খেলাধুলা

যে কারণে দলে নেয়া হয়েছিল তানবিরকে

আগে ও পরে অনেক কথা হয়েছে। সমালোচনা, তীর্যক কথাবার্তা চলছে এখনো। কেন কি কারণে তানবির হায়দারের মত মাঝারি মানের এক পারফরমারকে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ সিরিজের দলে রাখা হলো? এ নিয়ে রাজ্যের সমালোচনা? সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ এবং মাহমুদউল্লাহর মত স্পিনার থাকতে আবার কেন তানবিরকে নেয়া? দলে এ অন্তর্ভুক্তির যৌক্তিকতা নিয়ে আছে বড় ধরনের প্রশ্ন। আজ বিকেলে (নেপিয়ার সময়) সে কৌতুহলি প্রশ্নর জবাব দিয়েছেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, এমনি এমনি কিংবা পরীক্ষা নিরীক্ষা চালানোর জন্য তানবিরকে দলে নেয়া হয়নি। এ লেগস্পিনার কাম লেট অর্ডার ব্যাটসম্যানকে জেনে শুনে ও বুঝে দলে ডাকা হয়েছে। সেটা ভবিষ্যতের কথা ভেবেই। কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের কথায় পরিষ্কার, জুনে আইসিসি চ্যাস্পিয়ন্স ট্রফি আর ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে যে বিশ্বকাপ হবে- এই দুই আসরে সাফল্য পেতে দরকার একজন ভালো মানের লেগস্পিনার। ইংলিশ কন্ডিশনে একজন ভালো মানের লেগস্পিনারের সাফল্যের রেকর্ড অনেক। তাই তানবিরকে দলে নেয়া এবং মান যাচাই করে নেয়া। পরীক্ষায় উৎরে গেলে তাকে ভবিষ্যতের জন্য তৈরির সব রকম চেষ্টা চালানো হবে। মূলতঃ এমন ব্যাখ্যাই দিলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। তার মুখ থেকেই শোনা যাক, তানবিরকে খেলানোর কারণ, ‘আমি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই একজন ভালো মানের লেগস্পিনার খুঁজে বেড়িয়েছি। সেই চিন্তা, বোধ এবং দর্শন থেকেই জুবায়ের হোসেন লিখনকে নিয়েছিলা। তার মাঝে আমরা সম্ভাবনা খুঁজে পেয়েছিলাম বলেই তাকে নেয়া।’জুবায়েরের পর তানবিরের দিকে আসার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘দূর্ভাগ্যজনক ভাবে কিছু কারনে জুবায়ের ভাল করতে পারেনি; কিন্তু আমরা লেগস্পিনারের সন্ধানের মিশন অব্যহত রেখেছি। সেটা অদুর ভবিষ্যতের কথা ভেবেই। আপনি কি ওভালে ইংল্যান্ড কিংবা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শুধু মাশরাফি, তাসকিন, মোস্তাফিজ আর সাকিবের বোলিং দিয়ে জিততে পারবেন? তারা কতটা সফল হবে? অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ব্রেক থ্রু আনতে দরকার একজন চৌকষ লেগি। তাই তানবিরের দিকে চোখ রেখেছি আমরা।’মূলতঃ লেগ স্পিনার অলরাউন্ডার হিসেবেই তানবিরকে দলে নেয়া হয়েছে বলে জানালেন হাথুরু। তিনি বলেন, ‘নির্বাচকরা তাকে দলে নিয়েছে একজন লেগ স্পিনার অলরাউন্ডার হিসেবে। যে ব্যাট করতে পারে। জুবায়ের নিজেকে মেলে ধরতে পারেনি। আমরা সেকেন্ড চয়েজ হিসেবে তানবিরকে ভেবেছি। সেই কারণেই সে এখানে আমাদের সাথে নিউজিল্যান্ডে। আমরা ওকে দেখে নিতে চাই।’ মানা গেল ভবিষ্যতের কথা ভেবে তানবিরকে দলে নেয়া ও খেলানো; কিন্তু তার পারফরমেন্স তো মোটেই নজর কাড়ার মত নয়। লেগ স্পিনার হিসেবে তানবির নিজেকে মেলে ধরতে পারেনি। প্রথম দুই ম্যাচে কিছুই করতে পারেনি। ব্যর্থতার ঘানি টেনেছে। এমন প্রসঙ্গের অবতারনা ঘটালে বাংলাদেশ কোচের ব্যাখ্যা, ‘শুরুর দুই-তিন ম্যাচ দেখে কারো জাত, মান ও সামর্থ্য নিয়ে উপসংহারে যাওয়া কী ঠিক? বিশ্বের অনেক বাঘা বাঘা স্পিনারের শুরু দেখেন, ভালো না। প্রথম দিকে নিজেকে খুঁজে পাননি। ধীরে ধীরে প্রতিভার স্ফুরণ ঘটেছে।’ এ কথার পক্ষে বিশ্বসেরা লেগস্পিনার শেন ওয়ার্নের ক্যারিয়ারের শুরুর কথা টেনে এনে হাথুরু বলেন, কেউ কেউ বলছেন তানবিরকে খেলানো ব্যাক ফায়ার করেছে। আমি তা মানতে রাজি নই। মোটেই ব্যাকফায়ার করেনি। কেউ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসেই দুই ম্যাচে ভালো করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলবে, এটা তো সম্ভব না! শেন ওয়ার্ন সর্বকালের সেরা লেগ স্পিনার। প্রথম দুই ম্যাচে দেখুন, কিছুই করতে পারেননি!’শেন ওয়ার্নেও প্রসঙ্গ দিয়ে তারবিরের পক্ষেই শেষ পর্যন্ত নিজের অবস্থান ধরে রাখলেন কোচ। তিনি বলেন, ‘তানবির প্রথম ম্যাচে খারাপ করেনি। দ্বিতীয় ম্যাচে প্রত্যাশামতো ভালো করেনি, তবে মনে রাখতে হবে আমাদের কোনো স্পিনারই সেদিন ভালো করেনি। কাজে লাগেনি বলে আমরা অবশ্যই হতাশ। তবে আমি কখনোই দুই-এক ম্যাচ দেখে কোনো ক্রিকেটারকে বিচার করি না। ওর মধ্যে কিছু দেখেই আমরা তাকে দলে নিয়েছি।’এআরবি/আইএইচএস/জেআইএম

Advertisement