এ ম্যাচের আগে দু’দলের শক্তি ও সামর্থ্য ও সম্ভাবনা নিয়ে যত কথা হয়েছে, তার বড় অংশ ছিল উইকেট নিয়ে। কেমন পিচে খেলা হবে? তা নিয়েই নানা গুঞ্জন। রাজ্যের কৌতূহল। উইকেট নিয়ে দুই রকম কথা শোনা যাচ্ছে। এক পক্ষের মত, উইকেট ভালোই থাকবে। ব্যাটিং সহায়ক হবে। ওই মতালম্বীদের পক্ষে কথা বলছে পরিসংখ্যান। গত বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডে যত খেলা হয়েছে, তার সবগুলোই হয়েছে ব্যাটিং ফ্রেন্ডলি পিচে। বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচের স্কোর লাইন (বাংলাদেশের করা ২৮৮ রান ৭ বল আগে টপকে যায় নিউজিল্যান্ড। আরেক পক্ষের কথা, সেটা ছিল বিশ্বকাপ। আইসিসি ইভেন্ট। সেখানে উইকেট তৈরি হয় আইসিসির প্রেসক্রিপশনে। যেখানে দর্শক বিনোদন, টিভি সম্প্রচার ও নানা বাণিজ্যিক বিষয়ও মাথায় রাখতে হয়। বোলিং সহায়ক পিচ হলে কর্তৃত্ব থাকবে বোলারদের। ব্যাটসম্যানদের ব্যাট কথা বলবে না তেমন। রান হবে কম। কিন্তু এটা তো আর আইসিসির ইভেন্ট নয়। দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ। এখানে উইকেট তৈরি হবে স্বাগতিকদের খেয়াল খুশি মতো। তারা যেমন পিচকে নিজেদের জন্য নিরাপদ ও কার্যকর ভাববে- তেমন উইকেটে খেলা হবে। যদি তা হয় তাহলে ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলে ওভালের পিচ শতভাগ ব্যাটিং সহায়ক নাও হতে পারে। বাংলাদেশের মাটিতে শেষ দুই সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়া আর দেড় বছর আগে নিজ মাটিতে বিশ্বকাপের গ্রুপ ম্যাচে কোনো রকমে পার পেয়ে যাওয়ার কথা মনে রেখে হয়তো ব্যাটিং-বান্ধব পিচ নাও করতে পারে কিউইরা। বাংলাদেশকে চাপে ফেলতে এবং কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়তে তুলনামূলক ফার্স্ট-বাউন্সি ট্র্যাক করতে পারে নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের গতি দিয়ে কাবু করা যাবে না। তামিম, সৌম্য, মুশফিক, সাকিব, মাহমুদউল্লাহ, সাকিব ও সাব্বির রহমানরা বল-ব্যাটে আসলে বরং বেশি ভালো খেলেন। যেহেতু এদের সবাই ফ্রি-স্ট্রোক খেলতে ভালোবাসেন , তাই ফার্স্ট পিচ হলে তাদের স্ট্রোক প্লে করা সহজ হবে। তার চেয়ে বাড়তি বাউন্স হয় আর ম্যুভমেন্ট থাকলেই বরং টাইগারদের পেছনে পায়ে ঠেলে দেয়া যাবে।ওই রকম পিচে তাদের দুর্বলতাও বেশি। একটি পরিসংখ্যান কিন্তু অমন উইকেটের দুঃশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে। কাল ভোরে যে মাঠে মাশরাফি বাহিনী এবারের সিরিজে প্রথম মাঠে নামবে, সেই ক্রাইস্টচার্চের এই হ্যাগলে ওভালে শেষ ঠিক এক বছর আগে হওয়া (২০১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর) শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছে কিউইরা। সবুজ ঘাসের সিমিং উইকেটে কিউই ফাস্ট বোলারদের দুর্দান্ত গতি ও কাজের সামনে দাঁড়াতে পারেনি লঙ্কানরা। ফাস্ট বোলার ম্যাট হেনরি (৪/৩৩) ও মিচেল ম্যাকক্লেনঘানের (৩/৩২) বোলিং তোপের মুখে মাত্র ১১৭ রানে গুড়িয়ে যায় অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের দল। নিউজিল্যান্ড পায় ১০ উইকেটের সহজ এক জয়। ইতিহাস জানাচ্ছে, সেটাই ছিল ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলে ওভালে হওয়া শেষ ম্যাচ। ঠিক ৩৬৪ দিন পর একই মাঠে কিউইদের সামনে বাংলাদেশ। কী হবে? ক্রিকেটে বিশেষ করে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে নাকি নিশ্চিত বলে কিছু নেই। আগাম মন্তব্যে থাকে রাজ্যের ঝুঁকি। তবে মাশরাফির দল গত দুই বছর যে আত্মবিশ্বাসী ও প্রত্যয়ী ক্রিকেট খেলেছে, তার আলোকে অন্ধের মতো বাজি ধরে বলে দেয়া যায়, ব্যাটিং-বান্ধব কিংবা স্পোর্টিং পিচ হলে চিন্তার কিছুই নেই। কিউই বোলিং যত ধারালোই হোক না কেন, তামিম, ইমরুল, সৌম্য, মুশফিক, সাকিব, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ ও সাব্বিরের গড়া ব্যাটিং লাইন-আপের ওই কন্ডিশনে ভালো খেলার পর্যাপ্ত সামর্থ্য আছে। কাজেই চিন্তা শুধু বাড়তি বাউন্স ও ম্যুভমেন্ট নিয়ে। তা না থাকলে মাশরাফির দল ছেড়ে কথা বলবে না। লড়াই করবে সেয়ানে-সেয়ানে। যতো চিন্তা ‘সবুজ ঘাসের উইকেট’। আজকে পর্যন্ত উইকেটের ওপরে ঘাস ছিল। শেষ পর্যন্ত ওই ঘাস থাকবে কি থাকবে না, তা জানা যাবে আগামীকাল (সোমবার) টসের সময়ই। এনইউ/আরআইপি
Advertisement