মতামত

ছিনতাইকারীর দৌরাত্ম্য বন্ধ করুন

জানমালের নিরাপত্তা দেয়া সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব পালনে সামান্যতম গাফিলতির কোনো সুযোগ নেই। দুঃখজনক হচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে-বাহ্যত এমন মনে হলেও বাস্তবে কিন্তু বিষয়টি সে রকম নয়। কেননা খোদ রাজধানীতেই বেড়ে গেছে ছিনতাইকারীর দৌরাত্ম্য। এ ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে যে কোনো মূল্যে। জাগো নিউজের এ সংক্রান্ত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৫ দিনে ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৮৭টি জিডি হয়েছে রাজধানীর ৪৯টি থানায়,যার বেশিরভাগই থানার আশেপাশের রাস্তায় মোবাইল ও ল্যাপটপ ছিনতাইয়ের অভিযোগ। ছিনতাইকারীদের ধরতে পারছে না পুলিশ। থানায় অভিযোগ করেও খোয়া যাওয়া জিনিস ফেরত পাওয়া যায় না।রাজধানীর ২০টি থানা এলাকার কমপক্ষে ২৫ স্থানে সক্রিয় রয়েছে ১৫টি ছিনতাইকারী চক্র। চক্রগুলো সম্প্রতি ছিনতাই কাজে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহারও শুরু করেছে। তিন ধরনের ছিনতাইয়ে জড়িত চক্রটি। টার্গেট করে ব্যাগ ও মোটরসাইকেল ছিনতাই এবং ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তির পিছু নিয়ে নগদ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা বেশি ঘটছে। সম্প্রতি খোদ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধেও উঠেছে ছিনতাইয়ের অভিযোগ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই থানাসংলগ্ন এলাকার নির্জন ও অন্ধকার স্থানগুলো ছিনতাই পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। মোটরসাইকেলযোগে সুযোগমতো রিক্সাযাত্রীদের ব্যাগ টান দেয়া এবং গুলি চালিয়ে বা অস্ত্রের মুখে ছিনতাই স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজধানীতে এত এত বাহিনী। বলতে গেলে নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকে রাজধানী। এর মধ্যেও যদি জানমালের নিরাপত্তা না থাকে সেটি খুবই দুঃখজনক। অভিযোগ রয়েছে, অনেক ছিনতাইকারী একাধিকবার ধরা পড়লেও জামিনে বেরিয়ে আবারও ছিনতাইয়ে জড়িয়ে পড়ছে। অপরাধের শাস্তি না হলে তা কমার কোনো কারণ নেই। এজন্য অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আর খোদ পুলিশের বিরুদ্ধেই যেখানে ছিনতাইয়ে জড়িত থাকার অভিযোগ সেখানে সর্ষেয় ভূত রেখে ভূত তাড়ানো কি আদৌ সম্ভব? জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে প্রতিদিন ঘর থেকে প্রচুর সংখ্যক মানুষ বাইরে বের হন। তারা যেন নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারে সেটি দেখতে হবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে। রাজধানীতে থানার সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের সংখ্যাও। কিন্তু অপরাধ না কমে বরং বাড়ছে। এই বৈপরীত্য চলতে পারে না।এইচআর/পিআর

Advertisement