মুশফিককে হারিয়ে আমাদের বিরাট একটি লস হলো। কারণ, একে তো তার কিপিং এবং অন্য দিকে ব্যাটিং। এ দুটাই আমরা হারাবো। সে তো আমাদের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। দলে সেরা দুই ব্যাটসম্যান যদি নির্বাচন করি, তাহলে সে একজন। তার না থাকাটা আমাদেরকে অনেক পিছিয়ে দেবে।যে কোনো সিরিজে প্রথম ওয়ানডের ওপর কিন্তু সিরিজ নির্ভর করে। আমরা তো প্রথম ম্যাচ হেরে গিয়েছি। আমাদের প্রথম ম্যাচ পরাজয় মানে ওরা সিরিজে ডমিনেট করতে শুরু করেছে। তো আমাদের কামব্যাকের একটাই মন্ত্র হলো, আমাদের পরের ম্যাচে জিততে হবে। তবে জিততে হলে আমাদের কিছু প্লাস পয়েন্ট আছে। এই মাঠেই বিশ্বকাপে আমরা স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৩০০ প্লাস রান তাড়া করে জিতেছি। ওই ম্যাচে রিয়াদ, তামিম, মুশফিক, সাকিব ভালো ব্যাটিং করেছে। সব কিছু মিলিয়ে আমি কিন্তু এখনও নিউজিল্যান্ডকেই এগিয় রাখছি। কারণ, ওদের মাঠে ওরা সব সময়ই শক্তিশালী। শুধু তাই নয়, দল হিসেবেও তারা খুব ভালো খেলেছে। আগের ম্যাচে দুই দলের মধ্যে যদি আপনি তুলনা করেন, তাহলে বাংলাদেশের খেলায় আপনি অনেক ভুল-ত্রুটি খুঁজে পাবেন। কিছু ফিল্ডিং, সঙ্গে কিছু ব্যাটসম্যানের রান করতে না পারা, বোলিংটাও আমাদের আশানুরূপ হয়নি। একই সঙ্গে আমাদের মেইন বোলার মোস্তাফিজ অনেকদিন পর ফিরে আসছে। তার রিদম পেতে এখনও অনেক সময় লাগবে। মোস্তাফিজ দ্বিতীয় ম্যাচে খেলতেছে কি না বিষয়টা আমি নিশ্চিত না। নাও খেলতে পারে, আবার খেলতেও পারে। মুশফিকের জায়গায় সোহান আসছে দলে। ঘরোয়া ক্রিকেটে সে অনেক ভালো খেলেছে। তার নিজের জন্য এটা একটা সুযোগ, নিজেকে প্রমাণ করার। উইকেটরক্ষক হিসেবে সে খুব ভালো। ব্যাটসম্যান হিসেবেও ভালো।সৌম্যর ব্যাপারে বলবো, সে খুব ভাগ্যবান। যেটা আমি আগের কলামেও লিখেছিলাম যে, ম্যানেজমেন্ট ওর উপর অনেক আস্থা রেখেছে। অথচ, সেই আস্থার প্রতিদান সে দিতে পারছে না। সৌম্যকে বাদ দেয়া হলে আমাদের একজন ব্যাটসম্যান কমে যাবে। ব্যাটিং অর্ডারও পরিবর্তন হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে মিরাজকে নেয়া হলে তো তাকে আর উপরের দিকে নামানো যাবে না। বোলার তো আমাদের লাগবেই। তবে আমার মনে হয়, এই ম্যাচে একটা লেগিকে ট্রাই করতে পারে। যদিও নিউজিল্যান্ডের অধিকাংশই বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান। তানভির যদি ভালো লেগব্রেক বল করতে পারে, তাহলে সেখানে বাঁ-হাতি, ডান হাতি কোন সমস্যা নয়। কারণ লেগিদের ক্ষমতা থাকে উইকেট নেয়ার। এ কারণে আমার মনে হয়, তানভিরের খেলার সম্ভাবনা খুবই ভালো এবং সে যদি খেলে তাহলে আমি আশা করছি সে যেন ভালো করে। বোলিংটা যেন ভালো করতে পারে। কারণ, তানভির যদি ভালো বোলিং করতে পারে, তাহলে বাংলাদেশের ফিরে আসার সম্ভাবনা আছে।তবে তারপরও আমি বলবো, আমাদের দলে অনেকগুলো ভালো ক্রিকেটার রয়েছে। তামিম-সাকিব-মাহমুদউল্লাহ-মাশরাফি এবং জুনিয়র যারা আছে, ওরা যদি ভালো খেলে আমাদের ম্যাচ জেতার সম্ভাবনা আছে। দিন শেষে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ম্যাচটা জেতা। তবে এ জন্য তিনটা ডিপার্টমেন্টেই ভালো খেলতে হবে। বোলিং-ব্যাটিং-ফিল্ডিং। এর মধ্যে দুটিতে ভালো করেও যদি একটিতে খারাপ করি, তাহলে কোনো লাভ হবে না, ম্যাচ জেতাটাও সম্ভব হবে না। কারণ, নিউজিল্যান্ড যে ধরনের দল, দুর্বলতা পেলেই চেপে ধরবে।বাংলাদেশের জয়ের চান্স কেমন যদি বলেন, তাহলে বলবো আমি এখনও এগিয়ে রাখছি নিউজিল্যান্ডকে। তারপরও বাংলাদেশ কিছু পারচেন্টেজ নিয়ে এগিয়ে থাকবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যদি তিনটি পার্টেই ভালো খেলতে পারে, তাহলে ইনশাআল্লাহ আমরাই জিতবো। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের বোলিং ভালো হয়নি। তাসকিনের বোলিং নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে, যে ধরনের উইকেট ছিল, ওসব উইকেটে রান কিন্তু অনেক বেশি হয়। আমাদের ব্যাটসম্যানরাও ৩৪১ রান তাড়া করতে নেমে ২৬৪ রান করতে পেরেছে। হেরেছি ৭৭ রানে। আমরা যদি ৪০ রান বেশি না দিয়ে থাকতাম, তাহলে ম্যাচটা কিন্তু খুবেই ক্লোজ হতো। আমাদেরকে একটা জিনিস মাথায় নিতে নামতে হবে, যদি আমরা আগে ফিল্ডিং করি তাহলে আমাদের বোলিং এবং ফিল্ডিংটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ওটার ওপর নির্ভর করছে, পরে আমাদের ব্যাটিংটা কী ধরনের করতে হবে। তারা যদি বড় স্কোর করতে পারে, তাহলে আমাদের ব্যাটসম্যানদের ওপর অনেক বড় চাপ তৈরি হবে। কারণ প্রতিটা বলে রিস্ক নিতে হয়। এক্সট্রা পুশ করতে হয়। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্য খুবই কঠিন হয়ে যাবে, কারণ নিউজিল্যান্ডের ফিল্ডিং খুবই ভালো। এ বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে যে বোলিং এবং ফিল্ডিংটা যেন আমাদের খুব ভালো হয়। আর যদি আগে ব্যাটিং করতে পারি, তাহলে আমাদেরকে ৩০০ প্লাস রান করতেই হবে। এই উইকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষেও কিন্তু স্কটল্যান্ড ৩০০ প্লাস (৩১৮) রান করতে পেরেছে। এই মাঠে এতবড় রান তাড়া করার অভিজ্ঞতা আছে। এই মাঠে রান হবে। আমরা যদি সব বিভাগেই ভালো করতে পারি, তাহলে জেতার সম্ভাবনা আছে। মুশফিক যেহেতু নেই আমরা মানসিকভাবে পিছিয়ে থাকবো। সৌম্য থাকলে তাকে দায়িত্ব নিতে হবে। না থাকলে তার পরিবর্তে যে আসবে, অন্য যারা থাকবে তাদেরও দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করতে হবে। আমরা সাধারণত ৮টা ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলি। এখন ৭টা ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলতে হবে। সোহান ভালো ব্যাটসম্যান। তবে তাকে কোনভাবেই মুশফিকের সঙ্গে তুলনা করা যাবে না। সঙ্গে আমাদের ওপেনিংটাও ভালো করতে হবে। সাকিবের সঙ্গে ইমরুলকেও দায়িত্ব নিতে হবে। ঘরের মাঠে সে ভালো খেলেছে। নিজেকে এবার প্রমাণ করতে হবে বিদেশের মাটিতেও। আইএইচএস/
Advertisement