অর্থনীতি

এফবিসিসিআই নির্বাচন : সংকটে মাতলুব, দুই প্রার্থীর পরিচিতি কম

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই নির্বাচন এগিয়ে আসছে। আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের সময় চুড়ান্ত করা হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আলোচনা এখন তুঙ্গে। কে হচ্ছেন এফবিসিসিআই সভাপতি?জানা গেছে, বরাবরের থেকে এবারের এফবিসিসিআই নির্বাচন কিছুটা কম প্রতিযোগিতামূলক হতে পারে। কারণ এখন পর্যন্ত হেভি ওয়েট প্রার্থী খুজে পাওয়া যায়নি। যদিও কয়েকজন ব্যবসায়ী সরকারের সমর্থন পেতে অনেক আগে থেকেই নানা পর্যায়ে দেন দরবার করে আসছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।সূত্র বলছে, নিটল গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল মাতলুব আহমাদ, এফবিসিসিআই সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন ও বর্তমান প্রথম সহ-সভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী এবার সভাপতি পদে প্রার্থী হতে চান। এর মধ্যে মনোয়ার হাকিম আলী প্রথম কোন নারী হিসেবে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ এই সংগঠনের সভাপতি পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, কেউ কেউ সরকারের উচ্চ পর্যায়ে দেন-দরবার যেমন করছেন। আবার প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের নিজের পক্ষে টানার চেষ্টা করছেন।নিটল গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল মাতলুব আহমাদ দীর্ঘদিন আগে থেকেই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে যাচ্ছেন। নৈশভোজের দাওয়াত দিয়ে তাদের সহযোগিতা চেয়েছেন।ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, মাতলুব আহমাদ ব্যবসায়ীদের বলছেন, আগামী নির্বাচনে তিনিই হচ্ছেন এফবিসিসিআই সভাপতি। সরকারের পক্ষ থেকে তিনি সবুজ সংকেত পেয়েছেন। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে তাকে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে বলেও ব্যবসায়ীদের জানিয়েছেন তিনি। ব্যবহার সুবাদে পাশ্ববর্তী একটি দেশের সুনামকে তিনি তদবিরে ব্যবহার করছেন বলেও শোনা যাচ্ছে।তবে আবদুল মাতলুব এর ব্যবসায়ী সুনামের কিছুটা ঘাটতি রয়েছে বলে অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। তিনি ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও একজন সুপরিচিত ও গ্রহণযোগ্য ব্যবসায়ীর মধ্যে যেসব গুণের সম্বনয় থাকা দরকার তা নেই এই ব্যবসায়ীর। এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে চলছে নানা কানাঘুষা এবং বিরূপ সমালোচনা।আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে চাইছেন অন্য দুই প্রার্থী জসিম উদ্দিন ও মনোয়া হাকিম আলী। মনোয়ারা হাকিম আলী ইতোমধ্যে নারী দিবসের অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি সভাপতি পদে লড়বেন। অন্যদিকে জসিম উদ্দিন গতবারই সভাপতি পদে প্রার্থী হতে চেয়ে ছিলেন। কিন্তু কাজী আকরামের কারণে হতে পারেননি। কারণ প্রধানমন্ত্রী কাজী আকরামকে এই পদে নিয়ে আসার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন।জানতে চাইলে এক ব্যবসায়ী নেতা বলেন, মাতলুব আহমাদ সুবিধাবাদী ব্যবসায়ী। এর আগে বিএনপি সরকারের আমলে তিনি এফবিসিআই নির্বাচনে সভাপতি হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন। এখন আবার তিনি সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই পদে যেতে চাইছেন। আবদুল মাতলুব মূলত গাড়ি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।মাতলুবের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, আগামী নির্বাচনে তিনি সভাপতি হওয়ার জন্য বিশাল নির্বাচনী বাজেট করেছেন। এফবিসিআই’র সভাপতি হওয়ার জন্য অতীতে এত বিপুল অংকের বাজেট কোনো প্রার্থী করেননি।জানা গেছে, আবদুল মাতলুব ছাড়া অন্য দুই জনের পরিচিতি ঘাটতি রয়েছে। তাই বরাবর এফবিসিসিআই নির্বাচন যতটা প্রতিদ্ধন্দ্বিতাপূর্ণ হয় এবার তেমনটি হবে না বলেই মনে হচ্ছে। সবশেষ গতবারের নির্বাচনেও বর্তমান সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদের বিপক্ষে প্রার্থী ছিলেন আরেক হেভি ওয়েট সাবেক সভাপতি আনিসুল হক। তিনি বর্তমানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।এসএ/আরএস/আরআই

Advertisement