন ও ক্রিম সূর্যের আলোতে বের হওয়ার আধাঘণ্টা আগে ব্যবহার করুন।খাবারশীতকালে ভ্রমণে গেলে সময়োপযোগী খাবার নিয়ে যাবেন। ভ্রমণের খাবার-দাবারের ব্যাপারে প্রথমে যে জিনিসটি সকলের মাথায় রাখা উচিত তা হল হাইজেনিক ফ্যাক্টর। আপনি যে খাবারটি খাচ্ছেন তা স্বাস্থ্যসম্মত কিনা তা যাচাই করে নেবেন। সঙ্গে কিছু শুকনো খাবার রাখতে পারেন। খাবারের তালিকায় বেশি তেলে ভাজা খাবারের পরিবর্তে স্বাভাবিক খাবার রাখুন।সানস্ক্রিনশীতকালে ঠান্ডা তো আছেই, তাই বলে সানস্ক্রিন নিতে ভুল করবেন না। শীতের রোদও ত্বকের সমান ক্ষতি করে। সানস্ক্রিন শীতেও নিতে হবে।সতর্কতাশীতে সন্ধ্যার পর অথবা বেশি রাত পর্যন্ত হোটেলের বাইরে অবস্থান করবেন না। বিশেষ করে পরিবার নিয়ে ভ্রমণ করতে গেলে। অবশ্যই শিশুদের দিকে লক্ষ্য রাখবেন।এবার ভ্রমণের প্রস্তুতি শেষ। এই শীতে ঘুরে আসুন আপনার পছন্দের জায়গা। এই ভ্রমণ প্রস্তুতি আপনার ভ্রমণকে আনন্দময় করে তুলুক।এসইউ/পিআর
Advertisement