জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বর্তমান সরকার সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে আপোষহীন নীতি অনুসরণ করছে। বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে বাংলাদেশ সংবিধানের আলোকে তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে সশস্ত্র ও পুলিশ বাহিনী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিচ্ছে।যুক্তরাষ্ট্র আর্মি ওয়ার কলেজের ২২ সদস্যের প্রতিনিধিদল শুক্রবার জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ীমিশনে পৌঁছলে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরে ড. মোমেন এসব কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্র আর্মি কলেজের ডেপুটি কমান্ডার কর্নেল ডেভিড ফাংক এই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশের জনগণ শান্তিপ্রিয়। এ জন্য বাংলাদেশ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ শীর্ষক প্রস্তাব উত্থাপন করেছে। যা সাধারণ পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। এ অঙ্গীকার থেকেই বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিমিশনে অংশগ্রহণ করে যাচ্ছে এবং বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় অনবদ্য অবদান রেখে যাচ্ছে।অর্থনৈতিক ও সামাজিক খাতে বর্তমান সরকারের সাফল্যের চিত্র তুলে ধরে ড. মোমেন বলেন, সরকার দেশের বিপুল জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরের লক্ষ্যে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিয়েছে। নারীর অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন হয়েছে। এ তিনটি খাতেই নারীর অবদান প্রতিবছর বাড়ছে।তিনি বলেন, বিভিন্নমুখী সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে উন্নয়নের সাথে সাথে আয় বৈষম্য হ্রাস পাচ্ছে। দারিদ্র্যের হার ২০০৮ সালের ৪০ শতাংশ থেকে বর্তমানে ২৪ শতাংশে নেমে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের লক্ষ্যভিত্তিক কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলেই এ অর্জন সম্ভব হয়েছে।এ সময় স্থায়ী মিশনের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম আখতারুজ্জামান জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের অবদান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ১ লাখ ৩৯ হাজার ২৯৫ জন শান্তিরক্ষী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৫৪টি শান্তি মিশনে দায়িত্ব পালন করেছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ ২০১৪ সালে শীর্ষস্থান অর্জন করেছে।তিনি আরো বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের ৯ হাজার ৫৬৫ জন শান্তিরক্ষী বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের ১০টি শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত আছেন। শান্তিরক্ষা মিশনগুলোতে দায়িত্ব পালনের সময় এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ১২৩ জন শান্তিরক্ষী জীবন বিসর্জন দিয়েছেন এবং ১৬৫ জন শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন।অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা বাংলাদেশের বর্তমান আর্থসামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন। তারা বহুমুখী চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশের উন্নয়ন কৌশল সম্পর্কে জানতে চান। প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ও স্থায়ী প্রতিনিধি তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।আরএস/আরআই
Advertisement