ধর্ম

শেষ হলো সিলেট জেলা ইজতেমা

দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি-সমৃদ্ধি এবং কল্যাণ কামনায় আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে তাবলীগ জামাআতের সর্ববৃহৎ আয়োজন তিনদিন ব্যাপী সিলেট জেলা ইজতেমা সম্পন্ন হয়েছে আজ। প্রায় ১০ লাখ মুসল্লির অংশগ্রহণে মোনাজাত চলাকালে আমিন ছুম্মাহ আমিন আর মানুষের কান্নায় ইজতেমা মাঠে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।আজ (শনিবার) বেলা ১১টা থেকে ১২টা ১০ মিনিট পর্যন্ত চলে এ মোনাজাত। মোনাজাতে আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ কামনা করা হয়। জঙ্গি ও সন্ত্রাসমুক্ত শান্তিকামী রাষ্ট্র কামনা ও অতীত ভুলের জন্য তওবা করে ক্ষমাও প্রার্থনার বিশেষ আবেদন ছিল এ মোনাজাতে। ইজতেমায় আগত সব মুসল্লি ‘আমিন-আমিন’ ধ্বনি ও কান্নায় মুখরিত করে তোলে ইজতেমা ময়দান।সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার সিলেট-সুনামগঞ্জ বাইপাস সড়ক সংলগ্ন লতিপুর-খিদিরপুর হাওরে ইজতেমা মাঠে আখেরি মোনাজাতে প্রায় ১০ লাখ মুসল্লি অংশ নিয়েছেন বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন। আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে সিলেট নগরের বিপনীবিতানসহ আশপাশ এলাকার বাজারের দোকান পাট বন্ধ রেখে মানুষজন ইজতেমা মাঠের দিকে রওয়ানা করেন সকাল থেকে। এ কারণে বেলা দুইটা পর্যন্ত সিলেটের ৯০ ভাগ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিলো।প্রচণ্ড ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে লাখো মুসল্লি মোনাজাতে অংশ নিতে ভোর থেকেই হেঁটে, বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে ইজতেমাস্থলে সমবেত হন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরো এলাকা কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।অনেক মুসল্লি ইজতেমা স্থলে পৌঁছাতে না পেরে বাইপাস সড়ক, আশেপাশের রাস্তা ও গ্রামে অবস্থান নেন। এছাড়া বিপুলসংখ্যক নারীও মোনাজাতে অংশ নিতে ইজতেমার আশপাশের বিভিন্ন স্থানে সকাল থেকেই অবস্থান নেন। ইজতেমায় তাওহিদ, রিসালাত, দাওয়াত, নামাজ, জিকিরসহ ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে বয়ান হয়। তিনদিন ধরে মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে অবস্থান করে এসব বয়ান শোনেন। ইজতেমা শেষে মুসল্লিরা বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে সুনির্দিষ্ট গন্তব্যে যাবেন। ময়দানের নসিহত ও বয়ান সেখানে তাঁরা পৌঁছে দেবেন।টঙ্গির তুরাগ নদীর তীরে বিশ্ব ইজতেমায় মুসল্লীদের উপস্থিতি বেশি হওয়ায় এবার দেশের ৩২ জেলায় এ ইজতেমা আয়োজন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজ পর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ সুরমার লতিপুর-খিদিরপুর এলাকার মাঠে শুরু হয়ে আজ শেষ হলে সিলেটের তিন দিনব্যাপী ইজতেমা।সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মো. জেদান আল মুসা জানান, আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল। চার স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তাব্যবস্থার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন রাখা হয়। ফলে সকলের সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ইজতেমা সম্পন্ন হয়েছে।ছামির মাহমুদ/এমএমএস/জেআইএম

Advertisement