সৌম্য সরকার যেভাবে খেলছিলেন, দেখে যে কারও মনে হতে বাধ্য- নিয়মিতই বুঝি এভাবে ব্যাট করে যান তিনি। কেউই বলবে না, এই ব্যাটসম্যানই টানা রান না পেতে পেতে সমালোচনার তীরে বিদ্ধ। সাব্বির রহমানের সঙ্গে মিলে ৬৮ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে জয়ের স্বপ্নই দেখাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু নিজের চিরাচরিত বদ অভ্যাস বলুন আর দুর্বলতা বলুন- শট বলে লাগাম টেনে ধরতে পারলেন না। ট্রেন্ট বোল্টকে ৩ বলের মধ্যে দুটি বাউন্ডারি মারার পর লোভও সামলাতে পারেননিল। ফলে বোল্টের শট পিচ বলটি লাফিয়ে কাঁধ বরার আসতেই হুক করার চেষ্ঠা করলেন সৌম্য। বল চলে গেলো শর্ট ফাইন লেগে কলিন মুনরোর হাতে। যবনিকাপাত ঘটলো দারুণ সম্ভাবনাময় এক ইনিংসের।শুধু সৌম্য সরকারই নয়, বাংলাদেশের প্রায় সব ব্যাটসম্যানই আজ এমন শট বলের লোভ সামলাতে না পেরে কিংবা ভুল শট খেলে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন। সাব্বিরের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে শুধু রান আউট হয়েছেন তামিম ইকবাল। আউট হওয়া বাকি ৯জন ব্যাটসম্যানই ক্যাচ তুলে দিয়ে এসেছেন নিউজিল্যান্ডের ফিল্ডারদের হাতে। টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে এক ম্যাচে ৯টি ক্যাচ নেওয়ার ঘটনা এ নিয়ে অষ্টমবার। ১২ ওভারে যেখানে বাংলাদেশের রান ১১৬, সেভানে ১৪৮ রানেই শেষ মাশরাফি অ্যান্ড কোং। ৩ উইকেটে ১০৪ রান থেকে পরের ৪৪ রানেই বাকি ৭ উইকেট বিলিয়ে আসলো বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা।মিচেল সান্তনারের বলে প্রথম ওভারেই স্লগ সুইপ করতে গিয়ে টম ব্রুসের হাতে ক্যাচ দিলেন ইমরুল কায়েস। সাব্বির রহমান আউট হলেন বিলাষি শট খেলতে গিয়ে। অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলকে এমনভাবে ছক্কা মারতে গেলেন যেন এ কাজটা কতই সহজ! ব্যাটে লাগালে এবং আকাশে তুলে দিলেই হয়ে যায়; কিন্তু ভুলটা তিনি বুঝতে পারলেন ট্রেন্ট বোল্টের হাতে ধরা পড়ার পর।সাকিব আল হাসান তো স্রেফ নিজের উইকেটটা বিলিয়ে দিয়ে আসলেন। স্লাইস করতে গিয়ে কভার পয়েন্টে দাঁড়ানো জিমি নিশামের হাতে সহজ ক্যাচ তুলে দিয়ে আসলেন। স্লগ করতে গিয়ে ডি গ্র্যান্ডহোমের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শট বলের লোভ সামলাতে না পেরে ক্যাচ তুলে দিলেন মোসাদ্দেক হোসেন। নুরুল হাসান সোহানও ক্যাচ দিলেন শট বলে। মাশরাফি বাজেভাবে সুইপ করতে গিয়ে ধরা পড়লেন বোল্টের হাতে। রুবেল হোসেনও আউট হলেন শট বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে।দলের মধ্যে আটজন জেনুইন ব্যাটসম্যান। মাশরাফি নিজেও ভালো ব্যাট করেন। সে হিসেবে ধরলে মোস্তাফিজ আর রুবেলছাড়া বাকি সবাই ব্যাটসম্যান। কিন্তু এতড় ব্যাটিং বহরও বালির বাধের মত ভেঙে গেলো কিউই বোলারদের কৌশলী শর্ট বলের কাছে। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন নিজেই বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ শর্ট বলে দুর্বল। আমরা এ সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছি।’কিউইদের মুখে এ কথা শোনার পরও বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা সতর্ক নয়। একের পর এক শট বলে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসে মৃত্যু ঘটাচ্ছে দারুণ সম্ভাবনার। ১০টি আউটের সবগুলোই ভুল। কোনো ভালো বলে আউট হয়নি একজন ব্যাটসম্যানও। এতগুলো ভুল করলে নিশ্চিত, নিউজিল্যান্ডের মাটি থেকে ফিরতে হবে খালি হাতেই।আইএইচএস/এমএস
Advertisement