ফিচার

প্যারিসে ভালোবাসার দেয়াল

স্কুল-কলেজে পড়ার সময় আমরা কলম বা স্কেলের আঁচড়ে দেয়াল বা বেঞ্চে যে প্রথম প্রেমের কথা ব্যক্ত করতাম, সেটা হয়তো যাকে উদ্দেশ্য করে তার কাছে পৌঁছায়নি। কিন্তু প্যারিসের ‘লে মূর দেস যে টেইম’ বা ‘আই লাভ ইউ’ দেয়ালের আঁচড় কাটা ভালোবাসার কথা পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছিয়েছে। প্যারিসের এই ভালোবাসার দেয়ালে কোনো মমতাজ-শাহজাহান বা লাইলি-মজনুর নাম লেখা নেই; এই দেয়ালে লেখা আছে ৩০০ ভাষায় ‘আই লাভ ইউ’ বা ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’। তবে মজার ব্যাপার হল, ভালোবাসার এই দেয়ালে বাংলাতেও লেখা আছে ভালোবাসার কথা। ‘আমি তো মাকে ভালবাসি’ বাংলায় লেখা এই বাক্যটি স্থান পেয়েছে প্যারিসের ভালোবাসার দেয়ালে।শুরুটা করেছিলেন ফ্রেডরিক ব্যারন। তিনি নিজের একান্ত ব্যক্তিগত শখের বসে পৃথিবীর তাবৎ ভাষার ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ বাক্যটি সংগ্রহের কাজ শুরু করেন। এজন্য তাকে বেশি কাঠখড় পোড়াতে হয়নি। বাড়ির পাশের প্রতিবেশীদের কাছ থেকেই তিনি বিভিন্ন দেশের ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ বলার পদ্ধতি সেই দেশের ভাষায় জেনে ফেলেছিলেন। আর জানার সময় তিনি সেগুলো নোট করে রাখতেন তার এক নোটবুকে। এভাবে পুরো তিনশ’ ভাষায় এক হাজার বারের মতো বাক্য তিনি তার ওই নোটবুকে লিখেছিলেন।এখানেই ফ্রেডরিকের পাগলামি থামেনি। বাক্য সংগ্রহের পর ক্যালিওগ্রাফি বিশেষজ্ঞ ক্লেয়ার কিটোর কাছে হাজির হন এবং তাকে তিনশ’ ভাষার ভালোবাসা প্রকাশে ব্যবহৃত তিনশ’ বাক্য তৈরি করতে বলেন। এরপর ফ্রেডরিকের পরিকল্পনার প্রতি মুগ্ধ হয়ে তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন ড্যানিয়েল বোলোগ। তাদের প্রচেষ্টায় ২১x২৯.৭ সেন্টিমিটার দেয়ালে ৬১২টি অ্যানামেল লাভা দিয়ে তৈরি টাইলসের ওপর ৩০০ ভাষায় ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ কথাটি লেখা হয়।বর্তমানে প্যারিসের মন্টমার্ট্রের আবিসেস উদ্যানের ভালোবাসার দেয়াল বেশকিছু চূর্ণ অংশ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। দেয়ালের চূর্ণ অংশ নিয়ে প্রচলিত আছে, এর মাধ্যমে ভেঙে যাওয়া হৃদয়কে বোঝানো হয়েছে। যেটি কিনা দেয়ালকে জোড়া লাগানোর চেষ্টা করছে।এসইউ/এমএস

Advertisement