দুর্বৃত্তদের ছোড়া গুলিতে নিহত গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য (এমপি) মো. মনজুরুল ইসলাম লিটনের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। এছাড়া নিজ গ্রাম ও আশপাশের লোকজনের কান্নাতে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। আত্মীয়স্বজনসহ এলাকাবাসী সবাই রয়েছেন এমপি লিটনের মরদেহেরে অপেক্ষায়। ঢাকা থেকে বাড়িতেমিরদেহ পৌঁছানোর পর বাদ আসর বামনডাঙ্গা আবদুল হক কলেজ মাঠ ও পরে নিজ বাড়ি চত্বরে জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে জানিয়েছেন এমপি লিটনের বড় ভাই মো. শহিদুল ইসলাম। সোমবার সকালে এমপি লিটনের বাড়ি সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের সাহাবাজ (মাস্টারপাড়া) গ্রামের নিজ বাড়িতে গিয়ে এমন আহজারীর চিত্র দেখা যায়। প্রচণ্ড শীত ও ঘন কুয়াশা উপক্ষো করে এমপি লিটনের বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনসহ আশপাশ ও দূর-দূরান্তের লোকজন ছুটে আসে। এদিকে, এমপি লিটন হত্যার ঘটনার পর থেকে গোটা সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সেই সঙ্গে এমপি লিটনের নিজ গ্রাম সাহাবাজ (মাস্টারপাড়া), সর্বানন্দ, বামনডাঙ্গাসহ সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। তাছাড়া সর্বস্তরের জনসাধারণের মধ্যে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।অপরদিকে, নিজ বাড়িতে গুলিবিদ্ধের ঘটনায় হতবাক হয়েছেন বিক্ষুদ্ধ আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মী ও এলাকাবাসী। ঘটনার পর থেকে তাদের মধ্যে আতঙ্কের সঙ্গে চাপা ক্ষোভ আর উত্তেজনা বিরাজ করছে। হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে চাপা ক্ষোভ আর উত্তেজনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীসহ এলাকাবাসী। ঘটনার পর থেকে এমপি লিটনের বাড়িসহ বামনডাঙ্গা ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলা শহরে সর্তক অবস্থানে রয়েছে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও বিজিবি। এছাড়া বিভিন্ন সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকাসহ বিভিন্ন সড়কের মোড়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিজিবিসহ পুলিশ টহল জোরদার রয়েছে। লিটন হত্যার প্রতিবাদে ও হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে ফাঁসির দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বস্তরের জনসাধারণ। ঘটনার পর থেকে বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী বিক্ষোভ, হরতাল, অবরোধ কর্মসূচি অব্যহত রেখেছে। রোববার সকাল-সন্ধ্যা উপজেলা আওয়ামী লীগের ডাকা পৌর এলাকায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হয়। দিনভর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীসহ বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী বিক্ষোভ করে। এছাড়া সোমবার সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় হরতালের ডাক দিয়েছে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ। সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিয়ার রহমান জানান, সোমবার সকাল ১০টার পর এমপি লিটনের মরদেহ হেলিকপ্টারে করে সুন্দরগঞ্জে পৌঁছবে। হেলিপ্যাড থেকে মরদেহ প্রথমে তার নিজ বাড়িতে রাখা হবে। বাদ আসর বামনডাঙ্গা আবদুল হক কলেজ মাঠ ও পরে নিজ বাড়ি চত্বরে তার জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তার মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে। এরআগে, শনিবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের সাহাবাজ গ্রামে নিজ বাড়িতে গুলিবিদ্ধের শিকার হন এমপি লিটন। রাত সাড়ে ৭টার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় লিটনের বোন তাহমিদা বুলবুল বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামি করে রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ রোববার দুপুর পর্যন্ত ১৮ জনকে আটক করে। জিল্লুর রহমান পলাশ/এফএ/এমএস
Advertisement