জাতীয়

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পে কাটা হচ্ছে হাজারেরও বেশি গাছ

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের (উড়াল সড়ক) নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এই প্রকল্পের কাজের জন্য শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বনানী পর্যন্ত প্রায় ৭ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার সড়কে হাজারেরও বেশি গাছ কাটা পড়ছে। ইতোমধ্যে প্রায় পাঁচ শতাধিক গাছ কাটা হয়েছে।বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাকলী মোড় থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কের ডান পাশের প্রায় সাড়ে সাত কিলোমিটার সড়ক জুড়ে বিভিন্ন চারাগাছের বাগান রয়েছে। বাগানের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের বড় গাছ। প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার কারণে এসব গাছ কাটতে হচ্ছে। শ্রমিকরা করাত-কুড়ালসহ বিভিন্ন যন্ত্র বসিয়ে পুরো বাগানের গাছ কাটা শুরু করেছেন।সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন এ জমিতে কাকলী মোডের পাশের বিশাল অংশ পুনম গার্ডেন নামে একটি প্রতিষ্ঠান দখল করে ফুলসহ বিভিন্ন প্রজাতির চারা গাছ রোপন করেছে। তবে উড়াল সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় বাগানটির বেশ কিছু গাছ কাটতে হয়েছে। বাগান মালিক তার গাছগুলো সরিয়ে নিচ্ছেন।নগরবাসী বলছেন, রাজধানীতে গাছ-গাছালির অভাব, তারপর আবার গাছ কাটা হচ্ছে। তবে উন্নয়ন কাজের জন্য যেহেতু গাছ কাটা হচ্ছে, তাই যে পরিমাণ গাছ কাটা হচ্ছে তার সমপরিমাণের চেয়ে বেশি গাছ রোপন করতে হবে। কিন্তু তা করা হচ্ছে না। এজন্য তারা অন্যত্র হলেও এই ক্ষতিপূরণের জন্য গাছ লাগানোর দাবি জানিয়েছেন।বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে নির্মিত প্রকল্পটির জন্য এরই মধ্যে ২০৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির পরিমাণ ২৯ একর। বাকি ১৭৬ একর সরকারি জমি। তবে অধিগ্রহণ করা অধিকাংশ জমি বেদখল থেকে উদ্ধার করা শুরু হয়েছে। কাকলী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কেরও বিশাল অংশ দখল করে প্রভাবশালীরা বহুতল ভবন নির্মাণ করেছেন। অবৈধ সেসব ভবনও ভেঙে ফেলা হচ্ছে। ইতোমধ্যে একটি ভবন ভাঙাও হয়েছে।যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মো. আবু নাছের জাগো নিউজকে বলেন, বিমানবন্দর এলাকা থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের (উড়াল সড়ক) নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। কাকলী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত অংশ বেশকিছু ভবন ভাঙতে ও গাছ কাটতে হচ্ছে।সেতু বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কুড়িল, মহাখালী, তেজগাঁও হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য হবে ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। তবে ৩১টি র‌্যাম্প ও সংযোগ সড়কসহ এর মোট দৈর্ঘ্য হবে ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।পরিকল্পনা অনুযায়ী, এ প্রকল্প তিন ধাপে বাস্তবায়িত হবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (উড়াল সড়ক)। প্রথম ধাপে বিমানবন্দর থেকে বনানী পর্যন্ত ৭ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার, দ্বিতীয় পর্যায়ে বনানী থেকে মগবাজার পর্যন্ত ৫ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার এবং শেষ পর্যায়ে মগবাজার থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত ৬ দশমিক ৪৩ কিলোমিটা নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটিরটির নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছে থাইল্যান্ডের নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ইতাল-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড।সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) এই উড়াল সড়ক নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি ১৮ লাখ টাকা।  যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের অধীনে বাস্তবায়নাধীন এই প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনসহ অন্যান্য খাতে ব্যয় হবে ২ হাজার ৪১৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।এমএসএস/এআরএস/জেআইএম

Advertisement