অর্থনীতি

উন্নয়ন মেলায় নজর কেড়েছে সেনা ও নৌবাহিনীর স্টল

দেশের ৬৪টি জেলা এবং ৪৯০টি উপজেলায় একযোগে চলছে তিন দিনব্যাপী ‘উন্নয়ন মেলা-২০১৭’। রাজধানীতে এ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে শিল্পকলা একাডেমিতে। মেলায় একটি বাড়ি একটি খামার, কমিউনিটি ক্লিনিক, নারীর ক্ষমতায়ন, সবার জন্য বাসস্থান, শিক্ষাসহায়তা, ডিজিটাল বাংলাদেশ, পরিবেশ সুরক্ষা, বিনিয়োগ বিকাশ, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎসহ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম তুলে ধরা হচ্ছে।মেলার মূল উদ্দেশ্য দেশের চলমান উন্নয়ন সাফল্যকে জনগণের সামনে তুলে ধরে সরকারের উন্নয়নকাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা। পাশাপাশি সরকারের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা ও সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে সরকারের সাফল্য প্রচার এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা।মেলার শেষ দিন বুধবার শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, মেলায় সব মন্ত্রণালয়, সেনাবাহিনী, নৌ-বাহিনী, বিমান বাহিনী, পুলিশ, আনসার, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরসহ বিভিন্ন বিভাগ ও অধিদফতর পৃথক স্টল স্থাপন করেছে।পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, মহাসড়কের উন্নয়ন, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, দারিদ্র্য বিমোচন, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, পরিবেশ উন্নয়ন, প্রাথমিক শিক্ষার অর্জন, কৃষি উন্নয়নসহ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরা হচ্ছে শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে স্থাপন করা এসব স্টল থেকে। মেলা প্রাঙ্গণের দক্ষিণ দিকে রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও নৌ-বাহিনীর স্টল। বাহিনী দুটির দৃষ্টিনন্দন স্টল দুটিই মেলার দর্শনার্থীদের সব থেকে বেশি আকৃষ্ট করছে।সেনাবাহিনীর স্টলে শোভা পাচ্ছে কুড়িল ফ্লাইওভার, হাতিরঝিল প্রকল্প, চীনের তৈরি ১২২ মিলিমিটির রকেট লঞ্চিং ভেহিকল, মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) প্রতিকৃতিসহ বিভিন্ন উন্নয়ন চিত্র। নৌ-বাহিনীর স্টলে বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে প্রদর্শন করা হচ্ছে সাবমেরিন ও যুদ্ধ জাহাজের প্রতিকৃতি, বাংলাদেশের জলসীমা, পানি পথে নৌ-বাহিনীর চলাচলের মানচিত্রসহ বিভিন্ন উন্নয়ন এবং নৌ-বাহিনীর ব্যবহৃত সরাঞ্জম।স্টলে আসা দর্শনার্থীদের দেয়া হচ্ছে নানা তথ্য। কীভাবে নৌ-বাহিনীর সদস্যরা পানি পথে চলাচল করেন। কিভাবে দিক ঠিক করেন। দর্শনার্থীদের এ ধরণের নানা প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন নৌ-বাহিনীর সদস্যরা।নৌ-বাহিনীর সিনিয়র চিফ পেটি অফিসার মো. হারুন উর রশীদ জাগো নিউজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী যেসব উন্নয়ন করেছে তা মেলার মাধ্যমে তুল ধরা হচ্ছে। বিভিন্ন উন্নয়নের অংশ হিসেবে ২০১৬ সালে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীতে ৩টি যুদ্ধজাহাজ এবং ২টি সাবমেরিন যুক্ত হয়েছে। এরমধ্যে একটি যুদ্ধজাহাজ এবং একটি সাবমেরিনের প্রতিকৃতি মেলার দর্শনার্থীদের জন্য প্রদর্শন করা হচ্ছে।মেলার দর্শনার্থীর বিষয়ে তিনি বলেন, মেলায় কোনো কিছু বিক্রয় করা হচ্ছে না। শুধু বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরা হচ্ছে। এরপরও প্রতিদিন মেলায় প্রচুর দর্শানার্থীর সমাগম হচ্ছে। দর্শনার্থীদের বড় অংশই শিক্ষার্থী। তারা মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে ঘুরে দেখছেন এবং জ্ঞান অর্জন করছে।মেলায় শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন গ্রাম্য খেলার প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে তেজগাঁও সরকারি বিদ্যালয়। প্রতিযোগিতার হাঁড়ি ভাঙা খেলায় অংশ নিয়ে পুরস্কার জিতেন বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান সানজিদা।সানজিদা বলেন, এমন মেলায় এর আগে কখনও আসিনি। সহপাঠিদের সঙ্গে মেলায় এসে খুব ভালো লাগছে। মেলায় সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে সেনাবাহিনী ও নৌ-বাহিনীর স্টল। তিনি আরও বলেন, নৌ-বাহিনীর স্টলে গিয়ে জানতে পেরেছি কিভাবে তারা নদী পথে চলাচল করেন। কিভাবে চাঁদ, তারা, নক্ষত্র দেখে জানতে পারেন কোথায় আছেন এবং কোথায় যাবেন। মানচিত্রের মাধ্যমে দেখানো হচ্ছে বাংলাদেশের জলসীমাও।বংশালের মিল্লাত উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অনিক মেলায় ভলান্টিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সে বলেন, ভলান্টিয়ারের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি মেলা প্রাঙ্গণের স্টলও ঘুরে ঘুরে দেখছি। আমার খুব ভালো লাগছে এমন একটি মেলায় ভলান্টিয়ারের দায়িত্ব পালন করতে পেরে। ‘মেলার সবকিছুই ভালো লাগছে। তবে সব থেকে বেশি ভালো লাগছে সেনাবাহিনীর স্টল। সেখানে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন সরাঞ্জমসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হচ্ছে। আমার সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার খুব সখ।’ -বলেন অনিক।এমএএস/আরএস/জেআইএম

Advertisement