অনুষ্ঠানের বেশিরভাগ সময়জুড়েই বক্তব্য দিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দুই মন্ত্রী। এর মধ্যে উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় নিলেন সবচেয়ে বেশি সময়। ক্রীড়াঙ্গনের কোনো অনুষ্ঠানে একই সঙ্গে দুই মন্ত্রীকে খুব কমই দেখা যায়। বৃহস্পতিবার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ টাওয়ার অডিটরিয়ামে নারী ফুটবলারদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশের খেলাধুলার দুই অভিভাবকই। স্বাভাবিকভাবেই সবার প্রত্যাশা ছিল সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে রানার্সআপ হওয়া মেয়েদের জন্য ভালো কিছু উপহারই অপেক্ষা করছে। না, মুখে প্রশংসা ছাড়া মেয়েদের অনুপ্রাণিত করার মতো আর কোনো ঘোষণাই আসলো না মন্ত্রীদের কাছ থেকে। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষক ওয়ালটনের দেয়া একটি করে ৩২ ইঞ্চি এলইডি টেলিভিশন নিয়ে ঘরে ফিরে গেলেন নারী ফুটবল দল। বরাবরের মতো ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাছে উপেক্ষিতই থাকলেন সাবিনারা।অনুষ্ঠান শেষে এ নিয়ে প্রশ্নবাণে জর্জড়িত হলেন প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার। ক্রিকেটে জয় এলেই পুরস্কার দেন, কিন্তু ফুটবলে মেয়েদের এত বড় সাফল্যের পর কোনো পুরস্কার দেয়া হচ্ছে না। আগামী পুরস্কার দেয়ার কিংবা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনো সংবর্ধনা দেয়ার পরিকল্পনা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, ‘এ নিয়ে এখনই কিছু বলতে পারছি না। আর ক্রিকেটে পুরস্কার দেয়া হয়, কারণ তারা একটা পর্যায়ে পৌঁছছে। তাদের ধারাবাহিকতা আছে। ফুটবল ওই পর্যায়ে পৌঁছলে দেয়া হবে। মেয়েরা এখন ভালো করছে। এ ধারাবাহিকতা থাকলে আমরাও তাদের পুরস্কার দেবো।’
Advertisement
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার বলেছেন, ‘এ মেয়েরা ভারতের মাটিতে যে সাফল্য অর্জন করেছে তাতে দেশের মানুষের, জাতির ও আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ উজ্জ্বল করেছেন। বাঙ্গালি স্বপ্ন দেখতে জানে, স্বপ্ন পূরণ করতে জানে। পৃথিবীতে আমাদের সম্মান কারো চেয়ে কম নয়। আমরা গর্বিত জাতি। মেয়েরা অত্যন্ত ভালো খেলেছে। আমি মনে করি, তারা রানার্সআপ নয়, চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। মাঠে সিদ্ধান্ত সঠিক হলে আমরাই চ্যাম্পিয়ন হতাম।’ফুটবলকে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা উল্লেখ করে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে দর্শক হয় না বলে মনে করলে চলবে না যে, ফুটবলের জনপ্রিয়তা কমে গেছে। গ্রাম-বাঙলায় এখনো সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ফুটবল। দেশের বেশিরভাগ মানুষ ফুটবল ভালোবাসে। সেই ফুটবল নিয়ে কোনো হতাশা কাজ করলে হবে না। ফুটবলকে তার স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। জাতির আকাঙ্ক্ষা- ফুটবল তার যোগ্য জায়গায় থাকুক। সুতরাং আমরা যারা দায়িত্ব রয়েছি তাদের সবার দায়িত্ব জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে থেকে ১৬ জন ফুটবলার বের করে আনতে হবে।’যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় বলেছেন, ‘ফুটবলের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। ভুটানের বিপক্ষে হেরেছে সেটাই বলছেন সবাই। আমাদের মেয়েরা যে সাফল্য আনছে তা বলছে না। এ মেয়েরা দুর্দান্ত ফুটবল খেলেছে। এমন ফুটবল বাংলাদেশের মানুষ আগে দেখেনি। কিন্তু এক শ্রেণির মানুষের নেতিবাচক মানসিকতার কারণে আমাদের বিপর্যস্ত করে তুলছে।’আরআই/এনইউ/আইএইচএস