একই মাঠে ৭২ ঘণ্টার ব্যবধানে পরপর দুই খেলায় চরম ব্যাটিং ব্যর্থতা। ২৯ ডিসেম্বর ২৫২ রান করতে গিয়ে খুব ভালো শুরু না হলেও দ্বিতীয় উইকেটে ইমরুল কায়েস আর সাব্বির রহমান রুম্মনের হাত ধরে ধীরে ধীরে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে থাকা। ৩০ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পরও একপর্যায়ে স্কোর ছিল এক উইকেটে ১০৫। ঠিক সেখান থেকে ছন্দপতন। মিডল অর্ডার ভেঙে পড়লো তাসের ঘরের মতো। ১৮৪-তে অলআউট। ইমরুল ৫৯। আর সাব্বির ৩৮। তারপর ব্যর্থতার মিছিল। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (১), সাকিব আল হাসান (৭), মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত (৩) ও তানবির হায়দার (২) ফিরে গেলেন অল্প সময় ও নামমাত্র সংগ্রহে।মানা গেল সামনে লক্ষ্য স্থির করা ছিল। রানের চাপ ও নানা হিসাব-নিকাশে হয়তো এক পর্যায়ে খেই হারিয়ে ফেলা। কিন্তু আজ তো কোনো রকম চাপ ছিল না। শুক্রবার প্রথম ব্যাটিংয়ে নামার পর প্রথম উইকেটে উঠলো ১০২ রান। তা-ও মাত্র ২১.২ ওভারে। ওভার পিছু প্রায় ৫। ৫০ ওভারের ম্যাচে আদর্শ সূচনা। ওয়ানডে ফরম্যাটে এতো ভালো, সুন্দর ও সাবলীল শুরু খুব কমই দেখা যায়। এমন উড়ন্ত সূচনার পর খুব খারাপ হলেও রান আড়াইশো পার হয়ে পৌনে তিনশোর আশাপাশে থাকার কথা। সেখানে বাংলাদেশ থামলো ২৩৬ রানে। এটাও হতো না, যদি না তরুণ উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান হাল না ধরতেন। এই তরুণ মাত্র ৩৯ বলে ৪৪ রানের আক্রমণাত্মক, অথচ দায়িত্বশীল ও লড়াকু ইনিংস উপহার দেয়ায় স্কোর গেল ২৩০-এর ঘরে।অথচ শুরুতে ইনিংসের কী রকম রমা চেহারা। তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস প্রথম উইকেটে তুলে দিলেন ১০২। কিন্তু হায় এমন দুর্দান্ত সূচনার পরও আবার সেই আগের ম্যাচের খারাপ অবস্থা। তামিম ৫৯ আর ইমরুল ৪৪ রানে ফেরার পর যথারীতি ব্যর্থতার মিছিল। সাব্বির ১৯, মাহমুদউল্লাহ ৩, সাকিব ১৮ ও মোসাদ্দেক ১১ রানে সাজঘরে। তবুও রক্ষা নুরুল হাসান সোহান খেললেন পরিণত ব্যাটসম্যানের মতো। তার একার দৃঢ়তায় ২০০ পেরিয়ে ২৩০-এর ঘরে। কি কারণে এমন ব্যাটিং ব্যর্থতা? শুনলে অবাক হবেন এ ব্যর্থতার কারণ জানা নেই অধিনায়ক মাশরাফি কিন মুর্তজার। আজ খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন উঠলো- ‘আচ্ছা, পরপর দুই ম্যাচে একই জায়গায় এমন বিপর্যয় কেন? আপনি কি মনে করেন? মাশরাফির ব্যাখ্যা, ‘কি আর বলবো? কেন যে এমন হচ্ছে, এ ব্যর্থতার আসলে ব্যাখা দেয়া কঠিন। আমার কাছে এর কারণ জানা নেই।’ মাশরাফির প্রশ্ন, ‘একবার হতে পারে। তাই বলে পরপর দুই খেলায় ব্যাটিংয়ের এমন করুণ অবস্থা- মানা যায় না।’ তবে ক্রিকেট যার ধ্যান-জ্ঞান, সেই মাশরাফির অনুভব, অন্য কোথাও না সমস্যাটা মনে হচ্ছে। তাইতো মুখে এমন সংলাপ, ‘চমৎকার সূচনার পরও যখন বার বার একই ঘটনা ঘটছে। আমরা বারবার বিপর্যয়ের মুখে পড়ছি- তার অর্থ আমাদের মানসিক সমস্যা আছে। হয়তো আমরা মানসিকভাবে যতোটা শক্ত ও দৃঢ় থাকার কথা- আমরা ততটা থাকতে পারছি না।’এআরবি/এনইউ/আরআইপি
Advertisement