দেশের পর্যটন কেন্দ্র ও পর্যটকদের নিরাপত্তায় শিগগিরই চালু হচ্ছে ট্যুরিস্ট পুলিশের আরও পাঁচটি অফিস। নতুন করে ৬৯৪ জন পুলিশ সদস্য নিয়োগ পাওয়ার পরপরই পর্যটনসংশ্লিষ্ট পাঁচটি জেলায় এ নতুন অফিস চালু করা হবে। ট্যুরিস্ট পুলিশ সদর দফতর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।জানা গেছে, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া, নাটোর, নওগাঁ, বগুড়া ও সুন্দরবন এলাকায় এ নতুন অফিস চালু হবে। ফলে পর্যটন কেন্দ্রের নিরাপত্তা ও পর্যটকদের সহযোগিতায় আরও শক্তিশালী হবে ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রম। তবে জনবল নিয়োগ পাওয়ার ওপর নতুন অফিসগুলো চালুর বিষয়টি নির্ভর করছে বলে জানান ট্যুরিস্ট পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) মো. নজমুল হোসেন।তিনি আরও বলেন, দেশের ৭ শতাধিক পর্যটন কেন্দ্রে প্রতি বছর দেশি-বিদেশি প্রায় ৬০ লাখ পর্যটক ঘুরতে আসেন। তাদের নিরাপত্তায় রয়েছে মাত্র ৬৯৯ ট্যুরিস্ট পুলিশ। এদের মধ্যে মাঠ পর্যায়ে কাজ করেন মাত্র সাড়ে ৫০০ জন। নতুন জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে পুরনো অফিসসহ নতুন পাঁচটি অফিস চাঙ্গা হবে।ট্যুরিস্ট পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ট্যুরিস্ট পুলিশের যাত্রা শুরু হয়। একজন ডিআইজি ও এডিশনাল ডিআইজি, চারজন এসপি, আটজন এডিশনাল এসপি ও ১১ জন সহকারী পুলিশ সুপার, ২১ জন ইন্সপেক্টরসহ ৬৯৯ জন পুলিশ সদস্যের সমন্বয়ে এর কার্যক্রম শুরু হয়। রামপুরায় ভাড়া বাসায় গড়ে তোলা হয় ট্যুরিস্ট পুলিশের সদর দফতর। সেখানে প্রতিষ্ঠা করা হয় ঢাকা ডিভিশনের কার্যালয়, ঢাকা জোনের কার্যালয় ও ফোর্স ব্যারাক।প্রতিষ্ঠার দুই বছরের মধ্যেই কক্সবাজার, টেকনাফ, কুয়াকাটা, সিলেটের জাফলং, বিছানাকান্দি, মাধবকুণ্ড, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, সোনারগাঁ জাদুঘর, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক ও জাতীয় চিড়িয়াখানায় ট্যুরিস্ট পুলিশ তাদের কার্যক্রম শুরু করতে সক্ষম হয়। এখন নতুন করে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া, নাটোর, নওগাঁ, বগুড়া ও সুন্দরবন এলাকায় চালু হচ্ছে ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রম।নওগাঁ এলাকার গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন স্পটের মধ্যে রয়েছে- কুসুম্বা মসজিদ, মান্দা, পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার। এছাড়া বলিহার রাজবাড়ী, পতিসর কাচারিবাড়ী, জবাইবিল, ধামইরহাটের জগদ্দল বিহার, আলতাদীঘি, মাহি সন্তোষ, ভীমের পান্টি, ধামইরহা, দিব্যক জয়স্তম্ভ, ঠাকুর মান্দা মন্দির, হাপানিয়া খেয়াঘাটেও আকর্ষণের কমতি নেই।নাটোরের দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে- উত্তরা গণভবন, দয়ারামপুর রাজবাড়ী, রাণী ভবানী রাজবাড়ী, চলনবিল, শহীদ সাগর, ফকিরচাঁদ বৈষ্ণব গোঁসাইজির আশ্রম, বনপাড়া লুর্দের রাণী মা মারিয়া ধর্মপল্লী।বগুড়ার দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে- মহাস্থানগড়, বেহুলা লখিন্দর (গোকুল মেধ), দেওতা খানকাহ্ মাজার শরিফ, বাবা আদমের মাজার ও আদমদীঘির প্রখ্যাত দীঘি, সান্তাহার সাইলো, জয়পীরের মাজার, দুঁপচাচিয়া, বাবুর পুকুরের গণকবর, সারিয়াকান্দির পানিবন্দর, পাঁচপীর মাজার কাহালু, ঐতিহাসিক যোগীর ভবনের মন্দির ও সাউদিয়া সিটি পার্ক।গোপালগঞ্জে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধ কমপ্লেক্স, ওড়াকান্দি ঠাকুর বাড়ি, জমিদার গিরীশ চন্দ্র সেনের বাড়ি, অন্যন্যা চন্দ্র ঘাট, উলপুর জমিদার বাড়ি, বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধসহ সুন্দরবনের সৌন্দর্য বিশ্বজোড়া সুনাম রয়েছে।ট্যুরিস্ট পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি সোহরাব হোসেন জাগো নিউজকে জানান, পর্যটন শিল্পে ট্যুরিস্ট পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তবে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ট্যুরিস্ট স্পটে পর্যটকদের ভিড় থাকলেও নেই পর্যাপ্ত ট্যুরিস্ট পুলিশ। নতুন জনবল পেলে সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ও পর্যটকদের নিবিড়ভাবে সহযোগিতা করা সম্ভব হবে।জেইউ/আরএস/জেএইচ
Advertisement