ভ্রমণ

বর্ণাঢ্য আয়োজনে জাগো নিউজের আনন্দ ভ্রমণ

কর্মব্যস্ত জীবনে একটু বিশ্রাম তো সবারই দরকার। দরকার বিনোদন কিংবা ভ্রমণের। কেননা সকাল-সন্ধ্যা অফিস বা কাজ করে দিনশেষে ক্লান্তি এসে ভর করে। তাই একটি ছুটির দিন হয়ে ওঠে প্রতি সপ্তাহের আরাধ্য বিষয়। গত ২৩ ডিসেম্বর শুক্রবার ছিলো একটি আরাধ্য দিন। একটি বিশেষ দিন। দিনটি বিশেষ একটি কারণেই। আর তাহলো- দিনটি ছিলো জাগোনিউজ২৪.কমের ফ্যামিলি ডে।জাগো নিউজের ফ্যামিলি ডে বেশি উপভোগ্য হয়েছে স্থান নির্বাচনের কারণে। একদিনে এর চেয়ে ভালো স্থান আর কী হতে পারে? একই দিনে নৌবিহার আবার বনভোজন। ভিন্ন মাত্রা যুক্ত করেছে নৌবিহারের বাহন হিসেব লঞ্চ থাকায়। সদরঘাটের একসময়ের নজরকাড়া বোগদাদীয়া-৯ যখন চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে তখন সত্যিই আনন্দে নেচে ওঠে সবার মন।দেশের প্রথম শ্রেণির অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কম জন্মলগ্ন থেকেই প্রতিবছর ফ্যামিলি  ডে পালন করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবারও বছরের বিদায়লগ্নে সিদ্ধান্ত হয় ফ্যামিলি ডে’র। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী ঢাকার সদরঘাট থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় বোগদাদীয়া-৯। চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল ইউনিয়নের ষাটনল পর্যটন এলাকায় নোঙর করে লঞ্চটি।পূর্বনির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী সকাল সাতটা থেকে সদরঘাটের লালকুঠি ঘাটে উপস্থিত হতে থাকেন জাগো নিউজ পরিবারের সদস্যরা। সবার উপস্থিতি নিশ্চিত করে লঞ্চ ছাড়ার অনুমতি দিলেন জাগো নিউজের প্রধান বার্তা সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার। লঞ্চ ছাড়ার পর সহাকারী বার্তা সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আরমানের তত্ত্বাবধায়নে সবাইকে সকালের নাস্তা সরবরাহ করা হয়। নাস্তা শেষে জাগো নিউজের লোগো সম্বলিত টি-শার্ট প্রদান করা হয়।লঞ্চ তখন সদরঘাটের হৈচৈ পেরিয়ে খানিকটা এগিয়েছে। যাত্রার শুরুতেই সাউন্ড সিস্টেমে বেজে ওঠে দেশাত্মবোধক গান। গানে গানে স্মরণ করা হয় একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের। গানের সুরে সুরে ঢেউয়ের তালে তালে লঞ্চ এগিয়ে চলে বুড়িগঙ্গার বুক চিড়ে।জীবনের প্রথম যারা লঞ্চে ভ্রমণ করছেন; তাদের আনন্দের আর অন্ত নেই। উচ্ছ্বাসে কখনো নাচছেন। আবার কখনো গেয়ে উঠছেন প্রিয় কোনো গান। লঞ্চের ছাদে এবং দোতলায় জমে ওঠে আড্ডা। আড্ডাকে আরো প্রাণবন্ত করে তুলেছেন প্রধান প্রতিবেদক মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল। দোতলায় গানের সঙ্গে নাচতে থাকেন ছোট-বড় সবাই।বুড়িগঙ্গার উৎকট গন্ধও দমাতে পারেনি ভ্রমণপিপাসুদের। সারা বছরের ক্লান্তি ঝেরে সবাই যেন কেমন চঞ্চল হয়ে উঠেছেন। যদিও শুরু থেকে জাগো নিউজের সম্পাদক সুজন মাহমুদের অনুপস্থিতিটা সবাইকে ভারাক্রান্ত করেছিল। আস্তে আস্তে সেই দুর্ভাগ্যকে মেনে নিয়ে নাচে-গানে-কবিতায় মেতে ওঠেন সবাই। সাংস্কৃতিক পর্বে হাবীবাহ নাসরীন, নীলিমা, যুথি এবং তৃষা’র বিশেষ টক শো সবাইকে মুগ্ধ করে। সুজনের কবিতা, ইফতেখার, শামীম ও নেসারের গান, বিপ্লবের মডার্ন ড্যান্স আলাদা মাত্রা যোগ করেছে। আরো অনেকের পরিবেশনা দিনভর চাঙা রেখেছে সবাইকে।হাসি-আনন্দে ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে থাকে লঞ্চ। ঝালমুড়ি এবং পিঠার স্বাদ নিতে নিতে চলতে থাকে ফটোসেশন ও সেলফিযজ্ঞ। ক্যামেরায় তৎপর ছিলেন রবিউল ইসলাম পলাশ, মাহবুব আলম, হোসেন ইমরাত রিমেন, সগির হোসেন এবং মনজুরুল আলম। দেখতে দেখতে দুপুর একটা নাগাদ লঞ্চটি নোঙর করে ষাটনল ঘাটে। সবাই হৈ হৈ করে নেমে পড়েন ডাঙায়। কিছুটা পথ হেঁটেই ষাটনল পর্যটন এলাকা। একদিনে ভ্রমণের জন্য চাঁদপুরের ষাটনল জায়গাটি চমৎকার। একইসঙ্গে পাওয়া গেল দুই রকম আনন্দ। জলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পৌঁছে গেলাম স্থলে। প্রকৃতি ও নদীর সংস্পর্শে মন হয়ে উঠল আনমনা। নদীপথে আসতে আসতে যেন জলের সঙ্গে মিতালি হয়ে গেল। বহুদিন পর পেলাম নৌকা ভ্রমণের মজাও। একই সঙ্গে নৌবিহার এবং বনভোজন।ষাটনল একটি স্থানের নাম। জায়গাটি নদীর বুকে জেগে ওঠা চর বা দ্বীপ। চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার একটি ইউনিয়ন হচ্ছে ষাটনল। মেঘনা নদী বয়ে চলেছে এর পাশ দিয়ে। এখানে বিশ্রামের জন্য রয়েছে একটি ছাউনি। খাবারের জন্য রয়েছে আলাদা বিশাল ঘর। রয়েছে উন্নতমানের একাধিক শৌচাগার। পাশেই রয়েছে বিশাল খেলার মাঠ। মাঠে অনুষ্ঠিত হলো ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। তার আশেপাশে সবুজের সমারোহ। পর্যটন এলাকা ঘেঁষেই বয়ে গেছে মেঘনা নদী। অভ্যাস থাকলে সাঁতারও কাটা যেত। ষাটনলে থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই। একদিনের ভ্রমণের জন্যই স্থানটি উপযুক্ত। খাবারের আয়োজনও নিজেদেরই করতে হয়েছে। আগের দিন সহকারী বার্তা সম্পাদক মাহাবুর আলম সোহাগ, সিনিয়র সহ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন এবং সহ সম্পাদক রোকনুজ্জামান সেলিম খাবারের যাবতীয় বন্দোবস্ত করেই রেখেছিলেন। তাদের সঙ্গে মতলব উত্তর প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুব আলম লাভলু সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে আজীবন কৃতজ্ঞ করে রেখেছেন।দুপুরের খাবার শেষে আবারও লঞ্চের দিকে ছুটে চলা। সবার উপস্থিতি নিশ্চিত করে আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা। লঞ্চ ছাড়ার পর ফুচকা পার্টি ও ফলাহারের পর অনুষ্ঠিত হয় র‌্যাফেল ড্র। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়ার পর উপস্থিত সবার হাতে ব্রেভার মলড্রিংকস তুলে দেয়া হয়। ততক্ষণে লঞ্চ সদরঘাট ছুঁই ছুঁই। সবাই যার যার ব্যাগ গোছানোর ব্যস্ততা সেরে নেমে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হলেন। লঞ্চ থেকে নামার আগে প্রত্যেকের হাতে আবার সন্ধ্যার নাস্তা তুলে দেয়া হয়। একদিনের ভ্রমণে অনেক স্মৃতি অনেক ভালোবাসা বুকে নিয়ে বাসায় ফিরবেন সবাই। পুরো যাত্রাপথেই আনন্দ বাড়াতে সার্বিক বিষয়ে সুদৃষ্টি রেখেছেন ব্যবস্থাপনা সম্পাদক জিয়াউল হক এবং সহকারী সম্পাদক ড. হারুন রশীদ।আগামী বছর এমন সুখময় ভ্রমণের সাক্ষী হওয়ার প্রত্যাশায় চাতকের মতো দৃষ্টি নিয়ে আলো-আঁধারীর শরীর ঘেঁষে সবাই ফিরে গেলেন গন্তব্যে।  এসইউ/জেআইএম

Advertisement