গত কয়েক মাসে প্রতিবেশী দেশ ভারতে সোয়াইন ফ্লু`র প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ উৎকন্ঠায় আছে। বাংলাদেশেও খুব দ্রুত এই রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা। তাই প্রাণঘাতী সোয়াইন ফ্লু মোকাবিলায় প্রস্তুত বাংলাদেশ। দেশের স্থল, সমুদ্র ও আকাশপথ মিলিয়ে মোট ২৭টি বন্দরে কড়া নজরদারি রাখা হচ্ছে। সতর্কতার সঙ্গে কাজ করছে মেডিকেল টিম। ভারতে সোয়াইন ফ্লুর প্রাদুর্ভাবে এখন পর্যন্ত এক হাজার তিনশ মানুষ মারা গেছে।বিশেষ করে পশ্চিম বাংলায় ১৩ জনের মৃত্যু ঘটায় বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে কঠোর নজরদারি রাখছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। প্রতি জেলার হাসপাতালে আলাদা ইউনিট প্রস্তুত রেখেছে সরকার। গতকাল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ভারত থেকে সব অনুপ্রবেশকারীর স্বাস্থ্যপরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে । গত বছর আফ্রিকায় ইবোলা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটলে যে সাতটি আর্চওয়েজ এবং ৭০টি হ্যান্ড থার্মাল স্ক্যানার কেনা হয় সেগুলো এখন ভারত থেকে আগতদের স্ক্যান করার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। সীমান্ত দিয়ে যারা আসছে তাদের ভ্রমণের উৎস ছাড়াও জ্বর, হাঁচি-কাশি আছে কিনা এসব বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করা হচ্ছে। এ ছাড়া সোয়াইন ফ্লু চিকিৎসায় প্রতিটি জেলা শহরের সরকারি হাসপাতালগুলোতে আলাদা করে একটি ওয়ার্ড চালু রাখা হয়েছে।সেখানে এইচওয়ানএনওয়ান সোয়াইন (ফ্লুর জন্য দায়ী ভাইরাস) আক্রান্ত রোগীদের সেবায় ৬ হাজার প্রশিক্ষিত ডাক্তার এবং নার্স রয়েছে। গত মাসে তিনজন পর্যটকের দেহে এইচওয়ান এনওয়ান ভাইরাস ধরা পড়ে। পরে তাদের চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলা হয়।এদিকে, ভারতের পশ্চিম বাংলায় সম্প্রতি ১৩ জনের মৃত্যু হওয়ায় বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী দিনাজপুর, জয়পুরহাট ও যশোর এলাকার অধিবাসীরা হুমকির মধ্যে পড়েছে। বিশেষ করে ওইসব সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান তথা অবৈধ অনুপ্রবেশ বেশি হওয়ায় আতঙ্কে আছে স্থানীয়রা। স্বাস্থ্যপরীক্ষা ছাড়াই বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন প্রবেশ করছে হাজার হাজার ট্রাকচালক ও ভ্রমণকারী। তা ছাড়া ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে পশ্চিম বাংলায় সোয়াইন ফ্লু আক্রমণ করলেও হিলিবন্দরে মেডিকেল টিম কাজ শুরু করে মার্চের ১ তারিখ থেকে।জানা গেছে, ভারতে এইচওয়ানএনওয়ান আক্রান্ত ২৪ হাজার ৬৬১ জনের মধ্যে প্রায় ২০০ জনই পশ্চিম বাংলার। যারা ইতিমধ্যে মারা গেছে তাদের ৯০০ জনই গুজরাট, রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশের। প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে মেক্সিকোতে শূকরের রক্তে প্রথম এইচওয়ানএনওয়ান ভাইরাস ধরা পড়ে। পরে এটি পাখি এবং মানুষের রক্তে দেখা যায়। এই রোগের উপসর্গ হিসেবে জ্বর, সর্দি-কাশি, ঠাণ্ডা এবং শ্বাসযন্ত্র সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দেয়। মূলত হাঁচি ও কাশির মাধ্যমে এটি দ্রুত অন্যের শরীরে ছড়ায়।সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিনএমজেড/এআরএস/আরআইপি
Advertisement