খেলাধুলা

সৌম্য না মিরাজ?

ঘাস কাটা হয়েছে। আরও হবে। তারপরও যতটুকু ঘাস থাকবে, সেটাও অনেক। ওদিকে শুধু উইকেটই নয় আবহাওয়াও পেসারদের পক্ষ নিয়েছে। এমনিতেই ওয়েলিংটন ‘বাতাসের শহর।’ নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে ‘উইন্ডি শহর ধরা হয় রাজধানীকে। তার সঙ্গে বুধবার সকাল থেকে যোগ হয়েছে প্রচন্ড বাতাস। আকাশে মেঘের ঘনঘটা। বৃষ্টি না নামলেও যে কোন সময় নামতে পারে। মোদ্দা কথা, ‘ টিপিক্যাল নিউজিল্যান্ড কন্ডিশন।’ ঠাণ্ডা কনকনে বাতাস। আর সবুজ ঘাসের উইকেট এক কথায় আদর্শ সীমিং কন্ডিশন। তাই বেসিন রিজার্ভে টিম কম্বিনেশন, লক্ষ্য-পরিকল্পনা স্থির এবং একাদশ সাজানো, সব কিছুতেই ঘুরে ফিরে চলে আসছে ‘উইকেট।’ বাংলাদেশের প্র্যাকটিস ও দল সাজানোর ওপরও উইকেটের প্রভাব যথেষ্ঠ। শেরে বাংলায় যে প্র্যাকটিস হতো নামমাত্র, সেই কাজগুলো বেসিন রিজার্ভে হচ্ছে বেশি। সীমিং কন্ডিশন। পেস বোলাররা বাড়তি সুবিধা পাবেন। তাদের প্রচন্ড গতি, বাড়তি বাউন্স ও সুইংয়ে ব্যাটসম্যানের ব্যাটের বাইরের কোনা ছুঁয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ উঠবে বেশি, এমন চিন্তায় উইকেট কীপার, স্লিপ ও গালি ফিল্ডারদের প্র্যাকটিস চলছে অবিরাম। গতকাল প্র্যাকটিসের একটা বড় অংশ জুড়ে কীপার মুশফিক, সৌম্য, ইমরুল, সাব্বির ও মেহেদী হাসান মিরাজকে ঐ সব পজিসনে দাড় করিয়ে ক্যাচিং প্র্যাকটিস করানো হলো। আজও চললো সে পালা। এদিকে বাংলাদেশের লাইন আপ চূড়ান্ত করা নিয়েও চলছে নানা হিসেবে নিকেশ। ১১ জন ঠিক করতে গিয়েও বার বার উইকেটের কথাই ভাবছে টিম ম্যানেজমেন্ট। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু আর ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান আকরাম খান সেই সকাল থেকেই প্র্যাকটিস দেখতে মাঠে। জাতীয় দলের এই দুই সাবেক অধিনায়কই উইকেট ও একাদশ নিয়ে জাগো নিউজের সাথে কথা বলেন। তাদের কথায় একটা বিষয় পরিষ্কার, পেস বান্ধব পিচে অন্তত তিন পেসার খেলানো নিশ্চিত। এখন আর একজন পেসারের অন্তর্ভুক্তির চিন্তাও চলছে। বহরে যে চারজন পেসার ( রুবেল হোসেন, তাসকিন আহমেদ, শুভাশিস রায় ও কামরুল ইসলাম রাব্বি) আছেন তাদের কেউই ব্যাট হাতে তেমন সাবলীল নন। সীমিং কন্ডিশনে মাথা তুলে দাঁড়াবেন, এমন সামর্থ্যেও আছে রাজ্যের ঘাটতি। এখন চার পেসার নিয়ে মাঠে নামার অর্থ ব্যাটিং শক্তি কমে যাওয়া। মনে রাখতে হবে, এটা ঘরের মাঠ নয় যে, বাংলাদেশ জিততে মাঠে নামবে। বেসিন রিজার্ভে টাইগারদের মূল লক্ষ্য ‘ড্র।’ প্রতিটি সেশনে ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলে ম্যাচকে পঞ্চম দিনে নিয়ে যাওয়া এবং অমিমাংসিত রাখার চিন্তা ভাবনাই চলছে।সেই কাজ করতে হলে শুধু পেস বোলিং ডিপার্টমেন্টকে সমৃদ্ধ করলেই চলবে না। ব্যাটিং লাইন আপকেও রাখতে হবে সমৃদ্ধ। তাই চার নম্বর পেসার হিসেবে সৌম্য সরকারের কথা ভাবা হচ্ছে জোরে সোরে। সৌম্য ফর্মে আছেন। টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ দুই ম্যাচে অনায়াসে কিউই ফাষ্টবোলারদের মোকাবিলা করেছেন। কাজেই তাকে খেলানোর অর্থ ব্যাটিং দৈর্ঘ্য বেড়ে যাওয়া। এদিকে এই মাঠের শেষ দুই টেস্টের ট্র্যাক রেকর্ড আবার অন্য কথা বলছে। বেসিন রিজার্ভে শেষ টেস্টে বল হাতে রাজত্ব করেছেন অস্ট্রেলিয়ান অফস্পিনার ন্যাথান লায়ন। কাজেই ইংলিশদের নাস্তানাবুদ করা মেহেদী হাসান মিরাজও তাই হিসেবের বাইরে নেই। তার কথাও ভাবনায় আছে। এ রিপোর্ট লিখার সময় প্র্যাকটিস শেষে টিম মিটিং চলছিল। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন জানালেন, টিম মিটিংয়েই ১১ জন চূড়ান্ত করা হবে। তবে ৯ জনকে অটোমেটিক চয়েজ ধরে নেয়ার ইঙ্গিত মিনহাজুলের। টিম কম্বিনেশনের নিশ্চিত ফর্মুলাটা এমন তিন পেসার। সাত ব্যাটসম্যান। একমাত্র স্পেশালিষ্ট স্পিনার সাকিব আল হাসান।  এখন পেসারদের মধ্যেও কোন তিনজনকে খেলানো হবে , তা নিয়ে চলছে আলোচনা। পর্যালোচনা। মিনহাজুল আবেদিন ও আকরাম খানের কথা শুনে মনে হলো তাসকিন আহমেদ ও শুভাশিসের খেলা নিশ্চিত। এখন থার্ড সিমার হিসেবে কে খেলবেন ? রুবেল হোসেন নাকি কামরুল ইসলাম রাব্বি? তা নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে আালোচনা চলছে। তবে জানা গেছে রাব্বি এগিয়ে। সুইং করানোর ক্ষমতা বেশি এবং লম্বা স্পেলে বল করতে পারেন, এই চিন্তায় রুবেলের বদলে রাব্বিকে খেলানোর কথাই ভাবা হচ্ছে। তার মানে বেসিন রিজার্ভে অভিষেক হতে যাচ্ছে দুই তরুণ তাসকিন আহমেদ ও শুভাশিস রয়ের। এখন যে বিষয়টা চূড়ান্ত হয়নি, তাহলো সাকিবের সঙ্গে বাড়তি স্পিনার হিসেবে কি মেহেদী হাসান মিরাজকে খেলানো হবে? নাকি সৌম্যকে আট নম্বর ব্যাটসম্যান কাম ফোর্থ সিমার হিসেবে নামানো হবে, সেটাই এখন দেখার। সম্ভাব্য প্রথম একাদশতামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান রুম্মন, সৌম্য সরকার / মেহেদী হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, শুভাশিস রয় ও কামরুল ইসলাম রাব্বি। এআরবি/এমআর/পিআর

Advertisement