দেশের প্রথম বাংলা টেলিভিশন ও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন একমাত্র টেলিভিশন বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)। ১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছিলো চ্যানেলটি। তখন সাদা-কালো সম্প্রচার শুরু করে। সে সময় এটি পাকিস্তান টেলিভিশন (পিটিভি) নামে পরিচিত ছিল। এর প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল ম্যানেজার ছিলেন জামিল চৌধুরী। মুক্তিযুদ্ধের পর এর নাম পরিবর্তন করে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) রাখা হয়। সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ১৯৮০ থেকে এটি রঙিন সম্প্রচার শুরু করে। মূলত তখন থেকেই দেশজুড়ে টেলিভিশনটির তুমুল জনপ্রিয়তার শুরু। নানা রকম খন্ড-ধারাবাহিক নাটক, সংগীতানুষ্ঠান, ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান, বাংলায় ডাবিং করে বিদেশি সিরিয়াল প্রচার, বাংলা চলচ্চিত্র প্রচার করে বিটিভি হয়ে উঠে দেশের মানুষের বিনোদনের দারুণ এক মাধ্যম।দেখতে দেখতে ৫১ বছর পেরিয়ে আজ রোববার (২৫ ডিসেম্বর) ৫২তম বছরে পা রাখলো বিটিভি। এই বিশেষ উপলক্ষ্যে রাজধানীর রামপুরায় অবস্থিত বিটিভির সদর দপ্তরে আয়োজন করা হয় এক প্রিতী সম্মেলনের। সেখানে হাজির ছিলেন চ্যানেলটির প্রথমদিনের শিল্পী থেকে শুরু করে নবীন অনেক শিল্পী ও কলাকুশলীরা। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সৈয়দ হাসান ইমাম, সুবর্ণা মুস্তাফা, আজিজুল হাকিম, শহীদুজ্জামান সেলিম, ফেরদৌস আরা, তমালিকা কর্মকার, মিনু রহমান, ড. েইনামুল হক, মুনীরা ইউসুফ মেমী, রোকেয়া প্রাচী, মুস্তাফা জামান আব্বাসী, শিরীন বকুল, আলাউদ্দীন আলী, ফকির আলমগীর, কিরণ চন্দ্র রায়সহ আরো অনেক প্রিয় মুখ। ছিলেন বাংলাদেশ টেলিভিশনের সাবেক মহাপরিচালক গুণী মানুষ মুস্তাফা মনোয়ারসহ আরো অনেক সাবেক কর্মকর্তা ও কর্মীগণ। আজ সকাল ১০টায় সকলকে বিটিভিতে স্বাগমত জানান চ্যানেলটির বর্তমান মহাপরিচালক এস এম হারুন অর রশিদ ও জেনারেল ম্যানেজার মাসুদুল হক। বরেণ্য সব অতিথিদের নিয়ে বেলুন উড়িয়ে ও কেক কেটে নতুন বছরের যাত্রা শুরু করে বিটিভি। আনুষ্ঠানিকতার এই পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এর আগে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে বিটিভির মহাপরিচালককে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান তিনি।আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, ‘বাংলাদেশের শিল্প ও সংস্কৃতির আজকের যে বিরাট পরিসর তার মজবুত ভিত গড়ে দিয়েছিলো বিটিভি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম গড়ে উঠেছে এখানে বিটিভিতে প্রচার হওয়া সুস্থ-সুন্দর বিনোদন পেয়ে। এভাবেই সাফল্যের নিশান উড়িয়ে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলার পথে নেতৃত্ব দিয়ে যাবে বিটিভি- এটাই প্রত্যাশা।’ এসময় মন্ত্রী ধীরে ধীরে বিটিভিতে ডিজিটালের ছোঁয়া আনার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তার বক্তব্যের জের ধরে চ্যানেলটির মহাপরিচালক এস এম হারুন অর রশিদ বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে বিটিভিকে আমূলভাবে বদলে নেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছি। আশা করছি শিগগিরই দর্শকদের প্রত্যাশা অনুযায়ী তথ্য প্রযু্ক্তিতে সমৃদ্ধ বিটিভি রঙিন আর বর্ণিল হয়ে উঠবে।’পাশাপাশি শিল্পী ও কলকুশলীরাও সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য বিটিভিকে পরামর্শ দিয়ে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান। আলোচনা শেষে শুরু হয় সংস্কৃতি অনুষ্ঠান। সংগীত ও নাচের তালে মেতে উঠেন আগত সকল অতিথিবৃন্দ। একপাশে চলে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। কেউ কেউ ঘুরে ফিরে দেখছিলেন আজকেই উদ্বোধন হওয়া টেলিভিশন জাদুঘরে রাখা স্মৃতি জাগানিয়া নানা ছবি, যন্ত্র ও আসবাব।এলএ/আরআইপি
Advertisement