ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে রীতিমত বাংলাদেশকে নাকানি চুবানি খাইয়েছে নিউজিল্যান্ড। প্রতিকূল পরিবেশের দেশটিতে অনভ্যস্ততার জন্য পেরে ওঠেনি তারা। তবে ধীরে ধীরে নিজেদের খোলস থেকে বেরিয়ে আসছে টাইগাররা। আর তার প্রতিফলন দেখা গেল ওয়েলিংটন টেস্টের দ্বিতীয় দিনে। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ও অধিনায়ক মুশফিকুর রহীমের ব্যাটে রেকর্ডময় এক দিন পার করেছে বাংলাদেশ।তিন হাজারি ক্লাবে সাকিববাংলাদেশের হয়ে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে তিন হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন সাকিব। ৭১ রান দূরে থেকে আগের দিন ওয়েলিংটনে নেমেছিলেন সাকিব। এদিন স্যান্টনারের বলে সিঙ্গেল নিয়ে পৌঁছে যান তিন হাজারি ক্লাবে।বাশারকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানএকই দিনে সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশারকেও ছাড়িয়ে যান সাকিব। বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করার রেকর্ড গড়তে দরকার ছিল ৯৮ রানের। নেইল ওয়েগনারের বলে দুই রান নিয়ে বাশারকে ছাড়িয়ে যান বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার।বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের জুটি২০১৫ সালে খুলনা টেস্টে তামিম ইকবালের ডাবল সেঞ্চুরি ও ইমরুল কায়েসের সেঞ্চুরিতে ওপেনিং জুটিতে ৩১২ রান করেছিল বাংলাদেশ। এতদিন এটাই ছিল বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের জুটি। এদিন নিজের সে রেকর্ড ভেঙ্গে নতুন রেকর্ড করেন মুশফিক। তবে এবার সঙ্গী হিসেবে পান সাকিবকে। পঞ্চম উইকেটে ৩৫৯ রানের দারুণ জুটি গড়ে এ রেকর্ড করেন এ দুই ব্যাটসম্যান। এর আগে পঞ্চম উইকেটে ২০১৩ সালে গল টেস্টে শ্রীলংকার বিপক্ষে ২৬৭ রানের জুটি গড়েছিলেন মুশফিকুর রহীম ও মোহাম্মদ আশরাফুল।নিউজিল্যান্ডের মাটিতে পঞ্চম উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটিসাকিব ও মুশফিকের করা ৩৫৯ রানের জুটিটি শুধু বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ নয়; কিউইদের বিপক্ষে গড়া সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড। এর আগে পঞ্চম উইকেট জুটিতে পাকিস্তানের আসিফ ইকবাল ও মুশতাক মোহাম্মদের রেকর্ড ছিল ৩৫০ রানের জুটি। ৪৪ বছরের পুরনো এই রেকর্ডটি ভেঙে দিয়েছেন সাকিব-মুশফিক।পঞ্চম উইকেটে টেস্ট ক্রিকেটের চতুর্থ সর্বোচ্চ রানের জুটিসাকিব ও মুশফিকের জুটিটি শুধু বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ও কিউইদের বিপক্ষে গড়া সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ডের পাশাপাশি টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের চতুর্থ সর্বোচ্চ। ১৯৪৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার ডন ব্র্যাডম্যান ও বার্নেসের গড়া ৪০৫ রানের রেকর্ডটিই পঞ্চম উইকেটে সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড।বাংলাদেশের পক্ষে তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরিক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন সাকিব। মুশফিক আর তামিমের পর তৃতীয় বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেন এ অলরাউন্ডার। গোল টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিটি করেছিলেন মুশফিকুর রহীম।টেস্টে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানবাংলাদেশের হয়ে এতদিন সর্বোচ্চ রানের মালিক ছিলেন তামিম ইকবাল। ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে খুলনায় ২০৬ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। শুক্রবার সে রেকর্ড ভেঙ্গে ২১৭ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন সাকিব। ২৭৬ বল মোকাবেলা করে ৩১টি বাউন্ডারিতে সাজান নিজের ইনিংস।বাংলাদেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ রান৭ উইকেটে ৫৪২। বাংলাদেশের পক্ষে চতুর্থ সর্বোচ্চ স্কোর। আর দেশের বাইরেও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর। ২০১৩ সালে গল টেস্টে সর্বোচ্চ ৬৩৮ রান করেছিল বাংলাদেশ। এছাড়া ২০১২ সালে মিরপুরে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে ৫৫৬ রান করে টাইগাররা। আর ২০১৫ সালে খুলনায় তামিমের ডাবল সেঞ্চুরিতে ৬ উইকেটে ৫৫৫ রান করে ইনিংস ঘোষণা করেছিল মুশফিকবাহিনী।আরটি/এমআর/এমএস
Advertisement