অবশেষে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে রাডার ক্রয়ের উদ্যোগ বাতিল করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। পিপিপির পরিবর্তে সরকারি অর্থায়নেই মাল্টিমোড সার্ভিল্যান্স সিস্টেম (রাডার) প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা ভাবা হচ্ছে। শিগগিরই এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠাবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।জানা গেছে, পিপিপির ভিত্তিতে প্রকল্পটির আর্থিক প্রস্তাবনা অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। দরপত্র মূল্যায়ন শেষে এটি গ্রহণযোগ্য নয় বলে মত দেয় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। গত ১২ ডিসেম্বর চিঠির মাধ্যমে বেবিচককে তা জানিয়েও দিয়েছে মন্ত্রণালয়।বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী প্রধান জাকিয়া আফরোজ স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রকল্পের দরপত্র মূল্যায়ন প্রতিবেদন পর্যালচনা করে মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশকৃত দর অত্যাধিক প্রমাণ হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ‘প্রকিউরমেন্ট গাইডলাইন ফর পিপিপি প্রজেক্টস, ২০১৬’ এর ৪৫.৯সি(২) এর অনুচ্ছেদ মোতাবেক দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশ গ্রহণযোগ্য নয় বলে বিবেচিত হয়েছে। এ বিষয়ে সিসিইএ-এর সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশনাও বেবিচককে দিয়েছে মন্ত্রণালয়।বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এ প্রসঙ্গে জাগো নিউজকে বলেন, মাল্টিমোড সার্ভিল্যান্স সিস্টেম (রাডার) প্রকল্পটি কিভাবে বাস্তবায়ন করা হবে তা অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ঠিক করবে। সরকারি অর্থায়ন ও পিপিপি উভয় প্রক্রিয়ায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সুবিধা-অসুবিধা চিহ্নিত করে সারসংক্ষেপ তৈরি করছে মন্ত্রণালয়। সারসংক্ষেপটি অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে উপস্থাপন করা হবে।পিপিপির ভিত্তিতে রাডার ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের জন্য ২০১২ সালে একটি আনসলিসিটেড প্রস্তাব পায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান করিম অ্যাসোসিয়েটস ওই সময় ১৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রস্তাব দেয়। ২০১৩ সালে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি মাল্টিমোড সার্ভিলেন্স সিস্টেম (রাডার) শীর্ষক প্রকল্পটি ৩৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে পিপিপির মাধ্যমে বাস্তবায়নের নীতিগত অনুমোদন দেয়। প্রকল্পের ব্যয় পরে বেড়ে হয় ৫৫৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা।এ প্রকল্পের জন্য পিপিপির অংশীদার নিয়োগে দরপত্র আহ্বান করা হলে করিম অ্যাসোসিয়েটস প্রায় ৭০০ কোটি টাকা দর দেয়। তবে বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে কারিগরি ও আর্থিক মূল্যায়নের পর একই প্রকল্পের ব্যয় আরো এক দফা বাড়ানো হয়।সর্বশেষ প্রকল্পের ব্যয় এক হাজার ৭০০ কোটি টাকা দেখিয়ে অনুমোদনের জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলে দফায় দফায় গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি ও এ ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন তোলে মন্ত্রণালয়। সর্বশেষ এটি বাতিল করে বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।আরএম/বিএ
Advertisement