খেলাধুলা

কন্ডিশনকে জয় করাই হবে মূল চ্যালেঞ্জ

নিউজিল্যান্ডে এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের পারফরম্যান্স জিরো। সর্বশেষ গত বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের মাঠে গিয়ে আমরা যে ম্যাচটা খেলেছি, ওই ম্যাচে হেরে গেলেও তাদের মাঠে ওটাই ছিল আমাদের সেরা পারফরম্যান্স। ছোট-খাট দু’একটি ভুল না করলে হয়তো আমরাই জিততে পারতাম । তবে, ওই ম্যাচ থেকে আমাদের ক্রিকেটাররা এটা অন্তত বুঝে নিয়েছে যে, কিভাবে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে খেলা যায়। নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন অবশ্যই বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জিং। বড় বড় দলগুলোর পক্ষেও নিউজিল্যান্ডে গিয়ে খেলতে সমস্যা হয়। সেখানে আমাদের জন্য সমস্যা হবে, এটাই স্বাভাবিক। আমাদের মূল কাজটাই হবে এখন এই চ্যালেঞ্জ জয়। আমার বিশ্বাস, চ্যালেঞ্জ জয়ের মত শক্তি আমাদের ক্রিকেটাররা অর্জন করে ফেলেছে। এই দলটি অনেকদিন ধরে খেলছে। অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। সুতরাং, বাংলাদেশ ভালো খেলবে এটাই আমার বিশ্বাস।ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালের মাঠটা কিন্তু একপাশে ছোট। যে কারণে উইকেটের যে অবস্থান, তাতে সেখানে স্পিনাররা ভালো করার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও নিউজিল্যান্ড মানেই সিমিং কন্ডিশন। পেসারদের স্বর্গরাজ্য। সব সময়ই সেখানে পেসাররা ভালো খেলে। আমাদের হাতেও ভালো পেসার রয়েছে। মাশরাফি সব সময়ই ভালো বল করে। তাসকিন কিংবা শুভাশিসের মধ্য থেকে একজন খেলবে। মোস্তাফিজ সুস্থ হয়ে উঠছে। তারও খেলার সম্ভাবনা রয়েছে। এই তিন পেসারের সঙ্গে লেগ স্পিনার হিসেবে যে রয়েছে, তানভির হায়দার। তাকে খেলানোরও সম্ভাবনা দেখছি। কারণ, নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা লেগ স্পিনারের সামনে বেশ দুর্বল।তবে, সেখানকার কন্ডিশনটাই এখন বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সেই কন্ডিশন জয় করার জন্যই মূলতঃ সিডনিতে বিশেষ ক্যাম্পের করা হয়েছে। ২০১৫ বিশ্বকাপের আগে যেমন একটি ক্যাম্প করা হয়েছিল। কিংবা সম্প্রতি শেষ হওয়া ইংল্যান্ড সিরিজের আগে আফগানিস্তানকে এনে বলা যায় একটি প্রস্তুতিমূলক সিরিজ খেলা হয়েছে। এগুলোর সুফলও কিন্তু আমরা পেয়েছি। আশা করি, এবারের বিশেষ ক্যাম্পটিরও সুফল আমরা তুলে নিতে পারবো।ঘরের মাঠে প্রতিটি দলই শক্তিশালী। নিউজিল্যান্ড আরও শক্তিশালী। যেখানে অস্ট্রেলিয়ার মতো দলও কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। আমাদের আগের সফরগুলো দেখলে এ বিষয়টা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে। আগের সিরিজগুলোতে আমরা হয়তো ভালো কিছু উপহার দিতে পারিনি। এবার আমাদের সেই সম্ভাবনা রয়েছে। তবে যেটা সবচেযে কঠিন হবে সেটা হলো, গত কয়েক বছর আমরা মূলত ভালো খেলেছি ঘরের মাঠে। নিজেদের মাঠেই বড় বড় প্রতিপক্ষকে হারিয়েছি। এই সময়ের মধ্যে বিদেশের মাটিতে এতবড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হইনি। এবারই বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে এই দলটি।তবে, আশার কথা হচ্ছে ঘরের মাঠে খেললেও, যে আত্মবিশ্বাস অর্জন করেছে আমাদের ক্রিকেটাররা, সেটা এই সিরিজে কাজে লাগবে। এই আত্মবিশ্বাসই বাংলাদেশকে অনেকদুর এগিয়ে নিয়ে যাবে। সে জন্য সবার আগে নিজেদের কাজটাও সঠিকভাবে করতে হবে। জিততে হলে ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং তিন ডিপার্টমেন্টেই ভালো খেলতে হবে বাংলাদেশকে। নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দিতে হবে।আফগানিস্তান-ইংল্যান্ড সিরিজ থেকেই ফর্মে রয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। মাঝে বিপিএল গেলো। ব্যাটসম্যানরা রানের মধ্যে রয়েছে। সৌম্যকে নিয়ে চিন্তা ছিল। সেও ধীরে ধীরে রানে ফিরতে শুরু করেছে। তামিম-ইমরুলরা রানে রয়েছে অনেক আগে থেকে। সাব্বির একটু সংগ্রাম করছে। তবে আমার মনে হয়, সে ঠিকই সময়মত জ্বলে উঠবে। মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ, সাকিবরাও ফর্মে রয়েছে। মোট কথা আমাদের ব্যাটিং গভীরতা কিন্তু অনেক বেশি। নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারলে অবশ্যই বড় স্কোর দাঁড় করানো অসম্ভব কিছু নয়। মাহমুদউল্লাহর কথা আলাদা করে বলতে হবে। গত বিশ্বকাপে, নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তার ব্যাট থেকেই এসেছিল অসাধারণ একটি সেঞ্চুরি। অপরদিকে বোলিংয়েও আমরা এখন যথেষ্ঠ শক্তিশালী। ক্রাইস্টচার্চে বাংলাদেশ দল তিন পেসার নিয়ে নামবে নাকি চার পেসার নিয়ে নামবে সেটা হয়তো কন্ডিশন দেখেই টিম ম্যানেজমেন্ট সিদ্ধান্ত নেবে। তবে তিন পেসার তো নিশ্চিত বলাই যায়। যদিও নিউজিল্যান্ডের সিমিং কন্ডিশন। নিজেদের মাঠেই আমরা চার পেসার খেলিয়েছি। সেখানে তো চার পেসার খেলানোর যৌক্তিকতা আরও বেশি। সে ক্ষেত্রে চার পেসার নিয়েও একাদশ সাজানোর সম্ভাবনা রয়েছে। আবার নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা যেহেতু লেগ স্পিনে দুর্বল, সে কারণে তানভির হায়দারের অভিষেকটাও হয়তো হয়ে যেতে পারে।তবে দলটার নাম যেহেতু নিউজিল্যান্ড। নিজেদের মাঠেই খেলবে তারা। হাতে রয়েছে ট্রেন্ট বোল্ট, টিম সাউদি, লকি ফার্গুসন কিংবা ম্যাট হেনরির মত পেসার। তারাও অনেক বড় চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্য। এই চ্যালেঞ্জটা মোকাবিলা করার মতো মানসিক শক্তি বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের রয়েছে। এখন শুধু প্রয়োজন সেই মানসিক শক্তিকে বাস্তবে রূপ দেয়ার।     আইএইচএস/আরআইপি

Advertisement