অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ায় লাইসেন্স হারাল চার এমএলএম কোম্পানি। সম্প্রতি রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোম্পানিগুলো হচ্ছে- এমএক্সএন মডার্ন হারবাল ফুড লি., ওয়ার্ল্ড মিশন ২১ লি., স্বাধীন অনলাইন (পাবলিক) লি. ও রিচ বিজনেস সিস্টেম লিমিটেড। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বলেন, কোম্পানি চারটির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট বিধিভঙ্গের অভিযোগের কথা জেনেছি। এমন ঘটে থাকলে সেখানে ছাড় দেয়ার কোনো মানে নেই। এক্ষেত্রে সরকারি কার্যক্রম ও সিদ্ধান্তে স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠা করতে যা করা প্রয়োজন মন্ত্রণালয় থেকে তাই করা হবে। তা না হলে এতে জনস্বার্থ ক্ষুণ্ন হবে।কোম্পানি চারটির বিরুদ্ধে এ ধরনের পদক্ষেপের ব্যাপার জানতে চাইলে যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর নিবন্ধক কার্যালয়ের (আরজেএসসি) নিবন্ধক ও অতিরিক্ত সচিব বিজন কুমার বৈশ্য বলেন, তাদেরকে লাইসেন্স দেয়া হয়েছিল বৈধ ব্যবসা পরিচালনার কাজে। কিন্তু প্রতিনিয়তই বিভিন্ন জায়গা থেকে তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পাওয়া যায়। তাছাড়া এমএলএম কোম্পানির যে আইন ও বিধিবিধান রয়েছে সেগুলোর প্রতিপালনের বিষয়ে গড়িমসি লক্ষ্য করা গেছে, যা সরাসরি আইনের লংঘন। এভাবে চলতে থাকলে স্বচ্ছতার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এসব কোম্পানি দ্বারা মানুষ বড় ধরনের প্রতারিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। তাই বিধিলংঘনের দায়ে ও বৃহৎ জনস্বার্থের কথা বিবেচনায় রেখে এসব কোম্পানির লাইসেন্স আর নবায়ন করা হয়নি। আর সম্ভাবনাও নেই।সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে আরজেএসসি থেকে আবেদন নামঞ্জুর হওয়ার কথা জানিয়ে এবং এর কারণ উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট এমএলএম প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। ওই চিঠিতে বৈধ লাইসেন্স নিয়ে নিয়মমাফিক ব্যবসা পরিচালনা না করা, সময় মতো কোম্পানির বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন জমা না দেয়া, কোম্পানি পণ্যমান ও দাম নিয়ে বিস্তর অভিযোগ এবং ব্যবসার পদ্ধতি বিষয়ে বিভিন্ন অভিযোগের কথা বলা হয়েছে।অন্যদিকে এর বাইরে অনুমোদন না পেয়ে যেসব এমএলএম কোম্পানি আরজেএসসি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত পাশ কাটিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে সেসব কোম্পানি তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির তদন্তে এর সত্যতা পাওয়া গেছে। সংসদীয় স্থায়ী কমিটির তদন্ত এখনও অব্যাহত রয়েছে। ওই চার কোম্পানিসহ অননুমোদিত আরও যেসব কোম্পানি রিট করেছে তাদের কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে আরও যেসব অভিযোগ পাওয়া গেছে- তা হল কোম্পানির ভ্রমণ ইনটেনসিভ ও প্রফিট শেয়ারিংয়ে অস্বচ্ছতা, পরিবেশক স্বত্ব হস্তান্তরে জটিলতা, দ্বৈত পরিবেশক, কমিশন থেকে বিভিন্ন খাতে অর্থ কেটে রাখা ইত্যাদি।এসব অপরাধ ও বিধিভঙ্গের অভিযোগ তুলে আরজেএসসি থেকে তাদের লাইসেন্স নতুন করে নবায়নের সুযোগ দেয়া হয়নি। চলতি মাসের ৪ তারিখ কোম্পানি চারটির লাইসেন্সের বৈধতার মেয়াদ ফুরিয়ে যায়। গত বছর ৫ মার্চ, এদের নামে বৈধতার লাইসেন্স ইস্যু করা হয়েছিল। এখন আরজেএসসি তাদের নবায়নের আবেদন নামঞ্জুর করায় এবং লাইসেন্স বাতিলের চিঠি ইস্যু করায় চারটি কোম্পানিই অবৈধ হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আর এ ঘটনার মধ্য দিয়ে দেশে কোনো বৈধ এমএলএম কোম্পানি আর থাকলো না। সূত্র : যুগান্তর এসএইচএ/এমএস
Advertisement