ঘুরেফিরে দুটি নামই আসছে। কান ঝালাপালা হওয়ার মতোই! ফুটবল দুনিয়া এখন একঘেয়েমিতে ভুগছে! বর্ষসেরা ফুটবলারের জায়গাটা যেন নিজেদের সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছেন তারা। ভোগদখল অন্য কারো হাতে দিচ্ছেন না! তারা আর কেউ নন, গ্রহের অন্যতম দুই সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। এবারও ফিফার বর্ষসেরা হওয়ার দৌড়ে সবার আগে চলে আসছে এই দুটি নাম। তাই অনেকটা ঢাকা পড়ে গেছে বর্ষসেরার লড়াইয়ে থাকা অ্যান্টোনিও গ্রিজমানের নামটি। সবাইকে অবাক করে দিয়ে ফরাসি এই ফরোয়ার্ড এবার আলো কেড়ে নিতে পারেন। সেটা করতে পারলে দীর্ঘ ৯ বছরের জট ভাঙতে সক্ষম হবেন তিনি।এই দৌড়ে গ্রিজমান অবশ্য হেলাফেলার কেউ নন। কারণ নিজ দেশ ফ্রান্সকে ইউরোর ফাইনালে তোলার নায়ক তিনি। পর্তুগালের কাছে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে ফ্রান্স হেরে গেলেও টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড় কিন্তু গ্রিজমানই। এছাড়া ক্লাব অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের হয়েও উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল খেলেছেন। যেখানে অনন্য ভূমিকা এই ফরাসির। স্বপ্নের মতো একটি বছর কাটানোয় গ্রিজমান এবার ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড় হওয়ার দাবি করতেই পারেন। দাবি রাখেনও। গ্রিজমান যে দুটি টুর্নামেন্টে হতাশ হয়েছেন, সেই টুর্নামেন্ট দুটিতে দাপট দেখিয়েছেন রোনালদো। পর্তুগাল জাতীয় দল ইউরোর শিরোপা জিততে পারে, এই ধারণা বোধ হয় খুব অল্প সংখ্যক ফুটবলবোদ্ধারই। সবাইকে চমকে দিয়ে ‘ফেবারিট` ফ্রান্সকে হতাশ করে প্রথমবারের মতো ইউরোর ট্রফি জয় করে পর্তুগিজরা। আন্তর্জাতিক ফুটবলে যা তাদের প্রথমবারের মতো বড় কোনো ট্রফি।আবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের লড়াইটাও হয় রোনালদোর রিয়াল মাদ্রিদ ও গ্রিজমানের অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের মধ্যে। কী আর হতে পারে? নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় ১-১ গোলে ড্র হওয়ার পর ম্যাচটি গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানেই ফল নির্ধারণ হয়। ৫-৩ গোলে জিতে শিরোপা উল্লাসে মাতে রিয়াল মাদ্রিদ। তাই এ ক্ষেত্রেও হাসিটা রোনালদোর, গ্রিজমানের নয়।এদিকে রোনালদোর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী লিওনেল মেসির অর্জনও কম নয়। বার্সেলোনার হয়ে লা লিগা ও কোপা দেল রের শিরোপা জিতেছেন। কোপা আমেরিকায় আমেরিকায় আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে তোলেন। দুর্দাগ্য তার। জাতীয় দলের হয়ে এই ট্রফিটা জেতা হয়নি তার।কোপার ফাইনালে সেই চিলির কাছেই পরাস্ত হয়ে মেসির স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়। নির্ধারিত সময় গোলশূন্য ড্র করার পর টাইব্রেকারে ৪-২ ব্যবধানে হেরে যায় আর্জেন্টাইনরা। নিজের ওপর ক্ষোভ-অভিমানে জাতীয় দলের জার্সিটাই তুলে রেখেছিলেন। তবে আর্জেন্টিনার বর্তমান কোচ এদগার্দো বাউজার অনুরোধে আবারও জাতীয় দলে ফেরেন। এখন খেলছেনও।এসবের পর অনেকে ভাবছেন, ফিফার বর্ষসেরার লড়াইটা হবে মেসি ও রোনালদোর মধ্যেই। যেমনটা ঘটেছিল ফিফার থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া এবারের ব্যালন ডি`অর পুরস্কার জয়ের ক্ষেত্রে। রোনালদো জিতেছিলেন ২০১৬- ব্যালন ডি`র। দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন মেসি। তার পরের অবস্থান গ্রিজমানের।শেষ পর্যন্ত কী হয়, তা জানার অপেক্ষা খুব লম্বা সময়ের নয়। আগামীকাল সোমবার রাত সাড়ে ১১টায় সুইজারল্যান্ডের জুরিখে অনুষ্ঠিত হবে ফিফা বর্ষসেরা পুরস্কার বিরতণী অনুষ্ঠান। সেখানেই ঘোষণা করা হবে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির সেরা ফুটবলারের নাম। মেসি নাকি রোনালদো, ফিফা বর্ষসেরা হচ্ছেন কে? নাকি এই দু`জনকে হটিয়ে সেরার মুকুটটা উঠবে গ্রিজমানের মাথায়? সময়ই সব বলে দেবে।এনইউ/পিআর
Advertisement