সালতামামি

বছরের আলোচিত চলচ্চিত্র নির্মাতারা

চলতি বছর মুক্তি পেয়েছে ৫৫টি চলচ্চিত্র। এরমধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি ছবি ব্যবসা সফল হলেও বাকি ছবিগুলোর ব্যবসায়িক বিপর্যয় ঘটেছে। তবে এসব ছবির রূপালি পর্দায় নিজেদের নির্মাণ মুন্সিয়ানা দেখিয়ে আলোচনায় এসেছেন কয়েক জন চলচ্চিত্র নির্মাতা। একদিক দিয়ে তাদের ছবি যেমন প্রশংসিত হয়েছে, তেমনি তারাও নামের আগে জুটিয়েছেন জনপ্রিয়তার তকমা! বছরের সেরা পাঁচজন চলচ্চিত্র নির্মাতা নিয়ে জাগো নিউজের এই প্রতিবেদন... অমিতাভ রেজাঅমিতাভ রেজা মূলত দেশের জনপ্রিয় একজন বিজ্ঞাপন নির্মাতা। তাকে মডেল তৈরির কারিগরও বলে থাকেন অনেকেই। তার নির্মিত প্রথম ছবি ‘আয়নাবাজি’ মুক্তি পায় ৩০ সেপ্টেম্বর। মুক্তির পরেই বাজিমাৎ! কয়েক বছরের চলচ্চিত্রে ব্যবসায়িক সব রেকর্ড ভেঙে দেয় এই ছবি। শুধু তাই নয়, দর্শকদের হলে ফিরিয়ে চমকে দেন অমিতাভ রেজা। শুধু তার নির্মাণ মুন্সিয়ানার কারণেই তিনি বছরের শীর্ষ আলোচিত চলচ্চিত্র নির্মাতা নন, গেল দশ বছরের সবচেয়ে সেরা ব্যবসা সফল ছবির নির্মাতা হিসেবেও নিজেকে তিনি অনন্য করে তুলেছেন। দেশ নয়, দেশ ছাড়িয়ে বিশ্বের বিভিন্ন বড় বড় চলচ্চিত্র উৎসবে ‘আয়নাবাজি’ এবং অমিতাভ রেজার জয়জয়কার চলছে। তৌকীর আহমেদজনপ্রিয় অভিনেতা- নির্মাতা তৌকীর আহমেদ পরিচালিত ‘অজ্ঞাতনামা’ ছবিটি মুক্তি পায় ১৯ আগস্ট। এটি তার নির্মিত পঞ্চম ছবি। জীবিকার সন্ধানে বিদেশে পাড়ি দেওয়া শ্রমিক ও তাদের পরিবারের করুণ কাহিনী নিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘অজ্ঞাতনামা’। বাস্তবমুখী এই ছবিটি মুক্তির পর দারুণ প্রশংসিত হয় তৌকীরের নির্মাণ মুন্সিয়ানা। যদিও ছবিটি ব্যবসায়িকভাবে সফলতার মুখ দেখেনি তারপরও নির্মাতা তৌকীর তার নির্মাণশৈলী দিয়ে পোক্ত করেছেন নিজের অবস্থান। ছবিটি দেশ বিদেশেও প্রশংসিত হয়েছে। বিশ্বা বাজারে যোগ্য প্রতিনিধিত্ব করেচে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র, শিল্প ও সংস্কৃতির।জাকির হোসেন রাজুআলোচনায় ছিলেন সিনিয়র নির্মাতা জাকির হোসেন রাজু। তিনি জাজের প্রযোজনায় নির্মাণ করেছিলেন ‘নিয়তি’ নামের একটি ছবি। বাংলাদেশ ও কলকাতায় বেশ আলোচিত ছিলো ছবিটি। কলকাতার হলে মুখ থুবড়ে পড়লেও আরিফিন শুভ ও জলি বেশ ভালোই চমক দেখিয়েছেন নিজ দেশের বক্স অফিসে। ছবিটি দিয়ে জাকির হোসেন রাজু নিজের নির্মাণের মুন্সিয়ানার নতুন স্বাক্ষর রাখলেন।সাফিউদ্দিন সাফিগেল বছরের ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনি’ ছবির সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে জনপ্রিয় নির্মাতা সাফিউদ্দিন সাফি এই বছরে নির্মাণ করেন ‘পূর্ণ্যদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনি-২’। শাকিব খান ও জয়া আহসানকে নিয়ে বানানো এই ছবিটি দর্শকদের কাছে বেশ ভালোই সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়। ব্যবসায়িক সাফল্য না আসলেও ছবির জনপ্রিয় গানগুলো ছিলো সবার মুখে মুখে। অনন্য মামুনতরুণ নির্মাতা অনন্য মামুন পরিচালিত দুটি ছবি মুক্তি পেয়েছে চলতি বছর। ছবি দু’টি হচ্ছে ‘অস্তিত্ব’ এবং ‘আমি তোমার হতে চাই’।  প্রথমটি মুক্তি পায় মে মাসের প্রথম সপ্তাহে এবং দ্বিতীয়টি ১৬ ডিসেম্বরে। ছবিটি দু’টি ফ্লপ হলেও নির্মাতা মামুন ছিলেন আলোচনায়। কারণ দুটির ছবির মেকিং ছিল প্রশংসিত। পাশাপাশি ‘অস্তিত্ব’ ছবিতে আরিফিন শুভ ও তিশাকে এবং ‘আমি তোমার হতে চাই’ ছবিতে বিদ্যা সিনহা মিম ও বাপ্পীকে জুটি করে চলচ্চিত্রে হাজির করেন তিনি। অবশ্য বাপ্পী-মিম এর আগেও জুটি হয়ে কাজ করেছেন। তবে মামুনের ছবি দিয়েই বেশি প্রশংসা পেয়েছেন তারা।এস এ হক অলিকরোমান্টিক ছবির নির্মাতা হিসেবে নির্মাতা অলিক আগে থেকেই জনপ্রিয়। এ বছর তার নির্মাণে একটি ছবি মুক্তি পায়। নাম ‘এক পৃথিবী প্রেম’। সার্বিক বিবেচনায় ছবিটি বেশ গ্রহণযোগ্যতা পায়। নির্মাতা অলিক তার নামের মর্যাদা রেখেছেন এটি নিঃসন্দেহে বলা যায়! মোস্তাফিজুর রহমান মানিকচলতি বছরে তার একটি ছবিই মুক্তি পেয়েছে। সেটির নাম ‘চুপি চুপি প্রেম’। সাইমন ও প্রিয়ন্তী জুটিকে নিয়ে এই ছবিটি নির্মাণ করেন। ব্যবসায়িক সাফল্য না পেলেও ছবিটি আলোচনায় ছিলো রোমান্টিক গল্প ও গানের জন্য।মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজবিগ বাজেটের ছবি নির্মাণ করে চমকে দিয়েছেন তরুণ নির্মাতা মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ। তিনি চলতি বছরে দর্শকদের উপহার দিয়েছেন শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস জুটির দারুণ এক ছবি ‘সম্রাট’। এর বিশেষ চমক ছিলেন কলকাতার অভিনেতা ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত। ছবিটিতে তিনি ‘রাজা’ নামের একটি চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের মনে দাগ কেটেছেন।রফিক শিকদারতরুণ এই নির্মাতা এখন পর্যন্ত একটি ছবি বানিয়েছেন। সেটিই মুক্তি পেয়েছে ‘ভোলা তো যায় না তারে’। মার্চে এই ছবির শুভ মুক্তি ঘটে। নিরেট প্রেমের এই গল্পের ছবিটি বেশ প্রশংসিত হয়। তাছাড়া নিজের লেখা উপন্যাস অবলম্বনে ছবিটি বানিয়ে তিনি আলোচনায় ছিলেন বছরজুড়ে। এছাড়া আরো অনেক নির্মাতাই ছবি বানিয়ে আলোচনায় ছিলেন। যাদের মধ্যে আশার আলো জালিয়েছেন আশিকুর রহমান (মুসাফির), শামীম আহমেদ রনি (বসগিরি) প্রমুখ। তবে মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীর মতো নির্মাতারা ছিলেন নিষ্প্রভ। বছরজুড়ে ফেসবুকে নানা রকম মন্তব্যে আলোচিত-সমালোচিত হওয়া ছাড়া তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারেননি ঢাকাই ছবির বাজারে।এনই/এলএ/আরআইপি

Advertisement